কণীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর কোনও বন্ধু নেই। তিনি কাউকে বন্ধু বানাতেও চান না। কণীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ইন্ডাস্ট্রির সবাই কাছের। কিন্তু কাউকে আমার ‘সহচরী’ বানাতে চাই না। কারণ, কাজের দুনিয়ায় সহকর্মী হয়, বন্ধু হয় না কেউ। বন্ধু শব্দটা অনেক ভারী। মা-বাবার পরে সেই দায়িত্বভার বহনের ক্ষমতা আর কারওর থাকে না।’’ সেই কণীনিকাই ‘সহচরী’ হয়ে আসছেন তাঁর কলেজ বন্ধু বরফির জীবনে!
কী ভাবে? ২০১৭-র পরে ছোট পর্দায় আবার ফিরছেন ধারাবাহিক ‘অন্দরমহল’-এর ‘পরমেশ্বরী’ কণীনিকা। স্টার জলসার নতুন ধারাবাহিক ‘আয় তবে সহচরী’-তে তিনিই ‘সহচরী’। এই ধারাবাহিক তার স্বপ্ন পূরণের গল্প বলবে। বন্ধুহীন জীবনে পা রাখবে নতুন বন্ধু বরফি। পরিচালনা, প্রযোজনা, কাহিনি এবং চিত্রনাট্যে সাহানা দত্ত। কণীনিকার সহ অভিনেতা, ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী, ছন্দা চট্টোপাধ্যায়, অরুণিমা সহ এক ঝাঁক নতুন-পুরনো অভিনেতা। চ্যানেলের সামাজিক পাতায় প্রচারিত ঝলক বলছে, তুলনায় বয়স্ক চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেত্রীকে। এত তাড়াতাড়ি এই ধরনের চরিত্রে! কেন? আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে কণীনিকার জবাব, ‘‘ছোট থেকে বড় হয়েছি সাহানাদিকে দেখে। উনি আমার বড় ভরসা। সাহানাদিই আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘বয়সটাকে তুড়ি মেরে ঘুড়ির মতো উড়িয়ে দাও।’ সেই ভাবনা আঁকড়েই আমি অনায়াসে ধারাবাহিকের প্রচার শ্যুট সেরে ফেলেছি।’’ এও বললেন, নেটমাধ্যমের কল্যাণে সবাই তাঁর বয়স জানে। সুতরাং নতুন করে জানানোর কিচ্ছু নেই।
‘অন্দরমহল’ ধারাবাহিকে কণীনিকা আটপৌরে গৃহিণী ‘পরমেশ্বরী’। ‘সহচরী’ কি তাঁর নব্য ছায়া? কণীনিকা অকপট, ‘‘কেউ কারওর ছায়া নয়। প্রত্যেক চরিত্র তাঁর মতো। আমি তাদের জীবন্ত করার চেষ্টা করি।’’ প্রচার ঝলক বলছে, সংসারের সব দায়িত্ব নিখুঁত ভাবে পালন করা সহচরীর স্বপ্নের হদিশ কেউ রাখে না। স্বামী, স্ত্রী, দেওর, সন্তান, শাশুড়ি--- যে যার মতো করে ব্যাখ্যা করে সহচরীকে। এমন ‘বন্ধুহীন’ নারীর স্বপ্ন, পড়াশোনা করে স্বর্ণপদক জয় করা। আচমকাই সেই স্বপ্নপূরণ। সহচরী পা রাখে কলেজে। সেখানে প্রথম স্বাদ পায় বন্ধুত্বের। বরফি তার দিকে বাড়িয়ে দেয় হাত। এ বার সহচরী ডানা মেলবে?
উত্তর লুকিয়ে ছোট পর্দার নতুন ধারাবাহিকে। তবে কণীনিকা নিজে বিশ্বাস করেন, বন্ধুত্বের কোনও বয়স হয় না। তাঁর নিজেরই প্রচুর অসমবয়সী বন্ধু আছেন, যাঁরা নিজের গোপন কথা অনায়াসে ভাগ করে নেন অভিনেত্রীর সঙ্গে। সাহানা ‘সহচরী’-র শখ পূরণ করতে উদ্যোগী। কণীনিকার শখ কী পূরণ হয়েছে? ‘‘আমার একেক বয়সে একেক শখ ছিল। ক্যারাটে শিখতে শুরু করেও ব্ল্যাক বেল্ট হইনি। এখন যাবতীয় স্বপ্ন মেয়ে কিয়াকে নিয়ে। তবে ছোটবেলার শখ, অভিনয় করব। নাচ শিখব। বাবার জন্য সেই শখ পূরণ হয়েছে।’’
নতুন ধারাবাহিক কী বার্তা দেবে? এখন গুনগুন, মিঠাই, ঊর্মিদের যুগ। সহচরী পারবে তাদের সঙ্গে টক্কর দিতে? চিরাচরিত শাশুড়ি-বৌমার গল্প শোনাবে না ‘আয় তবে সহচরী’, দাবি কণীনিকার। পাশাপাশি এও জানালেন, ‘‘মাকে সন্তানেরা কখনও হারাতে পারে? সহচরীও তাইই। ঘরে-বাইরে সব জায়গাতেই সে অপরাজিতা।’’