‘লভ ম্যারেজ’ ছবির একটি দৃশ্যে অঙ্কুশ এবং ঐন্দ্রিলা। ছবি: সংগৃহীত।
করোনা পরবর্তী সময়ে বাংলা ছবির সাফল্য এবং ব্যর্থতা নিয়ে চর্চা চলছেই। ভাল ছবি ব্যবসা যেমন করেছে তেমনই প্রেক্ষাগৃহে পার করেছে একের পর এক জুবিলি। ১ বৈশাখে টলিপাড়ায় একাধিক ছবি মুক্তি পেয়েছে। চর্চায় এগিয়ে ছিল অনির্বাণ চক্রবর্তী অভিনীত ‘দ্য একেন: রুদ্ধশ্বাস রাজস্থান’ এবং প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় অভিনীত ‘শেষ পাতা’। এরই সঙ্গে ছিল প্রেমেন্দুবিকাশ চাকী পরিচালিত ‘লভ ম্যারেজ’ ছবিটি। মঙ্গলবার ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে ৭৫ দিন সম্পূর্ণ করল।
এই ছবির ভবিষ্যৎ কী তা নিয়ে এক সময় অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। প্রেমেন্দুবিকাশের কেরিয়ারেও এই ছবিটিই প্রথম এহেন মাইলফলক স্পর্শ করল। পরিচালক বললেন, ‘‘আমি খুবই খুশি। ছবির বিষয়বস্তু ভাল হলে যে দর্শক প্রেক্ষাগৃহে আসেন সেটাই আরও এক বার প্রমাণিত হল। তাই জোর করে ‘বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান’ বলে নিজেদের ছোট হওয়া অর্থহীন।’’
বড় বাজেট না থাকলেও বিষয়বস্তুর জোরে বাংলা ছবি যে একাধিক বার দর্শক আকর্ষণ করেছে তার একাধিক দৃষ্টান্ত রয়েছে। প্রেমেন্দুবিকাশের ছবিটি কমেডি ঘরানার। সেখানে রঞ্জিত মল্লিক এবং অপরাজিতা আঢ্যের জুটি কি অনুঘটকের কাজ করেছে? সে কথা স্বীকার করার পাশাপাশি পরিচালক অবশ্য অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা জুটির কথাও উল্লেখ করলেন। বললেন, ‘‘যে কোনও ছবিতেই আসল নায়ক তো গল্প। চরিত্রকে তুলে ধরে তার সংলাপ এবং গল্পটি। তাই প্রত্যেকের সম্মিলিত প্রয়াসেই কিন্তু ছবিটা সফল হয়েছে।’’
ইদানীং বাংলা ছবি ‘সিরিয়াস’ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেই প্রসঙ্গেই প্রেমেন্দুবিকাশ বললেন, ‘‘দর্শকের উপর জটিল চিন্তাভাবনা চাপিয়ে দেওয়াটা এখন তো বাংলা ছবির অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তনুবাবু (তরুণ মজুমদার), তপন সিন্হা বা অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় কিন্তু অনেক কঠিন কথা সহজ ভাবে তাঁদের ছবিতে বলেছেন।’’ কঠিন বিষয়বস্তুকে জটিল আঙ্গিকে দর্শকের সামনে পেশ করলে যে গ্রাম বাংলার ‘মাস’ দর্শকের একটা বড় অংশকে বাদ রাখার প্রবণতা ইদানীং ইন্ডাস্ট্রিতে তৈরি হয়েছে হচ্ছে, সে কথাও স্বীকার করলেন পরিচালক। প্রেমেন্দুর কথায়, ‘‘আমি কিন্তু কোনও নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে মাথায় রেখে ছবিটা তৈরি করিনি। শহরেরর পাশাপাশি যাতে প্রত্যন্ত বাংলার দর্শকও ছবিটা উপভোগ করতে পারে, প্রাথমিক পর্যায়ে সেটাই আমার মাথায় ছিল।’’
‘লভ ম্যারেজ’ মুক্তির পর কিন্তু অনেকেই ছবিটিকে ‘ফ্লপ’ ঘোষণা করেছিলেন। এই প্রসঙ্গে প্রেমেন্দুবিকাশের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘তাঁরা কি ছবিটা আদৌ দেখেছেন? বরং যাঁরা ছবিটা দেখেছেন তাঁদের বক্তব্য আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’’ ছবি না দেখে শুধু ট্রেলার দেখেই সেই ছবির ভাগ্য নির্ধারণের এক রকমের প্রয়াস অনেকেই করে থাকেন। পরিচালক বললেন, ‘‘অনেকেই কিন্তু এ রকম ভাবনা পোষণ করলেও নেহাত বন্ধুত্বের খাতিরে আমার ছবি দেখতে ঢুকেছেন। বেরিয়ে এসে ছবির প্রশংসা করেছেন।’’ যাঁরা ছবি না দেখে তাঁর ছবিকে বক্স অফিসে ব্যর্থ বলতে চাইছেন, তাঁদের নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাতে রাজি নন প্রেমেন্দু।