(বাঁ দিকে) অনির্বাণ ভট্টাচার্য। অর্ণ মুখোপাধ্যায় (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
বাংলা থিয়েটারের খ্যাতনামী পরিচালক অর্ণ মুখোপাধ্যায়। এ বার বাংলা সিনেমার পরিচালক হিসেবে অভিষেক হচ্ছে তাঁর। ছবির নাম ‘অথৈ’। শেক্সপিয়রের ‘ওথেলো’ নাটক থেকে অনুপ্রাণিত এই ছবিটি। এর আগে বলিউডে ওথেলো থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে যে হিন্দি ছবি হয়েছে, সেটি বিশাল ভরদ্বাজ পরিচালিত ‘ওমকারা’। এ বার বাংলায় সেই ছবিতেই মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন অর্ণ, অনির্বাণ ভট্টাচার্য ও সোহিনী সরকার। ওথেলোর চরিত্রে অর্ণ, দেসদিমোনার চরিত্রে সোহিনী ও ইয়াগোর চরিত্রে অনির্বাণ। ইতিপূর্বে সোহিনী-অনির্বাণ জুটিকে দেখছেন দর্শক। এই ছবিতেও সোহিনী-অর্ণ স্বামী-স্ত্রী। যদিও পরিচালক অর্ণের কথায়, ‘‘এই ছবিতে সবাই সবার জুটি। সোহিনীর সঙ্গে অনির্বাণও জুটি হিসেবে আছে। তেমনই আমার সঙ্গেও অনির্বাণের জুটি আছে। আসলে সম্পর্কগুলোর মধ্যে জটিলতা রয়েছে। জুটি হিসেবে যেটা বুঝি, তেমন ভাবে চিত্রনাট্য লেখা হয়নি। আমরা তিন জনেই তিন জনের জুটি।’’ শোনা যাচ্ছে, ইদ এবং পয়লা বৈশাখকে মাথায় রেখেই ছবিমুক্তির পরিকল্পনা করেছিলেন নির্মাতারা। যদিও পিছিয়ে যায় মুক্তির তারিখ। ভোটপর্ব মিটিয়ে ১৪ জুন মুক্তি পাবে অথৈ। শনিবার মুক্তি পেয়েছে ছবির প্রথম পোস্টার। কতটা প্রস্তুত তিনি, আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন পরিচালক।
ছবির শুটিং শেষ হয়েছে জানুয়ারি মাসে। প্রাথমিক ভাবে কথা ছিল, পয়লা বৈশাখে মুক্তি পেতে পারে এই ছবি। কিন্তু ছবি নিয়ে কোনও রকম তাড়াহুড়ো করতে নারাজ পরিচালক। প্রথম বার সিনেমায় নির্দেশনা দিচ্ছেন, তাই বাড়তি সাবধানি অর্ণ। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে এখন। আর আমার প্রথম ছবি, তাই যতটা সময় প্রয়োজন ছিল, সেটা আমি পেয়েছি। তাই আমার মনে হয়নি, দেরি হয়ে যাচ্ছে। বরং এটাতে আমরা অনেক বেশি ‘ট্রায়াল অ্যান্ড এরর’-এর মধ্যে দিয়ে যেতে পারছি। তবে যে কারণেই ছবি পিছোক না কেন, এতে আমরা, যাঁরা ছবির সৃজনশীল দিকটা সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা নিঃশ্বাস ফেলার সময় পেলাম।’’
এই ছবির ত্রয়ী পরস্পরের সঙ্গে পরিচিত অনেক আগে থেকেই। থিয়েটারে অর্ণের নির্দেশনায় কাজ করছেন সোহিনী-অনির্বাণ দু’জনেই। সেই কারণেই তিন জনের বোঝাপড়া ভাল। তবে এই ছবিকে নিজের একার ছবি বলতে চান না অর্ণ। কারণ, এই ছবির সৃজনশীল পরিচালক হলেন অনির্বাণ। তাই এই ছবি তাঁদের দু’জনের পাশপাশি তাঁদের গোটা টিমের বলেই মত অর্ণের।
প্রথম বার পরিচালকের আসনে এবং কেন্দ্রীয় চরিত্রেও অর্ণ নিজেই। কাজটা খুব সহজ ছিল না, মেনে নেন তিনি। অর্ণের কথায়, ‘‘কাজটা খুবই কঠিন। থিয়েটারে করেছি। কারণ, ওখানে গোড়ার দিন থেকে আমি নির্দেশনার সঙ্গে যুক্ত। ওখানে আমার নির্দেশনায় অন্য কেউ অভিনয় করেছেন। কিন্তু সিনেমায় সেটা হয়নি। তাই আগাম প্রস্তুত হয়ে সেটে গিয়েছিলাম। গোটা ছবিটাই খাতায় লিখে নিয়ে গিয়েছিলাম। এই ছবিটায় অদ্ভুত টিম ওয়ার্ক রয়েছে। তাই এটা ‘আমার ছবি’, এখন বলতে ভাল লাগে না। অদ্ভুত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ছবির কাজটা করেছি, যেখানে বড় ভূমিকা আছে অনির্বাণের।’’
সমালোচকদের দাবি, বাংলা ছবিতে খরা চলছে। নতুন বছরে সে ভাবে কোনও ছবি দাগ কাটতে পারেনি। মঞ্চ থেকে উঠে সিনেমার পর্দায় বিভিন্ন পরিচালক বিভিন্ন ভাবে ‘ওথেলো’-কে ফুটিয়ে তুলেছেন। এ বার বাংলা ছবিতে ‘ওথেলো’ কতটা সফল হয়, সেটাই দেখার।