West Bengal Assembly Election 2021

Bengal polls: নন্দীগ্রামের ১৭ গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৭ জন তারকাকে দিয়ে প্রচার চাইছেন ভোটপ্রার্থী মমতা

সেয়ানে সেয়ানে টক্কর নন্দীগ্রামে। শুভেন্দু অধিকারী যেখানে রাজনীতির উপর বেশি ভরসা করছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তেমনই জোর দিচ্ছেন তারকাদের উপর।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২১ ১৬:২৪

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

এক পক্ষ করতে চায় ১৭টি রোড শো। অন্য পক্ষ চায় ১৭টি পাল্টা প্রচার। সেয়ানে সেয়ানে টক্কর লেগেছে নন্দীগ্রামে। জয়ের জন্য কোনও চেষ্টায় কসুর রাখছে না কোনও পক্ষই। এক দিকে যেমন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্য দিকে তেমনই তাঁর প্রাক্তন সহকর্মী শুভেন্দু অধিকারী। ভোটের ময়দানে দু’জনেই ‘ওজনদার’। দু’জনেই প্রচারে জোর দিচ্ছেন জোরকদমে। কিন্তু কোথাও একটা বিভাজনরেখাও তৈরি হয়ে গিয়েছে। শুভেন্দু যেখানে রাজনীতির উপর বেশি ভরসা করছেন, মমতা তেমনই জোর দিচ্ছেন তারকাদের উপর। কারণ, রাজনীতির কথা বিশদে তিনি নিজেই বলছেন। এবং তিনি মনে করেন, সে কথা তাঁর চেয়ে ভাল তাঁর দলের আর কেউই বুঝিয়ে বলতে পারবেন না।

নন্দীগ্রামে দু’টি ব্লক রয়েছে। নন্দীগ্রাম ১ এবং নন্দীগ্রাম ২। ওই দুই ব্লকে মোট ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। শুভেন্দু পরিকল্পনা করেছেন, বিজেপি-র ওজনদার নেতাদের নিয়ে ওই ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ১৭টি রোড-শো করবেন। কারণ, তাঁরা মনে করছেন, জনসংযোগের মাধ্যম হিসেবে রোড-শো অনেক বেশি ‘লাভজনক’। বিশেষত, তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী মুখ্যমন্ত্রী মমতা যখন পায়ে চোট পেয়ে হুইলচেয়ারে বন্দি। ওই অবস্থায় তাঁর পক্ষে রোড-শো করা সম্ভব হবে না বলেই মনে করেন বিজেপি নেতারা। তবে এর মধ্যেই মমতা একদিন হুইল চেয়ারে বসে বসেই ময়দানের গাঁধীমূর্তির পাদদেশ থেকে হাজরা পর্যন্ত মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ফলে প্রয়োজনে মমতা নন্দীগ্রামেও হুইল চেয়ার মিছিল করতে পারেন। কিন্তু আপাতত ঠিক হয়েছে, শুভেন্দুর ওই ১৭টি রোড-শোয়ের পাল্টা ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চলে ১৭ জন ‘তারকা’ দিয়ে পাল্টা প্রচার করাবে তৃণমূল।

Advertisement

এমনিতেই তৃণমূলের অন্দরে তারকার অভাব নেই। বিজেপি এই বিধানসভা ভোটের আগে দলে তারকাদের নিলেও মমতা সে বিষয়ে তাদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে। এখনও তৃণমূলের ভাঁড়ারে তিন তারকা সাংসদ রয়েছেন— দেব, মিমি চক্রবর্তী এবং নুসরত জাহান। তাঁদের পাশাপাশিই রয়েছেন অভিনেত্রী-সাংসদ শতাব্দী রায়। যিনি দেব-মিমি-নুসরতের আগেই রাজনীতিতে এসেছিলেন। তা ছাড়াও এ বার তৃণমূলের প্রার্থিতালিকায় রয়েছেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, কৌশানী মুখোপাধ্যায়, জুন মালিয়া, কাঞ্চন মল্লিক প্রমুখরা। রয়েছেন রাজ চক্রবর্তীও। এঁরা যদি সেলুলয়েডের তারকা হন, তা হলে মমতার দলে রয়েছেন টেলিভিশনের অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও। তাঁদের আনা হবে মুখ্যমন্ত্রীর প্রচারে। মমতা নন্দীগ্রামে আনতে চান লাভলি মৈত্র, রণিতা দাস, শ্রীতমা মুখোপাধ্যায়দের মতো টেলিভিশনের অতিপরিচিত মুখদেরও। আছেন গায়িকা অদিতি মুন্সীও। এঁদের মধ্যে লাভলি এবং অদিতি নিজেরাও ভোটে প্রার্থী হয়েছেন। লাভলিকে মমতা টিকিট দিয়েছেন সোনারপুর দক্ষিণ আসনে। সেখানে গত লোকসভা ভোটের নিরিখে এগিয়েছিল তৃণমূল। ফলে মমতার হয়ে একদিন তিনি নন্দীগ্রামে প্রচারে আসতেই পারেন।

তৃণমূলের সদস্য বা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি তো বটেই, এই সব তারকার সঙ্গে মমতার ব্যক্তিগত সমীকরণও অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। নন্দীগ্রামের প্রচারে মমতা এঁদের চাইলে কেউই ‘না’ বলবেন না। বস্তুত, দেব ইতিমধ্যেই নন্দীগ্রামে একদফা প্রচার করে গিয়েছেন। প্রয়োজনে তার পরেও তিনি নন্দীগ্রাম যেতে পারেন। বাকিরাও ‘দিদির জন্য’ প্রচারে যেতে তৈরি বলেই তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। এখন দেখার, কবে কবে নন্দীগ্রামের পথে তারকা সমাবেশ হয়।

(এই প্রতিবেদন প্রথম প্রকাশের সময় খবরের শিরোনামে ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের পরিবর্তে ব্লক লেখা হয়েছিল। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য দুঃখিত।)

আরও পড়ুন
Advertisement