(বাঁ দিকে) রাহুল মুখোপাধ্যায়। গিল্ডের বিবৃতি (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
অবশেষে তিন মাসের কর্মবিরতি থেকে অব্যাহতি পেলেন পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়। তাঁর উপরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ডিরেক্টরস গিল্ড। খবরের সত্যতায় সিলমোহর দিয়েছেন সংগঠনের সম্পাদক, পরিচালক সুদেষ্ণা রায় । খবর,রাহুলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভুল প্রমাণিত হওয়ায় এবং রাজ চক্রবর্তী-সহ একাধিক পরিচালকের অনুরোধের ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ। শুক্রবার সকালে বিধায়ক-প্রযোজক-পরিচালক ডিরেক্টরস গিল্ডের কাছে রাহুলের উপরে দায়ের করা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানান। সেই বক্তব্য আনন্দবাজার অনলাইনের হাতে এসেছে। এর পরেই টলিউডের অন্দরে প্রশ্ন ওঠে, এই অনুরোধ বিবেচিত হলে কি হারানো পদ আবার ফিরে পেতে পারেন রাহুল? তখন এসভিএফপ্রযোজনা সংস্থার পুজোর ছবির সৃজনশীল প্রযোজক হিসাবে নয়, পরিচালক হিসাবেই কি দেখা যেতে পারে তাঁকে? এ বিষয়ে আনন্দবাজার অনলাইনকে বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সুদেষ্ণা বলেছেন, “সমস্ত অভিযোগ ভুল প্রমাণিত হওয়ায় রাহুলের উপরে আর কোনও নিষেধাজ্ঞা রইল না। তবে পুজোর ছবির পরিচালনা করবেন কি না সেটা প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতার সিদ্ধান্ত।” আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল এসভিএফ প্রযোজনা সংস্থার অন্যতম কর্ণধারের সঙ্গেও। তিনি এখন শহরের বাইরে। ব্যাপারটি আলোচনসাপেক্ষ, জানিয়েছেন তিনি। সন্ধ্যাবেলা জানা যেতে পারে ফলাফল কী হল। তবে এখনও ফেডারেশন থেকে ডিরেক্টরস গিল্ডের এই বিবৃতি সমর্থন করে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
সুদেষ্ণার আরও বক্তব্য, “আমি একা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। তাই গত বৃহস্পতিবারের বৈঠকের পর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা সম্ভব হয়নি। গিল্ডের বাকি সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর রাহুলের কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিচালক যে ভাবে কাজ করছিলেন আবার সে ভাবেই কাজ করতে পারবেন।” তিনি এ-ও জানান, কোনও ‘সাসপেনশন’ বা নিষেধাজ্ঞা নয়, তিন মাসের কর্মবিরতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল রাহুলকে। ডিরেক্টরস গিল্ডের এই বিবৃতির প্রতিলিপিও আনন্দবাজার অনলাইনের হাতে এসেছে।
মঙ্গলবারের পর বৃহস্পতিবার ফের সমস্ত গিল্ডকে নিয়ে বৈঠকে বসে ফেডারেশন। রাহুলের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য। বৈঠকের পর লিখিত বিবৃতিতে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়, এসভিএফের পুজোর ছবিতে পরিচালক হিসেবে নয়, সৃজনশীল প্রযোজক হিসেবে রাহুল থাকতে পারবেন। এই বিষয়ে কারও কোনও আপত্তি নেই। লিখিত বিবৃতিতে বৃহস্পতিবার রাতে এ-ও জানানো হয়েছিল, কোনও সংগঠন বাংলা বিনোদন দুনিয়ার বিপক্ষে নয়। এর আগে প্রযোজনা সংস্থার অন্যতম কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতা আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছিলেন, “সমস্যা না মিটলে পুজোর ছবিই করব না।” বৃহস্পতিবার, সে প্রসঙ্গে জানানো হয়, গিল্ড এবং ফেডারেশন একেবারেই চায় না পুজোর ছবি বন্ধ হোক। তাই প্রযোজনা সংস্থার ঘোষণা অনুযায়ী, সৃজনশীল প্রযোজক হিসাবে রাহুলের উপস্থিতিতে তাঁদের আপত্তি নেই। সে ক্ষেত্রে প্রযোজনা সংস্থার বক্তব্য অনুযায়ী ছবি পরিচালনা করার কথা ছিল সৌমিক হালদারের।
খবর, এই আলোচনার পরেই শুক্রবার রাজের লিখিত বক্তব্য— “গতকাল ডিরেক্টরস গিল্ডের মিটিংয়ে সমস্ত পরিচালকেরা মিলে রাহুলের সাসপেনশন তুলে নিতে হবে এবং রাহুলকে পরিচালকের পদে বহাল রাখতে হবে— এই মর্মে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সে সিদ্ধান্তে আমরা অনড় থাকছি। এই সিদ্ধান্ত আমাদের সমস্ত পরিচালকদের তরফে নেওয়া। সুতরাং, আগামী কাল যদি পুজোর ছবির শুটিং শুরু হয়, রাহুল সেখানে পরিচালক হিসাবেই উপস্থিত থাকবেন। অন্য কোনও পদে নয়।” প্রসঙ্গত, শোনা যাচ্ছে ২৭ জুলাই থেকে এসভিএফের পুজোর ছবির শুটিংশুরু হতে পারে। এবং এর আগে রাজ আননন্দবাজার অনলাইকে বলেছিলেন, “যে কোনও পরিস্থিতিতে রাহুলের পাশে আছি। ওঁকে সব রকম সহযোগিতা করব।”
রাহুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ডিরেক্টরস গিল্ড এবং ফেডারেশনের নিয়ম না মেনে বাংলাদেশের ওয়েব প্ল্যাটফর্মের জন্য সিরিজ় ‘লহু’র শুটিং করতে গিয়েছিলেন। নিয়মভঙ্গের খবর সংগঠনের কানে পৌঁছলে পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদকরা হয়। প্রথমে তিনি পুরোটা অস্বীকার করেন। পরে নিজের ভুল স্বীকার করেন। এর পরেই তাঁকে ‘নিষিদ্ধ’ করার সিদ্ধান্ত নেয় ফেডারেশন।