প্রলয়-কাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন মমতা।
পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপি-র জেলা সহ-সভাপতি প্রলয় পালকে ফোন করেছিলেন সাফ জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দরকারে আরও অনেককে ফোন করবেন। নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার জানিয়েছেন, ফোনটি করে তিনি কোনও অন্যায় করেননি। প্রয়োজন পড়লে আগামী দিনে এ রকম আরও অনেক ফোন করবেন তিনি। একই সঙ্গে মমতা জানিয়ে দেন, গোপন কথোপকথন রেকর্ড করে ছড়ানোর দায়ে ওই বিজেপি নেতারই শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
ফোনে মমতা এবং প্রলয়ের কথোপকথন ঘিরে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। আনন্দবাজার ডিজিটাল ওই অডিও টেপের সত্যতা যাচাই করেনি। তবে ওই অডিয়ো রেকর্ডিংয়ে মমতাকে প্রলয়ের কাছে ভোটের কাজে সাহায্য চাইতে শোনা গিয়েছিল। তা নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতাকে বার বার সাফাই দিতে দেখা গেলেও, মমতা নীরব ছিলেন। তাতে আরও ধারাল আক্রমণ শানায় বিজেপি। অবশেষে মঙ্গলবার নন্দীগ্রামের টেঙ্গুয়া মোড়ের সভায় বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন মমতা। সরাসরি প্রলয়ের নাম না নিলেও মমতা পাল্টা যুক্তি দেন যে, নন্দীগ্রামের ওই ভোটারের অনুরোধেই তাঁকে ফোন করেছিলেন তিনি।
প্রলয়ের সঙ্গে নিজের কথোপকথন নিয়ে মমতা বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের ওই যে ভদ্রলোকটি! আমার কাছে খবর এসেছিল যে কেউ কেউ কথা বলতে চায়। আমার কী অপরাধ? কেউ কথা বলতে চাইলে কি আমি না বলব? তা হলে তো আবার বলবে অহঙ্কারী? বলবে, কথা বলতে চাইলাম, কিন্তু বলল না। আর কথা বললে, তা রেকর্ড করে বাইরে ছড়িয়ে দেবে। তা ছাড়া এটা তেমন কোনও সিরিয়াস ঘটনা নয়। আমি ওকে কী বলেছি? বলেছি, ভাল থেকো, সুস্থ থেকো, যা ভাল বুঝবে করবে।’’
নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে তিনি যাকে ইচ্ছে ফোন করতে পারেন বলেও মন্তব্য করেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘মনে রাখবেন, প্রার্থী হিসেবে আমি কারও কাছে আর্জি জানাতেই পারি যে আপনার ভোটটা আপনাকে দেবেন। যখন নরেন্দ্র মোদী তৃণমূলের লোকেদের ফোন করেন, তখন দোষ হয় না? উনি তো পঞ্চাশটা করে ফোন করেন!আমি যদি নন্দীগ্রামের এক জন ভোটারের অনুরোধে তাঁকে ফোন করি, অন্যায়টা কোথায়? এ রকম ফোন আমি অনেক করব। আমি জনগণের সেবা করি। কেউ কিছু জানতে চাইলে, তাকে জানানো আমার কর্তব্য। সে যদি কথা রেকর্ড করে, ভাইরাল করে, তার শাস্তি হওয়া উচিত। আমার নয়। কথা রেকর্ড করে ভাইরাল করা অপরাধ। এটা প্রতারণা। করা যায় না।’’
মমতা আরও জানান, এর আগে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ১০-১২ জন বিধায়ককে নিয়ে বিধানসভায় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তাঁরা একটা ব্যাপারে সাহায্য চেয়েছিলেন। তিনি সাহায্য করতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু পরে তাঁরাও ওই কথোপকথন বাইরে ছেড়ে দেন। সুজন চক্রবর্তীকে ফোন করে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগও করেছিলেন বলে জানিয়েছেন মমতা। এ ছাড়াও একদল বামপন্থী ছাত্রছাত্রী চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর আর্জি নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি ফোন করে কাজ হয়ে গিয়েছে জানানোয়, সেটাও রেকর্ড করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন মমতা।