Babul Supriyo

WB Election: মমতার চোট দুর্ভাগ্যজনক, ‘অতিনাটকীয়’ বলে আসল সত্য প্রকাশের দাবি বাবুল সুপ্রিয়র

কী ভাবে দুর্ঘটনায় পড়লেন মমতা, তা নিয়ে বিরোধীদের নানা ‘তত্ত্ব’ এবং চাপানউতরের মধ্যেই মুখ খুলেছেন আসানসোলের সাংসদ বাবুল।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২১ ১৪:৫৩
নেটমাধ্য়মে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে সরব বাবুল সুপ্রিয়।

নেটমাধ্য়মে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে সরব বাবুল সুপ্রিয়। ছবি: বাবুল সুপ্রিয়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সৌজন্যে।

নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুর্ঘটনাকে ‘অতিনাটকীয়’ আখ্যা দিলেন বিজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয়। মুখ্যমন্ত্রীর দুর্ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে তাঁর সুস্থতা কামনা করলেও এর পিছনে আসল সত্য কী, তা মানুষের সামনে আসা উচিত বলেও মনে করেন বাবুল। তাঁর দাবি, বিধানসভা ভোটের আগে গোটা ঘটনার উপর রাজনৈতিক রং চড়ানোর চেষ্টা করছেন তৃণমূল নেত্রী।

নন্দীগ্রামে আহত হওয়ার ঘটনা ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, নন্দীগ্রামে ৪-৫ জন তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এই ঘটনার পিছনে বিজেপি-র ষড়যন্ত্রের তত্ত্বও তুলে ধরেছেন মমতা। তবে বিরোধী নেতাদের অনেকে একে বলেছেন, ‘নাটক’। অনেকের আবার দাবি, ভোটের আগে সহানুভূতি কুড়োনোর প্রচেষ্টা। এ নিয়ে সিবিআই তদন্তেরও দাবি করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব।

কী ভাবে দুর্ঘটনায় পড়লেন মমতা, তা নিয়ে বিরোধীদের নানা ‘তত্ত্ব’ এবং চাপানউতরের মধ্যেই মুখ খুলেছেন আসানসোলের সাংসদ বাবুল। বুধবার রাত পৌনে ২টো নাগাদ তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে বাবুলের মন্তব্য, ‘‘সংবাদমাধ্যমে অনেক কিছুই দেখছি, শুনছি। তবে কোনও ভাবেই বিশ্বাস করি না যে বিজেপি-র ছেলেরা বা কোনও কর্মকর্তা, কর্মী ওঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছেন। ষড়যন্ত্র করে ওঁকে আহত করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর যে ধরনের নিরাপত্তার বেষ্টনী থাকে, তাতে এটা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।’’ দুর্ঘটনার জন্য বিজেপি-র দিকে আঙুল তোলায় মুখ্যমন্ত্রীর রুচিবোধ নিয়েও তাঁকে আক্রমণ করেছেন বাবুল। তাঁর মন্তব্য, ‘‘নিশ্চয়ই লেগে যাওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু তার পরে তিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) যেটা করছেন, সেটা বাংলায় ভোটের সময় একেবারেই অতিনাটক। তিনি সুস্থ হয়ে উঠুন। কিন্তু তার জন্য বিজেপি-র চক্রান্ত বলা, এটা অত্যন্ত অন্যায় এবং নিম্নরুচির পরিচয়।’’ সেই সঙ্গে বাবুল লিখেছেন, ‘নিম্নরুচিরও কিন্তু একটি সর্বনিম্ন স্তর থাকে’!

Advertisement

মমতার দুর্ঘটনা নিয়ে বাবুলের আক্রমণের আগেই অবশ্য মুখ খুলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। এ রাজ্যে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেছেন, ‘‘এটা একেবারেই সহানুভূতি কুড়োনোর প্রয়াস। যদি তিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) চক্রান্তের অভিযোগ করেন, তা হলে দ্রুত এই ঘটনার তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে দেওয়া হোক। এ ভাবে বিরোধীদের বদনাম করার চেষ্টা করছেন তিনি। নিজের দিকে সহানুভূতি টানতে চাইছেন।’’ নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে তদন্ত করানোরও দাবি করেছেন বিজয়বর্গীয়। কমিশন অবশ্য নন্দীগ্রামের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছে। বিজেপি নেতা তথা রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের দাবি, ‘‘(ভোটে) হারবেন বুঝে নাটক করছেন মমতা।’’

বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে সমালোচনা, দাবি উঠলেও গোটা ঘটনায় এখনও নিঃশ্চুপ নন্দীগ্রামে মমতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো শুভেন্দু অধিকারী। নীলবাড়ির দখলের যুদ্ধে নন্দীগ্রাম আসনে মমতা বনাম তাঁর শুভেন্দুর লড়াই ঘিরে রাজনৈতিক তাপমাত্রা চড়লেও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য খরচ করেননি শুভেন্দু।

শুভেন্দু মুখ না খুললেনও বাবুলের আক্রমণের নিশানা থেকে বাদ পড়েননি মমতা। রাজ্যে তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে, এমন দাবিও শোনা গিয়েছে বাবুলের কণ্ঠে। তাঁর কথায়, ‘‘বোঝা যাচ্ছে যে রাজনৈতিক ভাবে এবং মানুষের কাছে ওঁর (মমতার) জনপ্রিয়তা তলানিতে ঠেকেছে। বিশ্বাসযোগ্যতা তলানিতে এসে না ঠেকলে কখনই কেউ এ ভাবে অতিনাটকীতার জন্ম দেয় না।’’

দুর্ঘটনার পর মমতার আঘাত কতটা বা তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে আসল সত্যই বা কী— তা প্রকাশ্যে আনারও দাবি করেছেন বাবুল। তিনি বলেছেন, ‘‘গ্রিন করিডর তৈরি করে ওঁকে স্ট্রেচারে করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসতে হল। এমআরআই স্ক্যান করা হচ্ছে (বুধবার রাতে মমতার স্ক্যান করার সময় এই উক্তি)। ৫ সদস্যের মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। কিন্তু আসলে কী হয়েছে, তার মেডিক্যাল বুলেটিন আমি দাবি করছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। আসল সত্যটা কী, সেটা মানুষের সামনে আসা উচিত।’’

এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে বাঁ পায়ে প্লাস্টার বাঁধা মুখ্যমন্ত্রী ছবি দেখা গিয়েছে প্রায় প্রতিটি সংবাদমাধ্যমে। তবে তাকেও অতিনাটকীয়তা বলেছেন বাবুল। ভোটের আগে এই ঘটনা নিয়ে বিজেপি-কংগ্রেস বনাম তৃণমূলের তরজাও দেখা গিয়েছে। তবে তা অনভিপ্রেত বলেও মনে করেন বাবুল। তাঁর কথায়, ‘‘এ ধরনের রাজনৈতিক অতিনাটকীয়তা চলতে পারে না। বাংলায় এটা রাজনৈতিক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠতে পারে না।’’

আরও পড়ুন
Advertisement