রুদ্রনীল ঘোষ এবং রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের নাচে-গানে জন্মদিনের আসর মাতোয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।
৫০-এ পা দিয়ে রুদ্রনীল ঘোষ মহাখুশি। “আমি আর প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এক! ৫০-এর পরে বুম্বাদার বয়স থমকে গিয়েছে। এ বার আমারও তাই হবে।” সেই খুশি ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর কথাতেও। এই খুশিতেই কি উদ্যাপনে এলাহি আয়োজন? ৬ জানুয়ারি, জন্মদিনের রাতে ঢালাও খানাপিনা। নাচ-গানে মেতে উঠেছিলেন আমন্ত্রিতরা। তালিকায় অন্যতম রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি এবং রুদ্রনীল উভয়েই অভিনেতা, রাজনীতিবিদও। দুই মাথা এক হলে আলোচনায় রাজনীতি আসবে, স্বাভাবিক। বিশেষ দিনে রূপা এবং রুদ্রনীল সযত্নে বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন। বরং, হাতে হাত রেখে নাচের তালে মেতে উঠতে দেখা গেল দু’জনকে!
নেপথ্যে তখন ইংরেজি গান। রূপা-রুদ্রনীল নাচের ছন্দে মাতোয়ারা। নাচতে নাচতে কাঁধ থেকে খসে পড়েছে শাল। তাতে কী? অনেক দিন পরে তিনি পুরনো মেজাজে। শুধুই নাচে অংশ নেননি, রূপা গানও শুনিয়েছেন। তাঁর নিটোল কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘আজ যেমন করে গাইছে আকাশ’ জন্মদিনের আসরের পরিবেশ যেন বদলে দিয়েছে। তিনি রুদ্রনীলের হয়ে পরের গান ধরেন, ‘আজ যানে কি জিদ না করো’! সঙ্গে রসিকতা, “রুদ্র, তোর হয়ে তোর সমস্ত বোনেদের জন্য গাইছি।” সঙ্গে সঙ্গে হাসির রোল।
রাত বেড়েছে, অভ্যাগতদের সংখ্যাও। প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, প্রযোজক ফিরদৌসল হাসান, শিলাজিৎ, জীতু কমল, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, জিনিয়া সেন, অভিনেতা আবীর চট্টোপাধ্যায়, প্রযোজক রানা সরকার, চিত্রনাট্যকার পদ্মনাভ দাশগুপ্ত, সুরকার-পরিচালক ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত, পরিচালক পারমিতা মুন্সী, রূপাঞ্জনা মিত্র, অনন্যা চট্টোপাধ্যায়, রণজয় বিষ্ণু, ঋষভ বসু, সৌরভ দাস, দর্শনা বণিক একে একে উপস্থিত। বড় পর্দার ‘ভিঞ্চিদা’ও যেন অর্গলহীন। ৫০ বছরে পৌঁছেও যে অবিবাহিত! এ দিকে কবে নজর দেবেন? আনন্দবাজার অনলাইন প্রশ্ন রাখতেই হাসিমুখে বললেন, “হ্যাঁ, আমি বিয়ে করব তো। একটাই অপেক্ষা, কখন পাত্রী এসে আমাকে বলবে, চলো আমরা সাত পাকে বাঁধা পড়ি।” তার পরেই যেন গুরুগম্ভীর, যিনি অর্ধাঙ্গিনী হবেন তিনি সব দিক থেকে অভিনেতার সব কিছুর অর্ধেক অংশীদার হবেন। পোশাক থেকে বসতি হয়ে সুখে-দুঃখে তিনি সমান ভাবে পাশে থাকবেন। এমন মানসিকতার কাউকেই খুঁজছেন তিনি।
রুদ্রনীলের কথা ফুরোতেই আবীর জড়িয়ে ধরলেন তাঁকে। পরনে লাল পোশাক। পদ্মনাভ উপহার হিসাবে এগিয়ে দিলেন আগাম বরের পোশাক, পাজামা-পাঞ্জাবি! এক বান্ধবী আরও এক ধাপ এগিয়ে। তিনি ফিডিং বোতলই উপহার দিয়ে ফেললেন! যদিও সেটি পানীয়ে ভরপুর। জানালেন, আগে হবু বাবা মদ্যপান করে বোতলের উদ্বোধন করুন। তার পর সেটি হবু সন্তানের জন্য তুলে রাখবেন।
এমন হুল্লোড়ে ছোট্ট ছন্দপতন, আসরে দেখা গেল না পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, রাজ চক্রবর্তী, কাঞ্চন মল্লিককে। রুদ্রনীলের সঙ্গে যাঁদের ‘চার ইয়ারি কথা’ প্রসিদ্ধ।