‘বহুরূপী’ ছবিতে আবীর চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
সম্প্রতি, আড়িয়াদহকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত জয়ন্ত সিংহের গ্রেফতারের খবর শিরোনাম দখল করেছিল! নেপথ্যে ব্যারাকপুরের এসিপি শ্রীমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই পুলিশ আধিকারিকের জীবনের ঘটনা পর্দায় আসতে চলেছে, নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে। এই প্রসঙ্গে শিবপ্রসাদের সঙ্গে কথা বলল আনন্দবাজার অনলাইন। পরিচালক জানিয়েছেন, তাঁদের আগামী ‘বহুরূপী’ ছবিতে আবীরকে যে পুলিশ অফিসারের চরিত্রে দেখা যাবে, তা শ্রীমন্তবাবুকে অনুসরণ করেই তৈরি।
১২ বছর ধরে এই ছবি তৈরির স্বপ্ন দেখেছেন পরিচালক জুটি। সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি এই ছবি। ১৯৯৮ থেকে ২০০৫, এই ৭ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের বুকে ঘটে চলা এক মারাত্মক অপরাধ এই ছবির প্রেক্ষাপট। সেই সময় শ্রীমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় সেই অপরাধ দমনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। শিবপ্রসাদের কথায়, “তখনও শ্রীমন্তদা এ রকমই ছিলেন। যে কোনও অপরাধে বুক চিতিয়ে এগিয়ে যেতেন। যাকে বলে বাস্তবের ‘সিংহম’। কোনও ভয়ডর নেই। অন্যায় দেখলেই তাঁর রক্ত যেন ফুটতে থাকে। সেই চরিত্রই ফুটিয়ে তুলেছেন আবীর চট্টোপাধ্যায়।”
পর্দায় তাঁর নাম ‘সুমন্ত ঘোষাল’। পর্দায় শ্রীমন্তকে ফুটিয়ে তুলতে আবীরকে খুব খাটতে হয়েছিল? কারণ, এই প্রথম উর্দি পরা পুলিশের ভূমিকায় তিনি। আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নে নায়কের জবাব, “বাস্তবের কোনও চরিত্র যখন ছবিতে ফুটিয়ে তোলা হয়, তখন আমার ধারণা, দু’ভাবে প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে। এক, সেই বাস্তব চরিত্রের সঙ্গে কথা বলে, তাঁকে খুঁটিয়ে দেখে একেবারে তাঁর মতো হয়ে ওঠা। দুই, তাঁর সঙ্গে কথা বলে ধারণা করে নিয়ে চিত্রনাট্য যে ভাবে এগোচ্ছে সে ভাবে নিজেকে ক্যামেরার সামনে তুলে ধরা।” আবীর দ্বিতীয় পন্থা অনুসরণ করেছেন। প্রথমে গল্পে শুনেছেন, এই এসিপি অপরাধীদের যম। । তার পর চিত্রনাট্য এবং পড়াশোনা— এই দুই উপকরণ মিলিয়ে দিয়েছেন তাঁর অভিনয়ে। তা ছাড়া, শুটিংয়ের সময় এসিপি নিজে অভিনয় দেখতে এসেছিলেন। আলাপের পরে তাঁর থেকে পরামর্শও নিয়েছেন আবীর।
মানুষ শ্রীমন্তবাবু কেমন? প্রশ্ন ছিল শিবপ্রসাদ, আবীর— দু’জনেই কাছেই। অভিনেতার কথায়, “অল্প কথায় তাঁর বর্ণময় জীবনকে জানা, তাঁকে ধারণ করা একটু মুশকিল। তবে কথা বলে এটা বুঝেছি, মানুষটা আর পাঁচ জনের মতো অতি সাধারণ নয়। ওঁর জীবনের ঘটনা বলছে, দীর্ঘ সময় ধরে মারাত্মক, ঝুঁকিপূর্ণ জীবনযাপন করা সহজ নয়। কলজের জোর লাগে।” তাই সেই ব্যক্তিত্বকে পর্দায় কতটা নিখুঁত ভাবে ফোটাতে পেরেছেন, এসিপির মুখ থেকে সেটা জানার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন আবীর। শিবপ্রসাদের দাবি, “মানুষটি ভীষণ রসিক। মজা করতে ভালবাসেন। কিন্তু যখনই তিনি উর্দি গায়ে দেন, একদম অন্য মানুষ।” এ কথাও জানিয়েছেন, যে দিন শ্রীমন্তবাবু শুটিং দেখতে এসেছিলেন সে দিন সাতটি থানার ওসি শুধু তাঁকে দেখতে লোকেশনে উপস্থিত হয়েছিলেন!