কেন নন্দনে জায়গা পেল না ‘অপরাজিত’? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল নন্দনের কর্তৃপক্ষ মিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। জবাবে তিনি রূঢ় ভাবে বলেছেন, ‘‘যা দেখানো সম্ভব, সেটাই দেখানো হচ্ছে নন্দনে। প্রেক্ষাগৃহে ছবি তো চলছে। আমায় এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে কেন?’’
অনীকের ছবিতে জিতু কমল
নামকরণ তাঁর। নামাঙ্কনও তাঁর। সেই প্রেক্ষাগৃহ নন্দনেই জায়গা পেল না সত্যজিৎ রায়ের জীবনভিত্তিক ছবি, ‘অপরাজিত’!
‘ভবিষ্যতের ভূত’ ছবির পর এ বার ‘অপরাজিত’-র প্রদর্শন নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন পরিচালক অনীক দত্ত? খবর, নন্দন এবং রাধা প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হচ্ছে না সত্যজিতের ‘পথের পাঁচালী’ তৈরির নেপথ্য কাহিনি নিয়ে তৈরি এই ছবি। ছবির প্রযোজক ফিরদৌসল হাসান আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, তাঁরা বিধি মেনেই ছবিটি প্রদর্শনের অনুরোধ জানান। বৃহস্পতিবার খবর এসেছে, শহরের দুই সরকারি প্রেক্ষাগৃহের একটিতেও দেখানো হচ্ছে না ‘অপরাজিত’।
ঘটনাচক্র বলছে, অনীক বহু বার সরকারের বিরোধিতা করেছেন। সরকার বিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশেও তাঁকে দেখা গিয়েছে। তার জন্যেই কি নন্দনের মতো সরকারি প্রেক্ষাগৃহে তাঁর ছবি দেখানো হচ্ছে না? এই প্রশ্নের উত্তর জানা নেই।
এই মুহূর্তে নন্দনে চলছে ‘কিশমিশ’, ‘রাবণ’। টালিগঞ্জে বাঙুর হাসপাতালের পাশেই অবস্থিত রাধা প্রেক্ষাগৃহে এই দু’টি ছবি ছাড়াও দেখানো হচ্ছে ‘কলকাতার হ্যারি’। যার মধ্যে ‘কিশমিশ’ সাংসদ দেব অধিকারীর প্রযোজনা। কলকাতার হ্যারির প্রযোজক বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী। ‘অপরাজিত’র গায়ে শাসক দলের কোনও ছোঁয়া নেই। তাই কি সরকারি প্রেক্ষাগৃহে ব্রাত্য? কী বলছেন অনীক?
পরিচালকের কথায়, ‘‘এই ছবিটি দেখার জন্য প্রচুর দর্শকের অধীর প্রতীক্ষা ছিল। সকলের পক্ষে মাল্টিপ্লেক্সে গিয়ে ছবি দেখা সম্ভব নয়। সিটি কলেজে ছবির প্রচারে গিয়েছিলাম। পড়ুয়ারা উৎসাহের সঙ্গে জানতে চেয়েছেন, ছবিটি নন্দনে আসছে কি না। এ দিকে, আমি বেশ কয়েক দিন ধরেই শুনছিলাম, ছবিটি নন্দনে দেখানো না-ও হতে পারে। তাই ওঁদের প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারিনি।’’ অনীকের আরও যুক্তি, শুধু শহর নয়, শহরতলির দর্শকেরাও ছবি দেখতে আসেন নন্দনে। এর জেরে দর্শকদের একটা বড় অংশ হারাতে চলেছে ‘অপরাজিত’।
সরকারি মহলের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসবে ছবিটির প্রযোজনা সংস্থা ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশনস?
ফিরদৌসলের মতে, তাঁর বা সংস্থার তরফ থেকে আর কিছুই করার নেই। পাশাপাশি আক্ষেপ, যে পরিচালক বিশ্বের দরবারে বাংলা এবং ভারতকে তুলে ধরেছিলেন তাঁর উপরে নির্মিত ছবি সরকারি প্রেক্ষাগৃহে জায়গা পাচ্ছে না! এই ঘটনায় বিস্মিত, আহত তিনি। কিন্তু কেন নন্দনে জায়গা পেল না ‘অপরাজিত’? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল নন্দনের কর্তৃপক্ষ মিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। জবাবে তিনি রূঢ় ভাবে বলেছেন, ‘‘যা দেখানো সম্ভব, সেটাই দেখানো হচ্ছে নন্দনে। প্রেক্ষাগৃহে ছবি তো চলছে। আমায় এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে কেন?’’