মনোনয়ন পদযাত্রায় গৌতম দেব, অনীত থাপারা
Lok Sabha Election 2024

গোপালের মিছিলে পতাকা নেই তৃণমূলের 

স্বাভাবিক ভাবেই দলের অন্দরে তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়নে তৃণমূলেরই পতাকার অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠা শুরু করেছে।

Advertisement
কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪ ০৮:২৪
পদযাত্রা করে জেলাশাসকের দফতরের পথে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের তৃনমূল কংগ্রেস প্রার্থী গোপাল লামা।

পদযাত্রা করে জেলাশাসকের দফতরের পথে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের তৃনমূল কংগ্রেস প্রার্থী গোপাল লামা। নিজস্ব চিত্র।

পাহাড় ও সমতলের ভেদাভেদ সরিয়ে ঐক্যের বার্তা দিয়ে মনোনয়ন দাখিল করলেন দার্জিলিং আসনের তৃণমূল প্রার্থী গোপাল লামা। বৃহস্পতিবার দুপুরে দার্জিলিং ম্যাল চৌরাস্তায় সভার পরে, তৃণমূল এবং প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার নেতারা মিছিল করে জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে যান। সেখানে গৌতম দেব, অমর লামাদের মতো দুই দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন। তবে উল্লেখযোগ্য ভাবে দার্জিলিং শহরে এ দিন প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার পতাকা নিয়েই মিছিল, সভা হয়েছে। সমতলের সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ থেকে শুরু করে দলের একাধিক নেতানেত্রী উপস্থিত থাকলেও কোথাও তৃণমূলের পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন চোখে পড়েনি। জোটসঙ্গীর পতাকা হাতে নিয়ে সমতলের নেতাদের মিছিল করতে দেখা গিয়েছে।

Advertisement

স্বাভাবিক ভাবেই দলের অন্দরে তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়নে তৃণমূলেরই পতাকার অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠা শুরু করেছে। দলের জাতীয় কর্ম সমিতির সদস্য তথা শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘গোপাল লামা তৃণমূলের প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন। পাহাড়ে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা আমাদের সঙ্গী। ওঁরা বিভিন্ন স্তরে সেখানে ক্ষমতায় আছেন। ওদের নেতা-কর্মীরা পতাকা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে মিছিল করেছেন।’’ আর সভানেত্রী পাপিয়া বলেন, ‘‘পাহাড় ও সমতল মিলেই লড়াই। জোটসঙ্গীরা আমাদের সঙ্গেই আছেন। আলাদা কোনও ব্যাপার নেই।’’

দলীয় সূত্রের খবর, পাহাড়ের অধিকাংশ বাসিন্দা বরাবর সমতল বা রাজ্যের শাসক দলকে নিয়ে ‘অস্বস্তিতে’ থাকেন। আশির দশক থেকে একাধিক বার পাহাড়ে অগ্নিগর্ভ আন্দোলন হয়েছে। তাতে রাজ্যের সরকার প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়েছে বলে মনে করা হয়। সেখান থেকে কয়েক দফায় গুলিতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। সে কারণে বাম আমলে যেমন সিপিএম, তেমনই এখন তৃণমূলের থেকে বেশিরভাগ পাহাড়বাসী দূরত্ব রাখতেই ভালবাসেন। তবে ২০১৭ সালের পরে, অনীত থাপা ক্ষমতায় আসার পরে পরিস্থিতি অনেকটাই বদল হয়েছে। পাহাড়ে তৃণমূল থাকলেও, সাংগঠনিক ভাবে খুব বেশি কিছু করতে পারেননি।

আর বরাবর পাহাড়বাসী আ়ঞ্চলিক দলেই ভরসা রেখেছে। তাই কখনও সুবাস ঘিসিংয়ের জিএনএলএফ, বিমল গুরুংয়ের জনমুক্তি মোর্চা এবং বর্তমানে অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার হাতেই পাহাড়ের শাসনভার রয়েছে। সেই জায়গা থেকে পাহাড়ে তৃণমূল বিশেষ কিছু না করে জোটসঙ্গীর হাতেই দায়িত্ব ছেড়েছে। তাই এ দিনের মিছিল, সভায় তৃণমূলের পতাকাও রাখা হয়নি। ম্যাল চৌরাস্তা থেকে অনীত বলেছেন, ‘‘গোপাল লামা পাহাড়ে ভূমিপুত্র। পাহাড় ও সমতলে কাজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমাদের দলের পরামর্শদাতা। ওঁকে সামনে রেখেই কর্মীরা মিছিল করেছেন। সঙ্গী দলের নেতারাও তাতে ছিলেন।’’

তবে তৃণমূলের সমতলের নেতানেত্রীদের একাংশ বুধবার দার্জিলিং পৌঁছে সমাজমাধ্যমে ছবি ‘পোস্ট’ করা নিয়ে দলের অন্দরে বিতর্ক হচ্ছে। দলের একাংশ মনে করছেন, ওই নেতারা পাহাড়ে ছবি তুলতেই গিয়েছেন। সমতলে তাঁদের বড় অংশের সাংগঠনিক দক্ষতা নেই।

আরও পড়ুন
Advertisement