মধুমিতা সরকার। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
মহালয়া অসম্পূর্ণ বেতারে ও ছোট পর্দায় মহিষাসুরমর্দিনী অনুষ্ঠান ছাড়া। গত কয়েক বছরে সেই রীতি মেনে বিভিন্ন চ্যানেলে দেবী দুর্গার বিভিন্ন রূপে ধরা দেন টলি পাড়ার অভিনেত্রীরা। কোন রূপে কাকে কেমন লাগছে, তা দেখার জন্য মুখিয়ে থাকে দর্শক। এ বার সম্পূ্র্ণ এক ভিন্ন রূপে দেখা যাবে অভিনেত্রী মধুমিতা সরকারকে। স্টার জলসা আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের কেন্দ্রে এ বারে দেবীর ‘রণং দেহি’ মূর্তি। এমনই এক রূপে দেখা যাবে মধুমিতাকেও।
কখনও স্নিগ্ধ রূপ, কখনও বা রণমূর্তি ধারণ করে তিনিই বধ করছেন শুম্ভ-নিশুম্ভকে। দেবীর এই রূপের নাম কৌশিকী। এর আগে পার্বতী রূপে দেখা গিয়েছিল মধুমিতাকে। কেমন ছিল দেবী কৌশিকী হয়ে ওঠার সফর? আনন্দবাজার অনলাইনকে মধুমিতা বলেন, “দেবী কৌশিকী হতে পেরে সত্যি ভাল লেগেছে। এর আগে সীতা ও পার্বতীর চরিত্রে অভিনয় করেছি। এই চরিত্রগুলির ব্যাপারে আমরা সকলেই কমবেশি জানি। কিন্তু, নবদুর্গার সব ক’টি রূপের বিষয়ে আমাদের ধারণা তেমন নেই। তাই এই রূপগুলি নিয়ে পড়তে আগ্রহী ছিলাম।”
অভিনেত্রী শিবভক্ত। কখনও দেওঘরে, কখনও বা কলকাতার ভূতনাথ মন্দিরে মহাদেবের পুজো করেন। সম্প্রতি হিন্দু পুরাণেও আগ্রহ তৈরি হয়েছে তাঁর। মধুমিতা বলেন, “হিন্দু পুরাণে কী আছে, সেগুলি জানতে খুব ভাল লাগে। দেবী কৌশিকীর বিষয়ে পড়েও খুব ভাল লাগে। কখনও তাঁর সৌম্য রূপ, কখনও তিনি রুদ্ররূপা।”
কৌশিকী রূপে বেশ কিছু লড়াইয়ের দৃশ্যেও অভিনয় করেছেন মধুমিতা। শুম্ভ ও নিশুম্ভ অসুরকে বধের সময়ে রয়েছে এই লড়াইয়ের দৃশ্য। তার জন্যও প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি। অভিনেত্রী বলেন, “কথা বলার ধরন নিয়েও প্রস্তুতি নিয়েছি। বাচনভঙ্গির জন্যও বিশেষ প্রস্তুতি নিতে হয়েছিল। বাকিটা পরিচালকের উপর নির্ভর করেছিলাম।”
বর্তমানে কলকাতা-সহ গোটা রাজ্য আরজি কর-কাণ্ডের জন্য উত্তাল। সমাজে নারীর অবস্থান নিয়ে বার বার প্রশ্ন উঠছে। দেবী দুর্গার ছবিও প্রতীক হিসেবে উঠে এসেছে নানা মিছিলে। তাই চলতি বছরের পুজোয় একটি বিশেষ প্রার্থনা করছেন মধুমিতা। অভিনেত্রী বলেছেন, “প্রতি বছরই মা দুর্গা আসেন। কিন্তু চলতি বছরে দেবী দুর্গা ও প্রত্যেক মর্ত্যবাসীর পক্ষ থেকে একটা জিনিস চাইছি। দেবী দুর্গা যে শক্তি নিয়ে আসছেন, তা যেন প্রত্যেক মহিলা নিজের মধ্যে অনুভব করতে সক্ষম হন। শুধু সাজগোজ করে, ম্যাডক্সে গিয়ে ফুচকা খেলেই পুজো হয়ে যায় না। এই পুজোর অনেক বড় একটা অর্থ আছে। দেবীর মুখে হাসি, হাতে ত্রিশূল। আবার আর এক হাতে পদ্মফুল। দেবীর বিভিন্ন রূপ প্রত্যেক নারীর মধ্যেও বিরাজ করে। শুধু সেই শক্তিটা জাগিয়ে তুলতে হবে।”
মধুমিতা জানান, এ বারের পুজোয় দেবী দুর্গার শক্তি অনুভব করাই মধুমিতার একমাত্র লক্ষ্য।