এষা গুপ্ত।
জর্জ ফ্লয়েডের ঘটনায় যখন উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা বিশ্ব, ঝড় উঠেছিল বর্ণ-বৈষম্যের প্রতিবাদে, তখন সেই ঝড়ের হাওয়া এসে পড়েছিল ভারতেও। অনেকেই সে সময় নেটমাধ্যমে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছিলেন। তবে আর এক দল এই দৃষ্টান্তের সমালোচনা করে বলেছিলেন যে যারা ভিন দেশের এক বাসিন্দার এই করুণ পরিণতিতে চোখের জল ফেলছেন, তাদের অনেককেই খুঁজে পাওয়া যায় না নিজের দেশে বর্ণবিদ্বেষমূলক ঘটনার নিন্দায়। অথচ, আমেরিকার মতো প্রকট না হলেও, ভারতে বর্ণবিদ্বেষমূলক ঘটনা ঘটে আকছার। কখনও রঙ কালো হওয়ায় বিয়েতে প্রত্যাখ্যাত হচ্ছেন কোনও মহিলা, তো কখনও অপমানজনক মন্তব্যের শিকার হতে হচ্ছে কাউকে। বিশেষত ফিল্ম ও মডেলিংয়ের জগতে বহু দিন ধরেই এমন সমস্যার শিকার হয়ে এসেছেন কলাকুশলীরা। সম্প্রতি তেমন এক অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিলেন অভিনেত্রী এষা গুপ্ত।
এষা প্রথম বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন ইমরান হাসমির বিপরীতে, ‘জন্নত ২’ ছবিতে। তার পর থেকে নিজের ছবির জন্য না হলেও, সাজ-পোশাক এবং রূপটানের জন্য মাঝেমাঝেই শিরোনামে উঠে এসেছেন তিনি। কিন্তু এই ইন্ডাস্ট্রিতে জায়গা করে নেওয়া সহজ ছিল না তাঁর জন্য, বিশেষত নিজের গায়ের রঙের জন্য। গায়ের রঙ সামান্য চাপা হওয়ায় প্রথম থেকেই আলাদা করে রাখা হয়েছিল তাঁকে। তাঁর অপরিচিত সহকর্মী অভিনেতারাও তাঁকে উপদেশ দিতেন ফর্সা হওয়ার জন্য। একটি সাক্ষাৎকারে এষা অকপটে জানিয়েছেন যে এমন এক সময় ছিল যখন তাঁর রূপটান শিল্পীরাও সচেতন ভাবে চেষ্টা করতেন তাঁর কালো রঙ ঢাকা দিতে। ‘সেক্সি’ বা লাস্যময়ী হিসেবে সহজেই তাঁকে দেগে দেওয়া হয়েছিল যেহেতু তাঁর গায়ের রং কালো।
তাঁর কথায়, ‘‘এমন কিছু মেকআপ আর্টিস্টও ছিল যারা আমাকে সব সময় ফর্সা করতে চেষ্টা করত, এবং এর ফলে আমার গোটা শরীরকেই আলাদা করে রং করতে হত, কারণ আমার মুখের রঙের সঙ্গে আমার গায়ের রঙ মিলত না।’’ কালো হওয়ার জন্য তিনি আবার একই সঙ্গে যৌন আবেদনময়ী কারণ, তাঁর কথায়, আমাদের দেশে ফর্সা মানেই ‘‘পাশের বাড়ির মেয়ে এবং শরীফ (সৎ),’’ কালো মানেই খারাপ বা লাস্যময়ী।
তবে এ সবের জন্য থেমে থাকেনি তাঁর কাজ, থেমে থাকেননি এষা। সদ্যই তাঁকে দেখা যাবে সৌমিক সেন পরিচালিত একটি থ্রিলার ওয়েব-সিরিজে। এই সিরিজে তাঁর সঙ্গে অভিনয় করছেন মল্লিকা শেরাওয়াত। স্পষ্টতই, দমে যাওয়ার মেয়ে নন এষা। কালো? তা সে যতই কালো হোক...