জোজো মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন। ছবি: ফেসবুক।
এ বছরের জন্মদিন কী করে যেন স্পেশ্যাল হয়ে গেল। আগের দিন রাত থেকে উদ্যাপন শুরু গানে গানে। আমার গানের অনুষ্ঠান ছিল রবিবার। সেখানকার শ্রোতারা এতই ভাল যে আমার জন্মদিন মনে রেখেছেন! শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। উপহার ফুলের তোড়া। কেবল উইকিপিডিয়া আমার জন্মদিন মনে রাখতে পারেনি! ২৩ ডিসেম্বরকে ১ জানুয়ারি বানিয়ে দিয়েছে! কী নিদারুণ রসিকতা।
ছোট বেলায় মা আমার জন্মদিন খুব ধুমধাম করে করত। অদ্ভুত ভয় ছিল। বলত, “যদি তোর বিয়েতে থাকতে না পারি! আগেই বাবা জাঁকজমক সেরে নিই।” আমার বিয়ের সময় যদিও মা ছিল। কিন্তু সত্যিই ধুমধাম করতে পারেনি। আমি তো পালিয়ে বিয়ে করেছিলাম। কথাগুলো মনে পড়লেই বুঝি, মায়েরা সব কেমন করে আগে বুঝতে পারে। যাই হোক, এ বছরের জন্মদিনে আমি আর ছেলে। ওর পাঁচ, আমার ৪৯। ৫০ হলে আরও খুশি হতাম। দু’জনের জন্মদিন মিলিয়ে ৫৫ বছর উদ্যাপন করতে পারতাম।
এ বছর কোনও ধুমধাম নেই। বাবার বাড়ি বাংলাদেশের। শ্বশুরবাড়ি পশ্চিমবঙ্গের। আমি তাই ‘বাটি’, মেছো। দুপুরের পাতে পাবদা, চিংড়ি। কয়েকটি কেক পেয়েছি। বিকেলে এক সঙ্গে কাটব। বন্ধুরা বলছে, পার্টি করতে হবে। দেখা যাক। আমার জন্মদিন বছরের শেষে, লোকে যখন ল্যাদ খায়। আমিও রাত জেগে অনুষ্ঠান করে ক্লান্ত।
আমার কোনও কাছের লোক আমার কাছে থাকেন না। মা-বাবা আর নেই। মেয়ে বেঙ্গালুরুতে। দক্ষিণী খাবার খেতে ভালবাসি। অর্ডার করে দিয়েছে। আর গোলাপের তোড়া। বর থাকে উত্তরবঙ্গে। শাশুড়ি আর এক জায়গায়। থাকার মধ্যে গায়ের সঙ্গে লেপ্টে থাকে ছেলে। ও সকাল থেকে গলা জড়িয়ে বার কয়েক চুমু খেয়েছে। খুব আনন্দ ওর। ভাবছে, মা না জানি কত কিছু করবে।
একটা করে বছর এগোয়। আমি বড় হয়ে যাই। বুড়ো তা বলে হইনি। মনটা সবুজ রাখার চেষ্টা করি। সাজতে ভালবাসি। সাজলে মন ভাল হয়ে যায়। এ ভাবেই অর্ধেক জীবন কাটিয়ে ফেললাম। বাকি অর্ধেকটাও এ ভাবেই কেটে যাবে, কী বলেন?