Partha Chatterjee

২৩ বছরে প্রথম বেহালা পশ্চিমের ভোটে নেই পার্থ, কাউন্সিলরদের দায়িত্ব দিল তৃণমূল

গ্রেফতারের কয়েক দিনের মধ্যেই পার্থকে দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়। সরিয়ে দেওয়া হয় মহাসচিবের পদ থেকেও। তাই এ বারের ভোটে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বকে ভরসা করতে হচ্ছে দলীয় কাউন্সিলরদের উপরেই।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৪ ১১:৪৫
TMC councilors will take charge of loksabha election in the absence of Partha Chatterjee

পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

২৩ বছরে প্রথম বার ভোটে বেহালা পশ্চিমে নেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ১ জুন দক্ষিণ কলকাতা লোকসভায় ভোট।

Advertisement

২০২২ সালের ২৩ জুলাই তাঁকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সেই থেকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে জেলে বন্দি রয়েছেন বেহালা পশ্চিমের পাঁচ বারের তৃণমূল বিধায়ক পার্থ। সেই থেকে রাজ্য রাজনীতির বাইরে রয়েছেন তিনি। তাঁর অনুপস্থিতিতে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের তরফে বেহালা পশ্চিমে ভোট পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ওই এলাকার কাউন্সিলরদের। কলকাতা পুরসভার মোট ১০টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত বেহালা পশ্চিম বিধানসভা। কলকাতা পুরসভার ১১৮, ১১৯ এবং ১২৫ থেকে ১৩২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের পুর নির্বাচনে বেহালা পশ্চিমের সেই ১০টি ওয়ার্ড জিতে নিয়েছে শাসকদল তৃণমূল। এ বারের ভোটে ওই ১০ জন কাউন্সিলরকে নিজ নিজ এলাকার ভোটের দায়িত্ব পালন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দক্ষিণ কলকাতা লোকসভার ভোট পরিচালনার জন্য ১৫ জনের যে কোর কমিটি তৈরি করা হয়েছে, তাতে রয়েছেন বেহালা পশ্চিমের চার জন নেতা। এ ছাড়াও সহযোগী সদস্য হিসাবে লোকসভা এলাকার সব তৃণমূল কাউন্সিলরকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। সেই চার জন নেতার মধ্যে আবার তিন জনই কাউন্সিলর। সেই তিন জন কাউন্সিলর আবার দক্ষিণ কলকাতার রাজনীতির বড় নাম। ১১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারক সিংহ এবং ১৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বর্তমানে কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ। আর ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রত্না চট্টোপাধ্যায় বেহালা পূর্বের বিধায়কও বটে। এ ছাড়াও কমিটিতে রয়েছেন, প্রাক্তন কাউন্সিলর অঞ্জন দাস। এমনই সব বর্ষীয়ান ও অভিজ্ঞ রাজনীতিকদের দায়িত্ব দিয়ে পার্থের অনুপস্থিতি ঢাকতে চাইছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। কারণ বেহালা পশ্চিম দক্ষিণ কলকাতা লোকসভার অন্তর্গত। যা তৃণমূলের গড় হিসাবেই পরিচিত। তাই এই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়ের জন্য বড় ব্যবধান চাইছে দল।

কারণ, গত লোকসভা নির্বাচনে বেহালা পশ্চিম কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী মালা বিজেপি প্রার্থী চন্দ্র বোসের থেকে ১৬,১৬৫ ভোটে এগিয়ে ছিলেন। অথচ, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পার্থ বিজেপির অভিনেত্রী প্রার্থী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়কে ৫০,৮৮৪ ভোটে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলেন। তাই এ বারের ভোটে মালার জন‌্য কাউন্সিলরদের পার্থের ব্যবধান বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেহালা পশ্চিমের ভোট পরিচালনার জন্য তাঁদের খুব বেশি বেগ পেতে হবে না বলেই মনে করছেন অন্যতম দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা তথা কাউন্সিলর তারক সিংহ। তাঁর কথায়, “বেহালা পশ্চিমে তৃণমূলের সংগঠন খুব জোরদার। প্রত্যেক ওয়ার্ডে কাউন্সিলর ও সংগঠনের সদস্যেরা দলকে ভাল ব্যবধানে এগিয়ে দিতে পারবেন বলেই আমরা বিশ্বাস করি। কে আছে, কে নেই সে কথা ভেবে লাভ নেই। দলকে বড় ব্যবধানে জেতাতে হবে, আমরা কেবল সেই বিষয় নিয়েই ভাবছি।”

প্রসঙ্গত, ২০০১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম বার বেহালা পশ্চিমে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন পার্থ। আবির্ভাবেই ১০ বছরের সিপিএম বিধায়ক নির্মল মুখোপাধ্যায়কে ১৯ হাজারের বেশি ব্যবধানে হারিয়ে প্রথম বারের জন্য বিধায়ক হন তিনি। এর পর থেকে লোকসভা, বিধানসভা কিংবা পুরসভার ভোট, বেহালা পশ্চিমের ভোট নিজের হাতেই পরিচালনা করতেন পার্থ। কিন্তু গ্রেফতারের কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সরিয়ে দেওয়া হয়েছে মহাসচিবের পদ থেকেও। তাই ২৩ বছর পর বেহালা পশ্চিমের ভোটে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বকে ভরসা করতে হচ্ছে, দলীয় কাউন্সিলরদের উপরেই।

আরও পড়ুন
Advertisement