জীবনসায়াহ্নে শৈশবের দেশে
লেখাটা বছর ২০ আগেই শুরু করতে পারতেন, আফসোস হয় দীপ্তি নভালের। অবশ্য তখনও অভিজ্ঞতার ঝুলিটা এমন টইটম্বুর হয়ে ওঠেনি। জীবনসায়াহ্নে এসে আত্মজীবনীর পাতায় আরও কয়েকটা অধ্যায় যোগ করা গিয়েছে।
ছোটবেলায় তাঁর ডাকনাম ছিল ডলি। প্রাণোচ্ছ্বল, স্বাধীনচেতা মেয়ে প্রজাপতির মতো ফুরফুরে ডানা মেলে জীবনের রূপ-রস-গন্ধ উপভোগ করেছেন। আত্মজীবনী ‘আ কান্ট্রি কল্ড চাইল্ডহুড’ লিখতে বসে সেই ডলির গল্পই বলেছেন লেখক-অভিনেত্রী। আবারও ছুঁয়ে দেখতে চেয়েছেন ফেলে আসা শৈশব। ‘কিসি সে না কেহনা’র নায়িকা জানালেন, বইটি উৎসর্গ করেছেন বাবা-মাকে।
এক সাক্ষাৎকারে দীপ্তিকে প্রশ্ন করা হয়, সুযোগ পেলে কী কী ফিরিয়ে নিতেন জীবন থেকে? খুব একচোট হেসে নিয়ে লেখক বলেন, ‘‘বাড়ি ছেড়ে পালানোটা ভুল হয়েছিল। প্ল্যাটফর্ম থেকে আমায় কান ধরে ফিরিয়ে নিয়ে আসার পরে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, আর পালাব না। তবে কাশ্মীর দেখতে এখনও পালাই। সে বার প্রথম কাশ্মীর যাব বলেই ঘর ছেড়েছিলাম।’’
দীপ্তি আরও বলেন— লোকের কাছে তাঁর যে একটা মিষ্টি, পাশের বাড়ির মেয়ের মতো ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে, তা তিনি একেবারেই নন। কোনও দিনই তেমন ছিলেন না। বরং ঠিক তার উল্টো। ডানপিটে মেয়ে বলা যায়। তাঁর আত্মজীবনীকে সেলুলয়েডে বদলে ফেলা আদৌ সম্ভব কি না, জানেন না দীপ্তি। তবে ইচ্ছে আছে, শৈশবের দেশটাকে একেবারে জ্যান্ত করে রেখে যাওয়ার।
অভিনেত্রীর ঝুলিতে ‘চশমে বদ্দুর’ (১৯৮১), ‘রং-বিরঙ্গী’ (১৯৮৩), ‘মির্চ মসালা’ (১৯৮৭), লীলা (২০০২), ‘মেমরিজ ইন মার্চ’ (২০১০), লিসন...অময়া (২০১৩)-র মতো অজস্র বহু প্রশংসিত ছবি। ২০২১ সালে ওটিটি সিরিজ ‘ক্রিমিনাল জাস্টিস: বিহাইন্ড ক্লোজড ডোর’-এ তাঁকে শেষ বার দেখা গিয়েছে। তবে সাফল্য এগুলো নয়। দীপ্তির কাছে জীবন অন্য রকম। একাধিক গল্পের সমাহার। সেই গল্পগুলো প্রজন্মের পর প্রজন্ম বেয়ে ছড়িয়ে যেতে থাকুক। তার মধ্যেই বেঁচে থাকতে চান তিনি।