বিবাহ বিচ্ছেদের পথে হাঁটলেন ধনুষ এবং রজনীকান্তের বড় মেয়ে ঐশ্বর্যা। ১৮ বছরের দাম্পত্যে দাঁড়ি টেনে টুইটার এবং ইনস্টাগ্রামে সে কথা ঘোষণা করলেন দুই দক্ষিণী তারকা।
দু’জনের লেখায় ফুটে উঠল, ‘১৮ বছরের এক সঙ্গে থাকা। বন্ধু, দম্পতি এবং অভিভাবক হিসেবে। একে অপরের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে। এই যাত্রা কেবলই একে অপরের সঙ্গ দেওয়ার, বোঝার, বেড়ে ওঠার। একে অপরের জন্য নিজেদের মধ্যে ছোট ছোট বদল ঘটানো এবং তারই সঙ্গে মিলেমিশে যাওয়ার দিন ছিল। আজ এই মুহূর্তে আমরা দু’জনে এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে আমাদের পথ আলাদা হয়ে গিয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দম্পতি হিসেবে আলাদা পথে হাঁটব। স্বতন্ত্র ভাবে নিজেদের চেনার জন্য সময় নেব।’
এই বিচ্ছেদের কারণ স্পষ্ট না হলেও বেশ কয়েক বছর আগের একটি ‘গুজব’-এর কথা মনে পড়ে যেতে পারে অনেকেরই। কমল হাসনের মেয়ে শ্রুতি হাসনের সঙ্গে ধনুষের ‘বিবাহ-বহির্ভূত’ সম্পর্কের জন্য নাকি ধনুষ-ঐশ্বর্যার বিয়ে ভাঙতে বসেছিল। তবে কি এ বার মাটি চাপা থাকা আগুন ফের জ্বলে উঠেছে? শ্রুতির জন্যই কি আলাদা হল ধনুষ এবং ঐশ্বর্যার ঘর?
যদি ধনুষ এবং ঐশ্বর্যার বিয়ের সময় থেকে দেখা যায়, তা হলে চার হাত এক হওয়ার আগে থেকেই তাঁদের নিয়ে বিস্তর গুজব রটেছিল। তাঁদের সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ ছিল অনুরাগীদের। কিন্তু দু’জনে বহু দিন পর্যন্ত নিজেদের সম্পর্ককে অন্দরমহলের বাইরে আনেননি।
ধনুষের বোন ছিলেন ঐশ্বর্যার খুব ভাল বন্ধু। রজনীকান্তের বড় মেয়ের প্রসঙ্গ তুললেই তাই ধনুষ বলতেন, তাঁর বোনের বন্ধু এবং তাঁরও ভাল বন্ধু ঐশ্বর্যা। কিন্তু সময়ে যায়। দুই তারকার ঘনিষ্ঠতা প্রকাশ পায়। এমনকি দুই পরিবারও আত্মীয়তায় বাঁধতে চান।
২০০৪ সালের ১৮ নভেম্বর রজনীকান্তের বাড়িতেই ধনুষ এবং ঐশ্বর্যার বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। রাজনীতিক থেকে শুরু করে দক্ষিণী চলচ্চিত্র দুনিয়ার তাবড় তাবড় শিল্পীরা উপস্থিত হন সেই অনুষ্ঠানে।
২০০৬ সালে বড় ছেলে যাত্রা রাজার জন্ম হয়। ২০১০ সালে ছোট ছেলে লিঙ্গা রাজার জন্ম দেন ধনুষ-ঐশ্বর্যা। চার জনের সুখের সংসারের প্রচুর ছবি দুই তারকার ইনস্টাগ্রামে দেখা যায়।
২০১২ সালে গায়িকা ঐশ্বর্যা তাঁর প্রথম ছবি পরিচালনায় হাত দেন। ছবির নাম ‘৩’। নিজের স্বামীর সঙ্গে ছোটবেলার বন্ধু শ্রুতিকেও কাস্ট করেন ঐশ্বর্যা। সেই ছবিরই গান ‘কোলাভারি ডি’ গেয়ে গায়ক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন ধনুষ।
শোনা যায়, সেই ছবির শ্যুটিংয়ের সময়েই শ্রুতি এবং ধনুষ বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ান। এই সম্পর্ক নিয়ে জোর বিতর্ক এবং কানাঘুষো চলে দক্ষিণী দুনিয়া জুড়ে। সূত্রের খবর ছিল, শ্রুতির জন্য নাকি ধনুষের বিয়ে ভাঙতে বসেছে।
একটি সাক্ষাৎকারে সেই প্রসঙ্গে শ্রুতি বলেন, ‘আমি আমার শরীরে কোনও বিশেষ যন্ত্র লাগিয়ে দিতে চাই না, যেখান থেকে মানুষ সত্যিটা জানতে পারবে বলে আশা করছে। কাউকে কৈফিয়ৎ দিতে চাই না আমি।’ শ্রুতি জানান, ধনুষ তাঁর ভাল বন্ধু।
শ্রুতি আরও জানান, ‘৩’ ছবিতে অভিনয় করার জন্য তাঁকে সাহস জুগিয়েছেন ধনুষ। যখন সবাই তাঁর প্রতি অনাস্থা দেখিয়েছে, কেবল ধনুষ তার প্রতি বিশ্বাস রেখেছেন। আর কয়েক জন মানুষ তাঁদের নিয়ে ‘গুজব’ রটাচ্ছেন বলে সেই সম্পর্ক তিনি নষ্ট করতে রাজি নন।
সমস্ত কানাঘুষো বন্ধ হয় ঐশ্বর্যার মন্তব্যের পরে। তিনি জানান, তাঁর স্বামী এবং শ্রুতিকে নিয়ে যে সমস্ত কথাবার্তা রটানো হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন।
তার পরেই শান্তনু হাজারিকার সঙ্গে শ্রুতির সম্পর্ক অনুরাগীদের চোখের সামনে তুলে ধরার পরে ধনুষ আর শ্রুতির সম্পর্ক নিয়ে সমস্ত কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যায়।
এখন প্রশ্ন, ৯ বছর পরে কি সেই ‘গুজব’ ফের চর্চায় উঠে এসেছে? ধনুষ এবং ঐশ্বর্যার বিয়ে ভাঙল তৃতীয় কোনও ব্যক্তির জন্য নাকি কেবল নিজেদের বোঝাপড়ার অভাবের জন্যই?