(বাঁ দিকে) গণেশমূর্তি, দীপক অধিকারী (ডান দিকে)। ছবি: ফেসবুক।
আরজি কর-কাণ্ডকে কেন্দ্রে রেখে একের পর এক অঘটন ঘটে চলেছে কলকাতায়। সে সব দেখতে দেখতে বুঝি ব্যথিত দেব। সম্ভবত সেই অনুভূতি থেকেই গণেশ চতুর্থীতে সিদ্ধিদাতার কাছে শহরবাসীর জন্য ‘সদ্বুদ্ধি’ প্রার্থনা করলেন তিনি। দেব এন্টারটেনমেন্ট ভেঞ্চার প্রযোজনা সংস্থার অফিসে এ দিন গণেশের মূর্তি এনে পুজোর আয়োজন করেন সাংসদ-প্রযোজক-অভিনেতা। সেই ছবি ভাগ করে নিয়ে ‘সকলের সদ্বুদ্ধি’র প্রার্থনা তাঁর। এর আগেও আরজি কর-কাণ্ড প্রসঙ্গে আর্টিস্ট ফোরামের ডাকা গণ সমাবেশে তিনি নারীর বদলে পুরুষকে ‘গুড টাচ’, ‘ব্যাড টাচ’ শেখানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন।
এ বছরের গণেশ চতুর্থী উদ্যাপনে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির ছায়া স্পষ্ট। যেমন, কিছু দিন আগে এক অন্তঃসত্ত্বা হস্তিনীকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার মতো ঘটনার সাক্ষী রাজ্যবাসী। উৎসবের আবহে বিভিন্ন খ্যাতনামীদের পোস্টে সেই ঘটনা এ দিন ফিরে এসেছে। অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, পরিচালক-অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায়, অভিনেতা সাহেব চট্টোপাধ্যায়, অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়-সহ অনেকেই এ দিন অন্তঃসত্ত্বা, রক্তাক্ত গণেশের মূর্তির ছবি ভাগ করে নেন। এ ছাড়া, কাঞ্চন দিন কয়েক আগে জুনিয়র চিকিৎসকদের সরকারি বেতন, বোনাস এবং খ্যাতনামীদের সরকারি পুরস্কার নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। অরিজিৎ সিংহকে নিয়ে সমাজমাধ্যমে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন কুণাল। টলিউড তারকাদের একাধিক বার কটাক্ষ করেছেন নেটাগরিকেরাও। অতি সম্প্রতি শ্যামবাজার চত্বরে রাত দখলের অভিযানে যোগ দিতে গিয়ে আক্রান্ত ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। দেব নিন্দা করেছেন একের পর এক ঘটতে থাকা এই সমস্ত ঘটনার।
অরিজিতের মতোই কুণাল কটাক্ষ করতে ছাড়েননি দেবকেও। তিনি ঘাটাল হাসপাতালে ডায়ালিসিস ইউনিট উদ্ধোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বদলে দেবের নাম আসা নিয়েও বক্রোক্তি উগরে দেন। সমাজমাধ্যমে অভিনেতার ‘সুপারস্টার’ তকমা নিয়ে খোঁচা দিয়ে লেখেন, “উদ্বোধক হিসেবে সিএম-এর নাম পাল্টে এমপি। সুপারস্টার একেই বলে।”
কুণালের সেই বক্তব্যেরও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেব। তাঁর সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করলে তিনি জানান, সমাজমাধ্যমেই তিনি যা বলার বলবেন। দেব এর পরে কুণালের উদ্দেশে লেখেন, “আমি দিদিকে অনুরোধ করেছিলাম ঘাটাল হাসপাতালে ডায়ালিসিস এবং সিটি স্ক্যান মেশিনের জন্য। সেটা দিদি মার্চ মাসে ভার্চুয়ালি ঘোষণা করেন। এক সপ্তাহ আগে মেশিনগুলো আসে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে আমি এই মেশিনগুলো উদ্বোধন করি। যাতে সাধারণ মানুষ ঘাটাল হাসপাতালের এই ডায়ালিসিস পরিষেবার ব্যাপারে জানতে পারে। আমার মনে হয় এর ফলে কোনও মুখ্যমন্ত্রী, সাংসদ, সুপারস্টার বা মুখপাত্র নয়, সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন। ধন্যবাদ তোমাকে, তোমার মাধ্যমে এই পরিষেবার কথা আরও অনেকের কাছে পৌঁছে গেল। শেষে একটাই কথা বলব, আমরা যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, তাতে তথ্য যাচাই না করে সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্য না করাই ভাল।”
দেবের এই প্রতিবাদে খুশি তাঁর অনুরাগীরা। তাঁদের দাবি, সকলের চেয়ে ব্যতিক্রমী তাঁদের প্রিয় সাংসদ-অভিনেতা।