নরেন্দ্র মোদীর ব্রিগেডে শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র
নীলবাড়ির লড়াইয়ে সব জেলায় সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এমনটা আগেই জানিয়েছে বিজেপি। শুধু মোদী নন, অমিত শাহও আসবেন বার বার। রাজ্য বিজেপি-র যা পরিকল্পনা তাতে ২৯৪ আসনের প্রার্থীরাই মোদী বা শাহর সঙ্গে কোনও না কোনও মঞ্চে থাকবেন। তবে একই জেলায় মোদী একাধিক সভা করবেন না ধরে নিয়েই প্রচারসূচি সাজাচ্ছে গেরুয়া শিবির। তবে ব্যতিক্রম পূর্ব মেদিনীপুর। এই জেলায় গত ৭ ফেব্রুয়ারি হলদিয়ায় সভা করে গিয়েছেন মোদী। কিন্তু আবার আসছেন তিনি। কারণ, এই জেলাতেই বিধানসভা নির্বাচনের ‘হাইভোল্টেজ’ আসন নন্দীগ্রাম। যেখানে মুখোমুখি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিজেপি-র ‘পোস্টারবয়’ শুভেন্দু অধিকারী।
তবে মোদী নন্দীগ্রামে সভা করতে যাবেন কি না সে ব্যাপারে এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি। তবে পূর্ব মেদিনীপুরে যে তিনি আবার আসছেন সে ব্যাপারে নিশ্চিত বিজেপি। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় খতিয়ে দেখার পরেই ঠিক হবে স্থান। সেই সভা অধিকারীদের শহর কাঁথিতেও হতে পারে।
রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ এমনটা আগেই জানিয়েছেন যে, নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে বার বার রাজ্যে আসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২০টি সমাবেশ করতে পারেন তিনি। যার মধ্যে দু’টি সভা নির্বাচন ঘোষণার আগেই হয়ে গিয়েছে। কমিশন ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের পরে গত রবিবারই ব্রিগেড সমাবেশ করেছেন। আবার আসছেন তিনি। বিজেপি-র তরফে নির্দিষ্ট করে দিন ক্ষণ জানা না গেলেও সূত্রের খবর, আগামী ১৮ ও ২০ মার্চ মোদীর বাংলা সফর হতে পারে। এটা হবে প্রথম দফার নির্বাচনের জন্য।
২৭ মার্চের প্রথম এবং ১ এপ্রিলের দ্বিতীয় দফায় যথাক্রমে ৯টি ও ৭টি আসনে ভোটগ্রহণ পূর্ব মেদিনীপুরে। তাই মোদী যদি পূর্ব মেদিনীপুরে ফের সভা করেন তবে তা প্রথম দফার আগেই হতে পারে। সেই সঙ্গে মোদী বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলাতেও চলতি মাসেই সভা করতে পারেন। দ্বিতীয় দফার আগে মোদীর সভা হতে পারে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। ওই দফায় জেলার ৪টি আসন গোসাবা, পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ ও সাগরে ভোটগ্রহণ রয়েছে। এই জেলায় আগেই অমিত শাহ এবং জেপি নড্ডা সভা করেছেন। এ বার মোদীর পালা।
গত লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে যেখানে যেখানে বিজেপি-র শক্তি কম তার মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা। তাই এই জেলার উপরে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপি। অন্য দিকে পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপি-র শক্তি কম হলেও শুভেন্দুর উপর অনেকটাই ভরসা করছে গেরুয়া শিবির। তবু মোদী ওই জেলায় আসবেন দ্বিতীয় বার। আর তার পিছনে মূল কারণ— নন্দীগ্রাম।
বাংলার ওই গ্রামীণ বিধানসভা তৃণমূলের আন্দোলনের দৌলতেই জাতীয় পরিচয় পেয়ে যায়। কিন্তু নীলবাড়ির লড়াই সেই নন্দীগ্রামকে ‘ভিভিআইপি’ বানিয়ে দিয়েছে। তার মূলে অবশ্য মমতা। তিনি নিজেই ওই কেন্দ্রে প্রার্থী হতে চান বলে যে দিন ঘোষণা করেছিলেন সে দিন থেকেই বিধানসভা নির্বাচনের ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে নন্দীগ্রাম। তাই তো ব্রিগেড সমাবেশে অন্য কোনও আসনের নাম না বললেও মোদীকেও নন্দীগ্রামের কথা বলতে হয়েছে। তিনি মমতাকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘আপনার স্কুটি নন্দীগ্রামের দিকে টার্ন নিয়েছে। সেখানে যদি আপনার স্কুটি উল্টে যায় তা হলে আমরা আর কী করব। আমরা কিন্তু আপনার ভালই চাই।’’ এখন অপেক্ষা ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হয়ে উঠতে পারার আসন নন্দীগ্রামের প্রার্থীর হয়ে কবে প্রচারে আসবেন মোদী।