(বাঁ দিকে) নিয়া শর্মা, (ডান দিকে) দেবচন্দ্রিমা সিংহরায়। ছবি-সংগৃহীত।
হিন্দি ধারাবাহিকে এখন পরিচিত মুখ অভিনেত্রী দেবচন্দ্রিমা সিংহ রায়। টলিপাড়ায় বেশ কয়েকটি কাজ করার পরে মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন। কালার্স চ্যানেলের ‘সুহাগন চুড়েল’ ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন তিনি। একটানা শুটিংয়ের চাপের মাঝেই আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে মুম্বই থেকে ফোনে কথা বললেন দেবচন্দ্রিমা।
‘সুহাগন চুড়েল’ ধারাবাহিকে খলনায়িকার চরিত্রে অভিনয় করছেন নিয়া শর্মা। মুম্বইয়ের টিনসেল টাউনে প্রায়ই খবরে উঠে আসেন তিনি। ২০১০ থেকে হিন্দি ধারাবাহিকে কাজ করছেন। তাঁর সঙ্গে সমাজমাধ্যমে প্রায়ই ছবি শেয়ার করেন দেবচন্দ্রিমা। পর্দায় দু’জনের মধ্যে আদায়-কাঁচকলায় হলেও, অফস্ক্রিন নাকি নিয়ার সঙ্গে খুব ভাল সম্পর্ক বাংলার অভিনেত্রীর। নিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বও হয়ে গিয়েছে তাঁর। দেবচন্দ্রিমা বলেন, “নিয়া খুব মিষ্টি মানুষ। সরাসরি কথা বলতে ভালবাসেন। আবার ও খুব পেশাদারও। ওঁর আচরণ খুব বন্ধুত্বপূর্ণ। আমায় বহু বিষয়ে সাহায্য করেছেন। কখনও মনেও হয় না যে, আমি নিয়া শর্মার মতো নামী কারও সঙ্গে কাজ করছি। পর্দার বাইরে আমার সঙ্গে খুব ভাল বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছে ওঁর।”
যে হেতু সুপার ন্যাচরাল ধারাবাহিক, তাই শুটিং ছাড়াও রয়েছে বেশ কিছু ভিএফএক্সের কাজ। দেবচন্দ্রিমা বলেন, “কাজ খুব ভাল চলছে। তবে শুটিংয়ের চাপ সাংঘাতিক। কিন্তু ভিএফএক্সের কাজ রয়েছে, তাই শুটিংয়ে বেশ সময় লাগে। অন্যান্য ধারাবাহিকের থেকে আমাদের কাজের চাপ বেশিই থাকে।”
বাংলার ছোট পর্দায় ‘সাঁঝের বাতি’র মতো ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন দেবচন্দ্রিমা। মুম্বইয়ের কাজের ধরন এখানকার থেকে খুব একটা আলাদা নয় বলে জানান অভিনেত্রী। তিনি বলেন, “কাজে তেমন কোনও পার্থক্য নেই। শুটিংয়ের পদ্ধতি প্রায় একই। হয়তো বাড়তি তিন থেকে চারটি ক্যামেরা থাকে, যাতে আমাদের কাজটা আলাদা হয়।”
কাজের এত ব্যস্ততা বলে মুম্বই শহরটাকে এখনও ভাল ভাবে ঘুরে দেখতে পারেননি দেবচন্দ্রিমা। গলায় আক্ষেপ নিয়ে অভিনেত্রী বলেন, “মুম্বইতে যে এসেছি বা আমার জীবনে ভৌগোলিক বদল হয়েছে, সেটা বোঝারই সুযোগ পাইনি এখনও। শুটিং করছি আর বাড়ি ফিরছি। শহরটাকে দেখা হয়নি ভাল করে, এখানকার খাবারও সে রকম কিছু চেখে দেখতে পারিনি। শুনেছি বড়া পাও, মাসকা পাও দারুণ খেতে। কিন্তু সেগুলি বেশি খেতে পারি না। ক্যামেরার সামনে তো দাঁড়াতে হয়। ভয় করে যদি ওজন বেড়ে যায়!” তবে ডায়েটের ভাবনা সরিয়ে রেখে মুম্বইয়ের বেশ কিছু মিষ্টি খেয়ে দেখেছেন তিনি।
মুম্বইয়ের বৃষ্টির মরসুম শুরু হয়েছে। এত কাছ থেকে প্রথম বার মুম্বই শহরের বৃষ্টি উপভোগ করছেন দেবচন্দ্রিমা। তিনি বলেন, “মুম্বইয়ের বৃষ্টি মানেই সহজে থামার নয়, সেটাই এখন উপভোগ করছি।”
কাজ ছাড়া আর কোনও দিকে মনই দিতে পারছেন না বলে জানান দেবচন্দ্রিমা। ঘুরতে-ফিরতে প্রায়ই কলকাতার কথা মনে পড়ছে অভিনেত্রীর। কলকাতার প্রসঙ্গ উঠতেই দেবচন্দ্রিমা বলেন, “কলকাতার সব কিছু মনে পড়ে। আমার একটা বাড়ি আছে ওখানে। বাড়ির প্রতি টান এখনও অনুভব করি। হয়তো এখানেও থাকতে থাকতে অভ্যস্ত হয়ে যাব। কিন্তু সারা দিনের কাজের পরে যখন কলকাতায় আমার ঘরে ঢুকতাম, সেই অনুভূতিটা খুব দামি ছিল।”
নতুন শহরে এত কাজের চাপ, তাই নতুন বন্ধুত্ব হওয়ারও অবকাশ নেই দেবচন্দ্রিমার। লক্ষ্য, শুধু মুম্বইয়ে কী ভাবে নিজের শক্ত ভিত তৈরি করা যায়। কলকাতার বন্ধুদের কথা মনে পড়ে প্রায়ই, বলে জানান অভিনেত্রী। তাঁর কথায়, “হয়তো রোজ কথা হয় না ওদের সঙ্গে। কিন্তু বন্ধুত্ব এক রকমই আছে।”