রশ্মিকা মন্দনা। ছবি: সংগৃহীত।
গত নভেম্বর মাসে সমাজমাধ্যমের পাতায় ভাইরাল হয়েছিল অভিনেত্রী রশ্মিকা মন্দনার ‘ডিপফেক’ ভিডিয়ো। ‘গুডবাই’ খ্যাত অভিনেত্রীর ওই ‘আপত্তিকর’ ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমের পাতায় ছড়িয়ে পড়ার পর কড়া আইনি পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছিলেন তাঁর অনুরাগী থেকে বিনোদন জগতে তাঁর সহকর্মীরাও। সেই তালিকায় ছিলেন অমিতাভ বচ্চন থেকে শুরু করে বিজয় দেবেরাকোন্ডা, নাগা চৈতন্যের মতো তারকা। গত ১০ নভেম্বর ওই ভিডিয়োর নেপথ্যে থাকা অপরাধীদের পাকড়াও করতে উদ্যোগ নেয় দিল্লি পুলিশ। দিল্লির মহিলা কমিশনের নোটিস পাঠানোর পর দায়ের করা হয় এফআইআর। তার কয়েক দিনের মধ্যেই ভিডিয়োর সঙ্গে যোগ থাকার সন্দেহে বিহারের এক কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এ বার দিল্লিতে পুলিশের জালে চার সন্দেহভাজন। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, ওই চার জনই নাকি প্রথম সমাজমাধ্যমের পাতায় অভিনেত্রীর ওই আপত্তিকর ভিডিয়ো আপলোড করেন।
খবর, ফেসবুক, হোয়্যাট্সঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রাম যে সংস্থার অধীনে, সেই সংস্থা তথা মেটার থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী নিজেদের তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল দিল্লি পুলিশ। সেই তথ্য থেকেই সূত্র মেলে ওই চার জন সন্দেহভাজনের। ভুয়ো পরিচয়ের মাধ্যমে সমাজমাধ্যমের পাতায় নায়িকার ওই আপত্তিকর ভিডিয়ো আপলোড করেন তাঁরা। তবে জানা যাচ্ছে, ওই চার সন্দেহভাজন নাকি আদপে ওই ভিডিয়োর স্রষ্টা নন। তাঁরা নাকি স্রেফ সমাজমাধ্যমে আপলোড করেছিলেন ওই ভিডিয়ো। কয়েক দফায় জেরার পর তাঁদের ছেড়ে দিয়েছেন তদন্তকারীরা। যদিও ওই চার সন্দেহভাজনকে আগামী দিনে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করার পরিকল্পনা আছে তাঁদের। ভিডিয়ো তৈরির নেপথ্যের অপরাধী বা অপরাধীদের খোঁজে এখন তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। গত নভেম্বরে বিহার থেকে এক ১৯ বছর বয়সি তরুণকে পাকড়াও করে পুলিশ। তদন্তকারীরা দাবি করেন, ওই তরুণই নাকি রশ্মিকার ডিপফেক ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমের পাতায় প্রথম শেয়ার করেন। সেই বিষয়ে বিশদে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয় ওই তরুণকে।
গত ১০ নভেম্বর ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৬৫, ৪৬৯ ধারায় এবং তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত আইনের ৬৬সি এবং ৬৬ই ধারায় দিল্লি পুলিশের তরফে দায়ের করা হয়েছিল এফআইআর। সমাজমাধ্যমের পাতায় রশ্মিকার ডিপফেক ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর রশ্মিকা লেখেন, ‘‘আমার মুখ বসানো যে ডিপফেক ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমের পাতায়, তা নিয়ে কথা বলতে গিয়েও আমার খারাপ লাগছে। এই ঘটনা আমার কাছে যতটা যন্ত্রণার, ততটাই ভয়েরও। কোনও প্রযুক্তির যে এমন অপব্যবহার হতে পারে, তা ভেবেই দুশ্চিন্তা হচ্ছে। বিশেষ করে তাঁদের জন্য, যাঁরা সব সময় ক্যামেরার সামনে থাকেন। আজ আমার পাশে আমার পরিবার, বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষীরা আছেন। কিন্তু স্কুল-কলেজে পড়ুয়া হিসাবে থাকাকালীন এমন ঘটনা ঘটলে আমি পরিস্থিতি সামলাতে পারতাম না। আমাদের সকলের উচিত একজোট হয়ে এই বিষয় নিয়ে কথা বলা।’’