দুই রূপে অনির্বাণ চক্রবর্তী। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
একটি করে ছবি মুক্তি পাচ্ছে, অনির্বাণ চক্রবর্তী চমকে দিচ্ছেন। ‘প্রধান’ ছবিতে তিনি খলনায়ক ‘জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়’। দেবের বিপরীতে তাঁকে দেখে বিস্মিত দর্শক। আবারও তিনি দেবের সঙ্গে ‘খাদান’ ছবিতে। এ বার তিনি আদিবাসী! সদ্য প্রকাশ্যে তাঁর লুক। মাথায় ঝাঁকড়া চুল। গলায় হাঁসুলি। তির-ধনুক নিয়ে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে।
এ বারেও কি ছবিতে জাঁদরেল খলনায়ক? লুক দেখে অভিনেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। অনির্বাণ ব্যস্ত পরের ছবি নিয়ে। তার ফাঁকে ফোনের ও পারে হাসিমাখা জবাব এল, “খুবই নির্ভীক, সাহসী। কয়লাখনি অঞ্চলের আদিবাসী গোষ্ঠীর নেতা। অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে ভয় পায় না। খলনায়ক নই।” অর্থাৎ, দেবের বিরোধীপক্ষ নন, বন্ধু। বিপরীতে নায়িকা আছেন? ফের হাসতে হাসতে অভিনেতার উত্তর, “এত কিছু বলে দিলে তো কেউ প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি দেখতেই যাবেন না। এটা বলতে পারি, পর্দায় দেব, যিশু, বরখার সঙ্গেই আমার যাবতীয় দৃশ্য।” তিনি সেই সব দৃশ্য খুব উপভোগও করেছেন। কারণ, যিশু সেনগুপ্ত তাঁর পূর্ব পরিচিত। দেবের সঙ্গে একটি ছবি করে ফেলেছেন। ফলে, কাজের পাশাপাশি বন্ধুত্ব উদ্যাপনের সুযোগও ছিল। কেবল নতুন পরিচয় বরখা বিস্তের সঙ্গে। অভিনেতার দাবি, বলিউড অভিনেত্রী প্রথম দিন থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। তাই কোনও অসুবিধে হয়নি।
প্রত্যেক চরিত্রেই নিজেকে উজাড় করে দেন অনির্বাণ। মঞ্চাভিনেতা হওয়ার কারণে, যে কোনও চরিত্রে অনায়াসে নিজেকে মানিয়েও নেন। কিন্তু ‘খাদান’ ছবিতে ‘মান্ডি’ হতে গিয়ে অভিনেতাকে অনেক কিছু নতুন করে শিখতে হয়েছে। সে কথা নিজেই বলেছেন তিনি, “অনেক চরিত্রে অভিনয় করেছি। কোনও আদিবাসী চরিত্রে এই প্রথম। যে কারণে আমায় বেশ খাটতে হয়েছে।” চরিত্রের খাতিরে তিনি বাংলা ঘেঁষা আদিবাসী ভাষা বলেছেন। মজা করে যোগ করেছেন, “ছোট বেলায় তির-ধনুক নিয়ে খেলেছি। তখন তো পোজ় দিয়ে তার পর হাত দিয়েই তির ছুড়তাম। পর্দায় সেই উপায় নেই। তাই শিখতে হয়েছে বিষয়টি।” চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে অনেক অ্যাকশন দৃশ্যেও দেখা যাবে তাঁকে।
পর্দায় নানা স্বাদের চরিত্র পাচ্ছেন। শুধু মঞ্চে অভিনয় করলে অনির্বাণ এত বৈচিত্র পেতেন? এত চরিত্রে অভিনয়ের পরেও তাঁর প্রথম পরিচয় ‘একেনবাবু’। ভিন্ন স্বাদের চরিত্র বাছার কারণ কি এটাও? অনির্বাণের মতে, যত দিন শুধু মঞ্চে অভিনয় করেছেন তখনও কিন্তু নানা স্বাদের চরিত্রই করেছেন। তাঁর কথায়, “খুব ভারী থেকে কৌতুক চরিত্র— সব ধরনের অভিনয় মঞ্চ আমায় দিয়েছে। ফলে, পর্দায় না এলে নানা স্বাদের চরিত্র পেতাম না, এ কথা ঠিক নয়।” পর্দায় যে সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে তার জন্য ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ তিনি। পাশাপাশি এ-ও জানাতে দ্বিধা করেননি, তাঁকে দেখেই যখন দর্শক বা অনুরাগীরা ‘একেনবাবু’ বলে ডাকেন, কবে এই চরিত্রকে আবারও পর্দায় দেখতে পাবেন জানতে চান, ভাল লাগে তাঁর।
পর্দার ‘মান্ডি’র বক্তব্য, “একেনবাবু’ হিসেবে জনপ্রিয় হতেও কিন্তু যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হয়েছে। তাই কেউ এই নামে ডাকলে খুশি হই। তা বলে একই চরিত্রে পর পর অভিনয় করতে হলেও একঘেয়ে লাগবে। তাই অন্য স্বাদের চরিত্র খুঁজি। ওগুলোই আমার অক্সিজেন। মাঝেমধ্যে বিরতি দিয়ে আবার ‘একেনবাবু’তে ফিরলে অভিনয়টাও ভাল হয়।”