পেশায় ব্যবসায়ী রাহুলের সঙ্গে আগে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন বৈশালী।
অভিনেত্রী বৈশালী ঠক্করের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগের তির প্রায় পুরোপুরি ঘুরে গেল প্রতিবেশী রাহুল নাভলানির দিকে। হবু স্বামী অভিনন্দন সিংহ নন, সব কিছুর মূলেই সেই রাহুল! সুইসাইড নোট পড়ে এমনই মনে হচ্ছে তদন্তকারীদের। অভিনেত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে রাহুল এবং তাঁর স্ত্রী দিশার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হল সোমবার।
পুলিশ সূত্রে খবর, সুইসাইড নোটে বৈশালী লিখে গিয়েছেন, “রাহুল আমায় শারীরিক এবং মানসিক ভাবে শেষ করেছে। শেষে ও বলেছিল, আমায় কিছুতেই বিয়ে করতে দেবে না। আর ঠিক তা-ই করল।”
রাহুলের স্ত্রী দিশাকে নিয়েও লিখেছেন বৈশালী। তাঁর কথায়, “রাহুলের স্ত্রী দিশা সব জানে। কিন্তু সবার সামনে আমার নামে বাজে কথা বলে ও। পরিবারকে বাঁচাতে চায়, আর কিছুই না। রাহুল সেটারই সুবিধে নিয়েছে। ও জানত, আমি কিছুই করতে পারব না, তাই আমার জীবনটা তছনছ করে দিল। আমি কিছু করতে পারলাম না, কিন্তু আইন আর ভগবান হয়তো ওদের শাস্তি দেবে।”
জানা গিয়েছে, পেশায় ব্যবসায়ী রাহুলের সঙ্গে আগে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন বৈশালী। অভিনেত্রীর পরিবারও সে কথা জানত। কিন্তু যখনই অন্য পুরুষের সঙ্গে বৈশালীর বিয়ে ঠিক হয়, ব্যাগরা দিতে শুরু করেন রাহুল। সমস্যার সূত্রপাত সেই থেকে। একের পর এক বিয়ে ভাঙার পিছনে রাহুলকেই দায়ী করে গিয়েছেন অভিনেত্রী, তাঁর সুইসাইড নোটে। যদিও বৈশালীর মৃত্যুর পর থেকেই পলাতক ওই প্রতিবেশী। তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
এ দিকে সুইসাইড নোট ঘাঁটতে গিয়ে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে এসিপি মতিউর রহমান বলেছেন, ‘‘বৈশালীকে হেনস্থা করতেন প্রতিবেশী রাহুল। তার জন্য এই চরম পদক্ষেপ করেন বৈশালী।’’ এই প্রসঙ্গে পুলিশের ওই আধিকারিক আরও বলেছেন, ‘‘অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ের কথা ছিল বৈশালীর। তা নিয়ে রাহুল তাঁকে বিরক্ত করতেন।’’ শুধু তা-ই নয়, জানা যাচ্ছে, বৈশালীর সম্পর্কে সমানে গুজব রটিয়ে বেড়াতেন রাহুল। পরিবারের দাবি, বিয়ে ঠিক হতেই তাঁদের মেয়ের ‘আপত্তিকর’ ছবি, ভিডিয়ো পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল হবু পাত্র তথা চিকিৎসক অভিনন্দনকে।
রাহুল প্রসঙ্গে এসিপি আরও বলেছেন, ‘‘বর্তমানে নিজের বাড়িতে নেই রাহুল। উনি পালিয়েছেন। ওঁকে খোঁজার চেষ্টা হচ্ছে। ওঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন রয়েছে।’’
রবিবার গুজরাতের ইনদওরে নিজের বাড়ি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বৈশালীর দেহ। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান। ঘর থেকে পাওয়া গিয়েছে সুইসাইড নোট। বৈশালীর সুইসাইড নোট থেকেই রহস্যের কিনারা করার চেষ্টা চলছে।