এ বছরের পুজো শারদীয়ায় কাশফুল, শিউলির গন্ধ ছাপিয়ে খানিক বিষণ্ণতায়। দ্রোহকাল, অধিকারের রাত যাপন। উদযাপনের দিনগুলোও ছেঁটেকেটে কম। ঋদ্ধিমা ঘোষ, গৌরব চক্রবর্তীকেই দেখুন। ওঁরা এবার পুজো শুরুই করছেন সপ্তমী থেকে।
সময়ের কথা ভেবে সাজেও বদল। এর আগে আনন্দবাজার অনলাইনকে ঋদ্ধিমা জানিয়েছিলেন, উদ্যাপন হোক প্রতিবাদের হাত ধরে। সেই রেশ নিয়ে সপ্তমীর সাজে জায়গা দখল করেছে কালো রং।
একরত্তি ধীরকে নিয়ে এ বার জুটির দ্বিতীয় পুজো। জাঁকজমক বেশি হওয়ার কথা। কিন্তু বিষণ্ণ মন নিকষ কালোতেই খুঁজছে আশ্রয়। ঋদ্ধিমা বেছে নিলেন কাতান বেনারসিতে বোনা সালোয়ার কামিজ। তাতে জরির কাজ। সঙ্গে সোনালি গয়না। খোলা চুল, অল্প রূপটান, অভিনেত্রীর মতে এটুকুই যথেষ্ট। গৌরব আরও ছিমছাম। হ্যান্ডলুম কালো শার্ট, জিন্স । উদ্যাপনের স্বাদ আনতে উত্তরীয়ের মতো গলায় জড়ালেন বাটিকের স্কার্ফ।
প্রতি বছরেই অঞ্জলির অষ্টমী মাস্ট। সকাল সকাল স্নান সারা। আজ একটু সাজ হোক? এই প্রশ্ন নিয়ে গৌরবের দিকে তাকালেন ঋদ্ধিমা। হাসিতেই পাল্টা জবাব অভিনেতার। স্বামীর থেকে সবুজ সংকেত পেতেই খুশি মনে শাড়ি বাছতে বসলেন অভিনেত্রী।
এটা-সেটা দেখতে দেখতে শেষমেশ লাল পাড়, সাদা সিল্কের শাড়ি বেছে নিলেন নায়িকা। জমিনে জরির বুটি। আঁচল সিঁদুর লাল। তাতে জরিবোনা সূক্ষ কাজ। এই শাড়ির সঙ্গে সোনার বড় ঝুমকো, চুড়, আংটি। হাতখোঁপায় জুঁইয়ের মালা জড়িয়ে ঋদ্ধিমা এ দিন যেন জমিদার গিন্নি! আঁচলে চাবির গোছা আর পানের বাটার যা অভাব।
গিন্নি জমিদারি সাজে পুজো মাতালে কর্তাকেও পাল্লা দিতে হয়! গৌরবের সাজ বনেদিয়ানায় ভরপুর। তসররঙা বেনিয়ান পাঞ্জাবি। তাতে জরির সূক্ষ্ম কাজ। লাল সিল্কের ধুতি।
নবমী মানেই অল্প মনখারাপ অনেকটা উন্মাদনা— এই দিয়েই দম্পতির পুজোর শেষ দিনের সাজ। এ বারে আর শাড়ি নয়, ঋদ্ধিমা বাছলেন লেহেঙ্গা-চোলি।
রানিরঙা লেহেঙ্গা-চোলিতে সোনালি জরির জমাট কাজ। ব্যাকলেস চোলিতে ঋদ্ধিমার খোলা পিঠ। তাতে যেন শরতের সোনা রোদের আঁকিবুকি। “কাতান বেনারসির এই লেহেঙ্গা, চোলি আপনারও নবমীর সাজ হতে পারে”, নিজেকে আয়নায় দেখতে দেখতে আনন্দবাজার অনলাইনের পাঠকদের বার্তা দিলেন তিনি।
বৌয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জমকালো সাজে গৌরবও! কাতানের ব্রোকেট শেরোয়ানি, সিল্ক পাজামা পরে তথাগত ঘোষের ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতেই ঋদ্ধিমার মুখচোখে মুগ্ধতা। তাড়াতাড়ি এগিয়ে এসে পোশাক ঠিক করে দিতে ব্যস্ত!
আনন্দবাজার অনলাইনের হয়ে শুটিং করতে এসে অভিনেতা দম্পতি ফিরে গিয়েছিলেন প্রেমবেলায়। যেন সদ্য প্রেমে পড়েছেন। চাউনিতে ভালবাসা নিয়ে গৌরবের বুকে ঋদ্ধিমার মাথা।
শাড়ি, পোশাক: ইন্ডিলুম (গড়িয়াহাট)। পরিকল্পনা: স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রয়োগ: উপালি মুখোপাধ্যায়। চিত্রগ্রাহক: তথাগত ঘোষ, জয়। স্টাইলিং: দেবযানী ঘোষ। রূপসজ্জা: নূর আলম। লোকেশন: ইন্ডিলুম (গড়িয়াহাট)। জুতো: শ্রীলেদার্স।