পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
রবীন্দ্রসঙ্গীত ও লোকগানের বাইরে পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায় কি অন্য গান গাইতে পারেন? এই প্রশ্নের জবাব দিতেই শিল্পীর নতুন পদক্ষেপ, ‘অন্য গান’। “যাঁদের এই ধারণা রয়েছে, তাঁদের প্রমাণ দিতেই আমার এই অ্যালবাম। আমি অন্য গান গাইতে পারি, কি পারি না, সেটা দেখা যাবে এ বার”, আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন শিল্পী।
কিন্তু কাদের প্রমাণ দিতে চাইছেন পৌষালী? শ্রোতা, না কি সঙ্গীত পরিচালকদের? প্রশ্ন শেষ হতে না দিয়েই তাঁর সাবধানি উত্তর, “না না, সঙ্গীত পরিচালকদের প্রমাণ দেওয়ার মতো সাহস নেই আমার। শ্রোতাদের কাছে, বন্ধুদের কাছে এবং কিছুটা নিজের কাছেও প্রমাণ দিতে চাই।” রাগ, প্রেম, উচ্ছ্বাস, বিষণ্ণতার ছোঁয়া থাকবে অ্যালবামের চারটি গানে। শিল্পী নিজেই উদ্যোগী হয়ে কাজ শুরু করেন।
হঠাৎ নিজের ঘরানার বাইরে গান। বাণিজ্যিক গুরুত্ব বাড়িয়ে তুলতেই কি এই ভাবনা? শিল্পীর উত্তর, “আমরা রোজ ডাল-ভাত খাচ্ছি। এক দিন একটু বিরিয়ানির স্বাদ পেতে ভালই লাগে। আমার কাছে ‘নেসেসিটি’ হচ্ছে রবীন্দ্রসঙ্গীত ও লোকগান। আর অন্য গান আমার কাছে ‘লাক্সারি’। দুটো মিলিয়েই তো সংসার।” তিনি আরও এক বার স্মরণ করিয়ে দিলেন, নিজের ঘরানার গান নিয়েই আজীবন থেকে যাবেন, এ বিষয়ে তিনি বদ্ধপরিকর। শিল্পীর কাছে সুন্দর সুর ও কথা গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রসঙ্গে গায়িকার বক্তব্য, “অশালীন কথা ও ভুলভাল সুরে একদম স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। ‘কাঁচা বাদাম’ জাতীয় গান গাইতে পারব না কোনও দিন।”
রবীন্দ্রসঙ্গীত ও লোকগানের মধ্যে গানের পরিসরকে সীমাবদ্ধ করে রাখলে অন্য শিল্পীদের তুলনায় পিছিয়ে পড়ার ভয়েই কি এত বছরের সিদ্ধান্তে বদল? শিল্পীর মতে, “আমার তো মনে হয় না আমি কোনও ভাবে পিছিয়ে পড়েছি! প্রতিনিয়ত এগিয়ে গিয়েছি। আগামী দিনেও এগিয়ে যাব। কোনও কাজ করার আগে, ‘ওরা এ রকম করছে, আমি কি পিছিয়ে যাচ্ছি’ এই নিরাপত্তাহীনতা যদি এক বার গ্রাস করে তা হলে ওখানেই সব শেষ!” মাটির গান নিয়ে দিব্যি রয়েছেন তিনি। এই পুরনো সৃষ্টিকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে বহন করার দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন নিজের কাঁধে। অন্য শিল্পীদের ভিড়ে হারিয়ে যাওয়ার ভয় পান না পৌষালী। বললেন, “প্যাভিলিয়নে বসে অন্য সেলেবদের মতো হাত নাড়তে পারব না আমি।”