Sayantika Banerjee

জনপ্রতিনিধি হিসাবে প্রথম পুজো উপভোগ করার জন্য মুখিয়ে রয়েছি

দুর্গাপুজো উপলক্ষে শুরু হল আনন্দবাজার অনলাইনের বিশেষ বিভাগ ‘তারকার পুজো’। উদ্‌যাপনের স্মৃতি এবং পরিকল্পনা জানাচ্ছেন আপনাদের পরিচিত মুখেরা। এ বার পুজো নিয়ে লিখলেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২৯
Bengali actress and TMC MLA Sayantika Banerjee talks about her Durga Puja plans

সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সমাজমাধ্যম।

পুজো আসছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর এখনও পর্যন্ত চারপাশে সে রকম উন্মাদনা চোখে পড়েনি। কারণটা নতুন করে উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। তবে এই বছরের পুজো আমার কাছে একাধিক কারণে তাৎপর্যপূর্ণ।

Advertisement

আমার মনে হচ্ছে, এটা আমার জীবনের পুজোর তৃতীয় পর্যায়। ছাত্রজীবনে বন্ধুদের সঙ্গে পরিকল্পনা করে রাত জেগে ঠাকুর দেখা, রেস্তঁরায় খাওয়াদাওয়া করা— এটা ছিল একটা জীবন। তার পর যখন শিল্পী হিসাবে পরিচিতি পেলাম, তখন এই ভাবে ঘোরা বন্ধ হয়ে গেল। পরিবর্তে বন্ধুদের বাড়িতে আড্ডা দেওয়া বেড়ে গেল। গভীর রাতে তখন সকলে মিলে ঠাকুর দেখতে যেতাম। তখন পুজোর সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ব্যস্ততাও বাড়ল। সেখানে পুজো উদ্বোধন থেকে শুরু করে মাচা— সবই রয়েছে। এমনিতে পুজোর সময়ে কাজ করতে বরাবর ভালই লাগে। জন্মদিনে কখনও আমি শুটিংয়ের জন্য কলকাতার বাইরে থেকেছি। কিন্তু পুজোর সময়ে আমি সাধারণত কলকাতাতেই থাকি। পুজোর শহরের প্রতি আমার একটা আলাদা ভাল লাগা কাজ করে। পুজোর সময়ে ষষ্ঠী-সপ্তমী পর্যন্ত আমি কাজ করি। তার পরেও যদি কাজ আসে, আমি না বলি না।

এ বারের পুজোয় আমি তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছি। বিধায়ক হিসাবে এটা আমার প্রথম পুজো। ইতিমধ্যেই বরাহনগরের একাধিক পুজোর উদ্বোধনের অনুরোধ এসেছে। তাই ওই আবার প্রথম পর্যায়ে ফিরে যাব। একটা টিম নিয়ে একটা পুজো থেকে আর একটা পুজোয় যাব। সেখানে আমাদের কাউন্সিলরেরা থাকবেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই মহিলা। আমাদের চেয়ারম্যানও একজন মহিলা। জনপ্রতিনিধি হিসাবে একটার পর একটা পুজোয় যাব, সেটা নিয়ে আমি বেশ উত্তেজিত। সকলের সঙ্গে একটু স্বাধীন ভাবে ঘুরতেও পারব। আবার সুযোগ পেলে কোথাও দাঁড়িয়ে ফুচকাও খেয়ে নেব।

আমি কোনও দিনই পুজোর আলাদা কোনও পরিকল্পনা করি না। তবে বাড়ির বড়দের দেওয়ার জন্য পোশাক নিজের হাতেই কেনার চেষ্টা করি। কিন্তু নিজের জন্য আলাদা করে কোনও দিনই পুজোর কেনাকাটা করি না। কারণ, যে পেশায় রয়েছি, সারা বছরই কিছু না কিছু কেনা হয়। কেউ হয়তো পুজোর আগে একটা শাড়ি উপহার দিলেন। রেখে দিলাম পুজোয় পরব বলে। তার বেশি কিছু নয়।

এই বছর আমার শহরের মনখারাপ। কেউ পুজোয় অংশ নেবেন, কেউ হয়তো নেবেন না। কিন্তু তা বলে তো মায়ের আসা থেমে থাকবে না। তবে এটা ঠিক, গত এক-দু’মাসে যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে এই শহর গিয়েছে, তা দেখে জানি মানুষের অনেক জমে থাকা কথা প্রকাশ্যে এসেছে। এটার প্রয়োজন ছিল। আরজি কর-কাণ্ডে দোষীদের শাস্তি আমিও চাই। পুজোয় অংশগ্রহণ করার অর্থ এটা নয় যে, আমি ন্যায়বিচার চাই না! দুর্গাপুজোর পর কালীপুজো বা তারও পরে বড়দিন— কিন্তু আমার নিজের অবস্থান বদলাবে না।

পুজো নিয়ে নানা কথা চারদিকে শুনেছি। ইদানীং তারকাদেরও খুব খারাপ ভাবে কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে। কিন্তু, পুজো উদ্বোধন, বিজ্ঞাপন, শুটিং— এগুলো তো আমাদের কাজ। রিল বানিয়ে তো আমি একটা পারিশ্রমিক পাই। এগুলো তো আমাদের উপার্জনের মাধ্যম! এটা নিয়ে কারও কোনও সমস্যা হলে কিছু করার নেই। ন্যায়বিচার না পাওয়া গেলে নিশ্চয়ই আমরা আবার পথে নামব। কিন্তু, আমি আজকে কাজ না করে বাড়িতে বসে থাকলে কি সেই পদ্ধতি আরও দ্রুত হওয়া সম্ভব? পুরো বিষয়টাই তো এখন সিবিআই দেখছে। ফলে পুজোর অংশ হিসাবেও দাবি একটাই, দোষীদের যেন ফাঁসি হয়।

আগেই লিখেছি এই বছর পুজোয় বরাহনগরেই বেশি সময় কাটানোর চেষ্টা করব। কিন্তু তার পাশাপাশি শিল্পী হিসাবে কোথাও যদি যাওয়ার প্রয়োজন হয়, তা হলে দু’দিক ব্যালান্স করে চলব। আগে তো বাঁকুড়াতেও আমি নিয়মিত যেতাম। ওখানেও পুজো উদ্বোধন করেছি। কাজ সেরে আবার কলকাতায় ফিরে আসতাম। এ বার প্রয়োজনে কাছাকাছি কোথাও যাব, যাতে সহজেই কাজ সেরে আবার বরাহনগরে ফিরে আসতে পারি। আশা করছি, কঠিন সময়ের মধ্যেও এ বারের পুজো ভাল কাটবে। আমার তরফে আনন্দবাজার অনলাইনের পাঠকদের শারদীয়ার শুভেচ্ছা। আপনাদের পুজো খুব ভাল কাটুক।

আরও পড়ুন
Advertisement