অনির্বাণ ভট্টাচার্য
আগেকার দিনে অভিনয় করার কথা শুনলেই হাঁ হাঁ করে উঠতেন বড়রা। বলতেন, ‘‘সিনেমায় নামলেই বারোটা বাজবে!’’ সে কথা যে এ ভাবে অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাবে, অনির্বাণ ভট্টাচার্য নিজেও বোধহয় ভাবতেও পারেননি!
নিজের মুখে এ কথা স্বীকার করে রীতিমতো আক্ষেপ করেছেন 'ব্যোমকেশ'। কিন্তু তাতে যে আর লাভ নেই! কারণ, এই অভিনয়ের জন্যেই তো এখন তিনি সকলের নয়নের মণি। এটাই তাঁর উপার্জন!
আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতি শনিবারের লাইভ আড্ডায় চলতি সপ্তাহের আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন অনির্বাণ। প্রশ্ন এসেছিল, ভাল অভিনেতা হতে গেলে পড়াশোনা করা আবশ্যিক? নাকি সমসাময়িক সমস্ত বিষয়ে যাঁরা সজাগ, তাঁরাই ভাল অভিনেতা?
কী উত্তর দিলেন ‘মন্দার’-এর পরিচালক? অনির্বাণের মতে, অভিনেতাদের পড়াশোনা করা অবশ্যই জরুরি। তবে একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘তার মানে এই নয়, প্রচুর পড়াশোনা না করলে ভাল অভিনেতা হওয়া যায় না। এটা মস্ত ভুল ধারণা। আবার অভিনেতা হতে গেলে পড়াশোনা করেই বা কী হবে, এই কথাটাও ভুল।’’ সাধারণত সকলেই একটি দিক বেছে নিতে অভ্যস্ত। হয় পড়াশোনা, নয় অভিনয়। যে কোনও একটি দিক বেছে নেওয়ার বদলে দুটোই যদি সমান্তরাল ভাবে অভ্যাসে থাকে, তাতে আখেরে লাভই হয়, বক্তব্য অভিনেতার। অর্থাৎ, পড়াশোনা এ ক্ষেত্রে অভিনেতার মনের খোরাক। শুধুই জ্ঞানভাণ্ডার নয়।
তখনই নিজেকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন অনির্বাণ। বলেন, ‘‘আমি যেটুকু পড়াশোনা করেছি, তা আমার কাজেই লেগেছে। এর দৌলতেই আমার চোখ আরও বেশি খুলেছে। আমি বাড়তি চারটে জিনিসের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। অনেক নতুন জিনিস জানতে পেরেছি। ভাল উপন্যাস বা কবিতা পড়ে আমার মনে এক অবর্ণনীয় অনুভূতি জন্ম নিয়েছে। অনেক সময় আমার ক্লান্তি কেটেছে ভাল কবিতা পড়ে!’’ তখনই তাঁর আফশোস, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে বা তার পরেও তিনি সুযোগ পেলেই নানা বিষয়ের বই পড়ে ফেলতেন। সিনেমা তাঁর সর্বনাশ করে দিয়েছে! এখন পড়ার জন্য কিছুতেই আর সময় বার করে উঠতে পারেন না!