Anirban Bhattacharya

এখন গুন্ডাগিরিই স্বাভাবিক, গান গাওয়া নয়! ‘হুলি গান ইজ়ম’ টিজ়ার আসতেই বললেন অনির্বাণ

অভিনয় থেকে গান— অনির্বাণ ভট্টাচার্য আসছেন নতুন রূপে। তাঁর গানের দল ‘হুলি গান ইজ়ম’ মার্চের শেষে আনছে ‘মেলার গান’।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৫ ১৮:২০
‘হুলি গান ইজ়ম’ নিয়ে আসছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য।

‘হুলি গান ইজ়ম’ নিয়ে আসছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত।

গান তিনি ভালই গান। তাঁর অনুরাগী শ্রোতারা বলেন। তাঁর পরিচালকেরাও। অনির্বাণ ভট্টাচার্যের বিনীত দাবি, “প্রথাগত ভাবে গান কোনও দিন শিখিনি। কোনও বাদ্যযন্ত্রও বাজাতে জানি না।” এ সব সত্ত্বেও তিনি বাংলা ব্যান্ড ‘হুলি গান ইজ়ম’ আনছেন। যেখানে ভিন্ন ধারার গান শুনতে পাবেন তাঁর অনুরাগীরা। বুধবার প্রকাশ্যে এসেছে ব্যান্ডের টিজ়ার। ফিউশন পোশাকের অভিনবত্বও চোখ টেনেছে। নায়ক-পরিচালক-গায়ক-সহ দলের প্রত্যেকের মাথায় ব্যান্ড পার্টি টুপি। কথা বলতেই অনির্বাণ আনন্দবাজার ডট কমকে জানিয়েছেন, পুরো পোশাক ব্যান্ড পার্টির মতো নয়। ঢিলে প্যান্ট, সাদা জুতো— মজার একটা ব্যাপার ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা রয়েছে। এই প্রজন্মের যাতে আকর্ষণ বাড়ে। ২৮ মার্চ অনির্বাণ আর তাঁর দল প্রথম শোনাবেন ‘মেলার গান’। গান লিখেছেন তিনিই।

Advertisement

সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘শাহজাহান রিজেন্সি’ ছবিতে অনির্বাণের গাওয়া ‘কিচ্ছু চাইনি আমি’ দর্শক-শ্রোতা প্রশংসিত। সম্প্রতি, জ়ি বাংলার গানের প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান ‘সারেগামাপা’-র বিশেষ পর্বের সঞ্চালনায় দেখা গিয়েছে তাঁকে। খ্যাতনামী গায়ক অভিজিৎ ভট্টাচার্য পর্যন্ত তাঁর গানে মুগ্ধ! বলেছিলেন, “তুমি নিয়মিত গাও না কেন?”

অনির্বাণ কোনও অনুষ্ঠানে যাওয়া মানেই তাঁর কাছে উপস্থিত দর্শক-অনুরাগীদের গানের আবদার। অভিনেতার এই পরিচয় আরও ছড়িয়েছে ‘মন্দার’, ‘অথৈ’, ‘বল্লভপুরের রূপকথা’, ‘তালমারের রোমিও-জুলিয়েট’-এর সৌজন্যে। ছবিগুলোর গান অ্যালবামের আকারে প্রকাশিত। গান ভালবাসেন যাঁরা তাঁরা মন দিয়ে শুনেছেন। বারে বারে তাঁকে আবদার জানিয়েছেন, অভিনয়, পরিচালনার পর গানের দুনিয়াতেও অনির্বাণ না হয় এলেন।

সেই আবদার রাখতেই কি গান নিয়ে আসছেন? প্রশ্নের জবাবে অনির্বাণ বললেন, “কিছুটা বলতে পারেন। আমার গানবাজনা করার খুব শখ। কিন্তু একা গাইব বা একা কিছু করে উঠব— সেই সাঙ্গীতিক দক্ষতা আমার নেই। তাই আমায় কিছু করতে হলে বন্ধুদের সঙ্গে দল বেঁধেই করতে হত।” নাটকের সূত্রে অনির্বাণ, শুভদীপ, দেবরাজ, সুশ্রুত, কৃষাণুর ১৫ বছরের বন্ধু। এঁরা নাটকের অনেক গান বানিয়েছেন, গেয়েওছেন। এঁদের করা অ্যালবাম হিট। এটাও ব্যান্ড তৈরির দ্বিতীয় কারণ। তার পর বছর দু’য়েক ধরে পরিকল্পনা। বুধবার গানের টিজ়ার প্রকাশ্যে।

অনির্বাণ মানেই মাটির গন্ধ। তাঁর পরিচালিত সিরিজ় বা ছবি মাটির কাছাকাছি মানুষের কথা বলে। গানের টিজ়ারেও তার ছায়া। ভাঙা বাড়ি, বট-অশ্বত্থ গাছের মোটা মোটা ঝুরি, শিকড়, মেঠো পথ... প্রসঙ্গ তুলতেই তাঁর সংযোজন, “ওটা ঋদ্ধি সেনের ভাবনা। টিজ়ারের দৃশ্যকল্প তাঁর তৈরি। তাই প্রশংসাও ওঁরই প্রাপ্য। পোশাক পরিকল্পক সঞ্চিতা ভট্টাচার্য।”

‘হুলিগানিজ়ম’-এর বাংলা মানে ‘গুন্ডাগিরি’। অভিনয়ে, পরিচালনায় নিজেকে প্রমাণ করার পর অনির্বাণ এ বার গানের দুনিয়ায় ‘গুন্ডাগিরি’ করবেন? না কি ‘গুন্ডাগিরি’ বন্ধ করবেন?

জবাব যেন ঠোঁটের ডগায়। “হুলিগানিজ়ম এখন মেনস্ট্রিম হয়ে গিয়েছে, হুলিগানিজ়ম সবাই স্বীকার করে নিয়েছেন। এখন যে কোনও ধরনের সুস্থ সাংস্কৃতিক অভ্যাসটাই আসল হুলিগানিজ়ম হয়ে গিয়েছে।” নিজের কথার প্রেক্ষিতে সহজ উদাহরণও দিয়েছেন গায়ক। যেমন, কেউ কারও মাথায় ইট ছুঁড়ে মারল— সেটাই এখন স্বাভাবিক। কেউ গাইলে বরং সেটা অস্বাভাবিক। তাই তিনি গানের দলের এই নাম দিয়েছেন। ব্যান্ড কতটা সফল হবে সেই নিয়েও এখনই ভাবতে রাজি নন তিনি। মন দিয়ে গান শোনাবেন— এই স্বপ্ন নিয়েই নতুন পথে চলার ইচ্ছে তাঁর।

Advertisement
আরও পড়ুন