অভিনেত্রী র্যাচেল হোয়াইট
কলকাতায় জন্ম। পড়াশোনাও এই শহরেই। ভারতীয়। তা সত্ত্বেও অভিনেত্রী র্যাচেল হোয়াইটকে নিজের ‘ভারতীয় নাগরিকত্ব’ প্রমাণ করতে হচ্ছে! তাঁর ‘অপরাধ’, তিনি ক্যাথলিক, তাঁর পদবি ‘হোয়াইট’ এবং তিনি এক জন একক মা (সিঙ্গল মাদার)। শুক্রবার টুইটারে অভিনেত্রীর অভিযোগ, পাসপোর্ট তৈরি করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘অদ্ভুত, কিন্তু এটাই সত্যি। ভারতের আধার কার্ড, পাসপোর্ট, সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও পুলিশের কাছে নতুন করে আমার নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হচ্ছে। আধার কার্ড নাকি নাগরিকত্বের প্রমাণই নয়। এর কারণ আসলে আমার পদবি।’
আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে র্যাচেলকে যোগাযোগ করায় তিনি জানালেন, তাঁর ১৮ বছরের ছেলে ডেসমন্ড হোয়াইট নিজের পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য পুলিশের কাছে পৌঁছন। সেখানে তাঁকে প্রথমেই তাঁর বাবার নাম, বাবার পেশা, মায়ের পেশা, ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। র্যাচেলের বক্তব্য, ‘‘আমার ছেলেকে আমি একা মানুষ করেছি। তাই জন্যেই কি হেনস্থা করা হল? নাকি আমার পদবি দেখে এত প্রশ্ন জেগেছে পুলিশকর্তার মনে? আরও একটি কারণ থাকতে পারে বলে আমার ধারণা। আমি এক জন অভিনেত্রী। তাই জন্য বোধ হয় আরও বেশি করে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে? একের পর এক পুরুষতান্ত্রিক মন্তব্য করেছেন ওই পুলিশকর্তা। যেটা মেনে নেওয়া যায় না। তা ছাড়া, ১৮ বছরের একটি ছেলেকে তাঁর বাবা-মায়ের সম্পর্ক এবং বাবার বিষয়ে প্রশ্ন কেন করা হবে? যে বাবার সঙ্গে তার আর কোনও সম্পর্ক নেই।’’ অভিনেত্রীর দাবি, পাসপোর্ট তৈরিতে যা যা লাগে, সব নথি তিনি পেশ করেছেন, কিন্তু এর পরেও যা চাওয়া হয়েছে, তা অনাবশ্যক এবং অতিরিক্ত। সাধারণত এমন ঘটনা ঘটে না বলেই তিনি জানেন।
Absurd but true ! Just got to know today that despite a valid passport, aadhar card, property and everything in India today during the police verification part, I’m asked to prove my citizenship 😂😂Apparently an aadhar card proves nothing. It’s the surname😏 Disgusted!
— Rachel White (@whitespeaking) April 29, 2022
র্যাচেলের বক্তব্য, ডেসমন্ডের পাসপোর্ট থেকে মন সরিয়ে পুলিশকর্তা র্যাচেলের নাগরিকত্বে মন দিয়েছেন। ওই পুলিশকর্তার দাবি, সন্তান জন্মের আগে র্যাচেলের কাছে ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ থাকলে সেটি দাখিল করতে হবে। র্যাচেল অনেক কষ্টে পুরনো একটি রেশন কার্ড খুঁজে পেয়ে জমা দিয়েছেন। তার পরেও ওই পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, রেশন কার্ডে কাজ হবে কিনা, তা নিয়ে তিনি নিশ্চিত নন। উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকের কাছে রিপোর্ট জমা হওয়ার পরে তিনি জানাতে পারবেন। র্যাচেলের দাবি, তিনি তাঁর সমস্ত নথিপত্র জমা দিয়ে দিয়েছেন। এর আগেও তিন বার তাঁর পাসপোর্ট ইস্যু হয়েছে। কখনও এমন সমস্যার সম্মুখীন হননি তিনি। এরই প্রেক্ষিতে র্যাচেলের প্রশ্ন, ‘‘তার মানে কি আমি এত দিন পর্যন্ত যা যা নথি বানিয়েছি, সব অবৈধ? কিন্তু তা কী করে হয়? এই দেশের নাগরিক হিসেবে আমার কাছে যা যা নথি রয়েছে, তা বানানোর সময়ে তো কোনও সমস্যা হয়নি! তা হলে হঠাৎ আমার ছেলের পাসপোর্টের সময়ে আমাকে কেন এত প্রশ্ন করা হচ্ছে? কারও পাসপোর্ট তৈরির সময়ে তার অভিভাবকের নাগরিকত্ব প্রমাণের প্রয়োজন পড়ে না কোথাও।’’