কলকাতায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন অভিনেত্রী অনসূয়া সেনগুপ্ত। ছবি: উপালি মুখোপাধ্যায়।
‘এ ভাবেও ফিরে আসা যায়’, এ পংক্তি কি তাঁকে ভেবেই লেখা? প্রশ্ন শুনে খানিক লজ্জা পেলেন। তৃপ্তিমাখা সেই লাজুক ভাব নিজের কণ্ঠস্বর থেকে লুকোতে লুকোতে ‘দ্য শেমলেস’ অভিনেত্রী অনসূয়া সেনগুপ্ত বললেন, “ঠিক জানি না। আমি এখনও কান উৎসবের ঘোর কাটিয়ে উঠতে পারিনি।” রবিবার শহর কলকাতায় বসে কথা বললেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। সঙ্গী সহ-অভিনেত্রী ওমারা, সঙ্গীত পরিচালক পিটার দণ্ডকভ। নন্দনে এ দিন ‘দ্য শেমলেস’ দেখানো হল। এ দিনই ছবিটি দেখলেন বাঙালি অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
ছবি শেষের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি অনসূয়া, ওমারা। কান উৎসব স্মৃতিতে এখনও উজ্জ্বল? প্রশ্ন রাখতেই উভয়ের মুখ ঝলমলে। ওমারা বললেন, “সবাই উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছেন। আমরা দু’জনে আনন্দে কাঁদছি। এত তাড়াতাড়ি এ সব ভোলা যায়?” সেই কান্নায় কি মিশে গিয়েছিল অনসূয়ার ‘সেরা অভিনেত্রী’ হওয়ার অসূয়া? মৃদু হেসে ওমারার জবাব, “দেশ যাঁর গর্বে গর্বিত আমি তাঁকে হিংসা করব!” তাঁর দাবি, শিল্পীদের মনে অসূয়া-র জায়গা নেই। অনসূয়া জানিয়েছেন, তাঁর খারাপ লেগেছে। কারণ, এই পুরস্কার একটিই। তাঁরা দু’জনে পেলে বেশি খুশি হতেন।
এই অনুভূতি যে মেকি নয় তার প্রমাণ শুটিংয়ের দিনগুলি। দুই অভিনেত্রীর দাবি, “আমরা খাওয়া, আড্ডা দেওয়া, শট নিয়ে আলোচনা, চিত্রনাট্য পড়া— সব এক সঙ্গে করতাম। অদ্ভুত অসমবয়সী বন্ধুত্ব। খুব মিস করি।” সেই ফাঁক ভরাচ্ছেন অনসূয়ার সঙ্গে কলকাতায় এসে। নন্দন দেখেই মন ভরেছে ওমারার। তাঁদের সঙ্গে ছবি দেখবেন বলে দর্শক দাঁড়িয়ে রয়েছেন? ওমারার দাবি, “এত ভালবাসা আর কোথায় পাব?”
‘ম্যাডলি বাঙালি’ তাঁর প্রথম ছবি। তার পর অভিনয় থেকে টানা বিরতি। বিনোদন দুনিয়ার অন্য বিভাগে কাজ করেছেন। ‘দ্য শেমলেস’ ছবি দিয়ে প্রত্যাবর্তন। এখানে তিনি এক যৌনকর্মীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। ছবির স্বার্থে অভিনেত্রী কতটা ‘শেমলেস’ হতে পারেন? প্রশ্ন ছিল আনন্দবাজার অনলাইনের। “চিত্রনাট্য সত্যি চাইলে ছবির কারণে যতটা শেমলেস হতে হবে, হব। আমার কোনও দ্বিধা নেই”, স্পষ্ট জবাব অনসূয়ার। বাংলা ছবির ক্ষেত্রে অঞ্জন দত্ত যোগ যাঁর তিনি আর বাংলা ছবি করবেন না? চওড়া হাসি ছড়িয়ে বললেন, “আমি মুখিয়ে, কেবল ডাক পাওয়ার অপেক্ষায়।” তার পরেই যোগ, আবার অঞ্জন দত্ত হলে আরও খুশি হবেন।
‘দ্য শেমলেস’ আপাতত সেন্সরের অপেক্ষায়। সব ঠিক থাকলে নতুন বছরে ভারতে মুক্তি পাবে বাঙালি কন্যার প্রত্যাবর্তনের ‘সাহসী’ ছবি।