শ্বেতা ভট্টাচার্য আর রণজয় বিষ্ণুর জুটি হিট। ছবি: ফেসবুক।
ইদানিং ধারাবাহিকের গড় আয়ুতে যেন ভাটা। আগের মতো এক বছর বা হাজার পর্ব ছুঁতে প্রায় দেখাই যায় না আর । ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। যেমন, ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ কিংবা ‘কোন গোপনে মন ভেসেছে’। দ্বিতীয় ধারাবাহিকটি সদ্য এক বছর পূর্ণ করল।
নায়ক ‘অনিকেত’-এর চরিত্রে অভিনয় করছেন রণজয় বিষ্ণু। গত এক বছরে ‘অনিকেত’-এর থেকে রণজয় কী পেলেন, কী পেলেন না? প্রশ্ন রেখেছিল আনন্দবাজার ডট কম।
তিনি বললেন, “পেয়েছি অনেক। দর্শকেরা আমাদের ধারাবাহিক দেখছেন, ভালবাসছেন। যার জোরে আমরা এক বছর ধরে থেকে গিয়েছি। এ কি কম পাওনা?” এই পাওনাতেই বিভোর তিনি। ফলে, কী পেলেন না, তার হিসেব কষতে রাজি নন।
এই ধারাবাহিকের আগে রণজয়কে দেখা গিয়েছিল স্টার জলসার আর এক জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘গুড্ডি’তে। সেই ধারাবাহিকের নায়ক ‘অনুজ’-এর চরিত্রে অনেক স্তর ছিল। অভিনয় করার সুযোগও ছিল। ‘কোন গোপনে মন ভেসেছে’তে ‘অনিকেত’ সেই মাপের অভিনয়ের সুযোগ দিচ্ছে? ধারাবাহিক বলছে, সুপুরুষ নায়কের বাড়িতে সুন্দরী-লক্ষ্মীমন্ত বৌ। চার পাশে সুন্দরীদের আনাগোনা... ব্যস, এ টুকুই! হ্যাঁ আর না-এর মাঝামাঝি উত্তর এল এ বার। নায়ক বললেন, “আমার কোনও খারাপ লাগা নেই। যে পুজোয় যা দক্ষিণা—সেটাই দিতে হবে। এটা বুঝে নিয়েছি। ফলে, ক্ষোভ রাখিনি।” বদলে তিনি অভিনয়ের খিদে মেটাতে তথাগত মুখোপাধ্যায়ের ‘রাশ’ ছবিতে অভিনয় করছেন। আগামীতে মঞ্চেও দেখা যাবে তাঁকে।
এই ধারাবাহিকেও কিন্তু পরকীয়ার রমরমা। ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তার সেই এক বাঁধা ফর্মুলা? হেসে ফেলেছেন রণজয়। তাঁর দাবি, “কোন ফর্মুলায় ধারাবাহিক হিট হবে, এ সব নিয়ে ভাবিই না। ঠিক যেমন ভাবি না, ‘অনিকেত’ আমায় কতটা দিল।” তাঁর সাফ যুক্তি, “হাতে চিত্রনাট্য পাই। মন দিয়ে পড়ি। ক্যামেরার সামনে দাঁড়াই। অভিনয় করি।” জানিয়েছেন, তিনি অভিনেতা। অভিনয় করা তাঁর কাজ। এর বাইরে মাথা ঘামাতে নারাজ। রসিকতাও করেছেন, “এত বিষয় মাথায় নিলে অভিনয়টাই পারব না।”
এক দিকে ধারাবাহিকের সাফল্য, অন্য দিকে গুঞ্জন, ধারাবাহিকের নায়িকা নাকি বদলে যাচ্ছেন! অর্থাৎ, শ্বেতা ভট্টাচার্য আর ‘শ্যামলী’ চরিত্রে অভিনয় করবেন না। এক বছর পরে এটাই কি বড় চমক হতে চলেছে? সম্প্রতি, অভিনেতা রুবেল দাসের সঙ্গে আশীর্বাদ হয়েছে তাঁর। বিয়ে আগামী বছর। তার জন্যই কি আপাতত অভিনয় থেকে দূরে থাকবেন? প্রশ্ন ছিল শ্বেতার কাছে। শুনে আকাশ থেকে পড়েছেন তিনি। বলেছেন, “এ বার শ্যামলী নিজে দাঁড়িয়ে থেকে অনিকেতের বিয়ে দেবে। এমন টানটান উত্তেজক মুহূর্তে অভিনয় ছেড়ে সরে যাব! হয়?” তাঁর দাবি, ধারাবাহিক সফল বলেই এত রটনা। তিনি ধারাবাহিক ছেড়ে কোথাও যাচ্ছেন না।
ধারাবাহিকের দুই স্তম্ভ যদি নায়ক আর নায়িকা হন তা হলে তৃতীয় স্তম্ভ পরিচালক, শ্রীজিৎ রায়। তিনি যদিও উদ্যাপনের মেজাজে নেই। যথারীতি ক্যামেরার পিছনে। ধারাবাহিকের এক বছরের জনপ্রিয়তা কি পরকীয়ার কারণে? নাকি ছোট পর্দায় বাঘের উপস্থিতি? ব্যস্ততার মধ্যেও প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন তিনি। শ্রীজিতের দাবি, “চতুর্থ স্তম্ভ ধারাবাহিকের গল্প। সেটি যত টানটান হবে, দর্শক ততই আগ্রহী হবে। পরকীয়া বা বাঘের উপস্থিতি সেই উত্তেজনাকে বাড়িয়েছে, এই মাত্র।” আরও যোগ করেছেন, উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতায় আসা এক মেয়ের জীবন ধারাবাহিকের পটভূমিকায়। তার জীবনযাত্রা, ওঠাপড়া, ভাঙাগড়া, কখনও জীবনযুদ্ধে জিতে যাওয়া কখনও বা হারা-- সব মিলিয়ে দর্শকদের কাছে ভীষণ রক্তমাংসের, জীবন্ত। এই ধারাবাহিক সেই কারণেই এক বছর ধরে দর্শকমনে এবং রেটিং চার্টে জায়গা করে নিতে পেরেছে।