সোমবার রাতে সাক্ষাতের পর মঙ্গলবার রাজ্যপালকে চিঠি অভিষেকের। — ফাইল চিত্র।
সোমবার রাতে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেছিল তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। দলের নেতৃত্বে ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার অভিষেকের চিঠি গেল রাজভবনে। চিঠিতে নির্বাচন কমিশনের কোন কোন কার্যকলাপে তৃণমূল আপত্তি তুলেছে, তার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে হাতিয়ার করে বিজেপি ভোটে জেতার চক্রান্ত করছে বলেও চিঠিতে অভিষেকের দাবি।
সোমবার রাজধানী দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলের ১০ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল। কমিশনের কাছে অভিযোগ এবং দাবি জানিয়ে বাইরে এসে ধর্নায় বসেন তাঁরা। সেই ধর্না জোর করে তুলে দিয়ে পুলিশ তৃণমূল নেতাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তৃণমূলের অভিযোগ, ‘হেনস্থা’ করা হয়েছে তাঁদের। তা নিয়ে রাতে কলকাতায় রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন অভিষেক-সহ তৃণমূলের ১১ জন নেতা-নেত্রী। রাজভবন থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সামনে দিল্লির ঘটনার জন্য কমিশনকেই দোষ দেন অভিষেক। অভিযোগ করেন, কমিশন মেরুদণ্ড বিকিয়ে দিয়েছে। কেন তিনি এ কথা বলছেন, তার যুক্তিও দেন। পাশাপাশি, জানিয়ে দেন, পদক্ষেপ না করা হলে রাজ্যপালের সঙ্গে মঙ্গলবার রাতেও এসে দেখা করবেন তাঁরা। তার আগেই মঙ্গলবার রাজভবনে গেল অভিষেকের চিঠি। সেই চিঠিতে তৃণমূলের তোলা সমস্ত অভিযোগ নথিভুক্ত করে তা বিস্তারিত আকারে লেখা হয়েছে।
চিঠিতে অভিষেক মূলত পাঁচটি বিষয় তুলে ধরে লিখেছেন, প্রথমত, কী করে এনআইএ, ইডি, সিবিআই এবং আয়কর দফতরকে বিজেপি ব্যবহার করছে। দ্বিতীয়ত, এনআইএর ধনরাম সিংহের সঙ্গে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি গোপন বৈঠক করেছেন। অভিষেকের দাবি, বৈঠকে তৃণমূল কর্মীদের বেআইনি ভাবে নিশানা করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তৃতীয়ত, বার বার তৃণমূল অভিযোগ করলেও তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা। চতুর্থত, দিল্লিতে প্রতিবাদরত তৃণমূল নেতাদের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশ বেআইনি ভাবে আটক করে রাখা। এবং পঞ্চমত, মানবিকতার খাতিরে ঘূর্ণিঝড় প্রভাবিত এলাকার মানুষের ঘর তৈরি করে দেওয়ার জন্য তহবিল মঞ্জুর করার প্রয়োজনীয়তা।
অভিষেক চিঠিতে লিখেছেন, এই বিষয়গুলি সঠিক ভাবে পালিত না হলে অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে মানুষ তার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না। তাই রাজ্যপাল যেন এ বিষয়ে যথোচিত পদক্ষেপ করেন। অভিষেকের দাবি, রাজ্যপাল যেন কমিশনকে নির্দেশ দেন যে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার যাতে জরুরি তহবিল থেকে ঘূর্ণিঝড়ে প্রভাবিত মানুষদের স্বার্থে অর্থ প্রদান করতে পারে। এ ছাড়াও, এনআইএ, ইডি, সিবিআই এবং আয়কর দফতরের ডিরেক্টরকে বদল, এনআইএর এসপি ধনরাম সিংহকে অন্যত্র বদলির দাবিও তুলেছেন অভিষেক। একই সঙ্গে, কেন্দ্রীয় এজেন্সি ভোটের মুখে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যাতে কোনও পদক্ষেপ করতে না পারে, তা-ও নিশ্চিত করার আবেদন জানিয়েছেন অভিষেক।