রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
ভোটপ্রচারে গিয়ে এক দলীয় কর্মীর বাড়িতে ভোজ খেয়েছিলেন। পাতে দেওয়া দই খেয়ে এমনই ভাল লেগেছিল যে সিঙ্গুরের গরুর প্রশংসা করেছিলেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে সঙ্গে এ নিয়ে তাঁকে কটাক্ষ করেছিলেন বিজেপির প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তথা হুগলির বিদায়ী সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তার পর সমাজমাধ্যমে নানা ‘মিম’ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার প্রচারে বেরিয়ে রচনা জানালেন, কেন ওই কথা বলেছিলেন তিনি। পাশাপাশি, তাঁর ওই মন্তব্য নিয়ে সমাজমাধ্যমে কটাক্ষ এবং সমালোচনার ‘জবাব’ দিলেন ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ রিয়্যালিটি শোয়ের সঞ্চালক রচনা। তাঁর কথায়, ‘‘আমি অন্য কিছু বলতে গেলাম। তাই নিয়ে মিম তৈরি হয়ে গেল!’’
শুক্রবার বাঁশবেড়িয়ার হংসেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিয়ে প্রচার শুরু করেন রচনা। সেখানেই প্রচণ্ড গরমের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন বাঁশবেড়িয়া পুরসভার পুরপ্রধান আদিত্য নিয়োগী। তাঁকে নিয়ে বলতে গিয়ে রচনা সিঙ্গুরের কথা বলতে শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘‘চারিদিকে এত সবুজ! সিঙ্গুরের জমিতে গরুরা ঘাস খাচ্ছে। সেই জমির ফসল আমরাও খাচ্ছি। প্রতিটি বাড়ি যে সব্জি কিনছে, সেটাও সিঙ্গুরের জমির ফসল। সবাই সেটা খাচ্ছে। আমি সেটাই বলতে চেয়েছিলাম। আর তা নিয়ে মিম হয়ে গেল।’’
গত ২৩ মার্চ সিঙ্গুরে প্রচারে বেরিয়ে ‘একতা ভোজে’ যোগ দিয়েছিলেন রচনা। বেড়াবেড়িতে মানিক বাগ নামে এক শ্রমিকের মাটির বাড়ির দাওয়ায় বসে খাওয়াদাওয়া সারেন হুগলির তৃণমূল প্রার্থী। মেনুতে ছিল ভাত, বড়িভাজা, পটলভাজা, শুক্তো, ডাল, বেগুনি, আলু পোস্ত, চাটনি আর টক দই। প্রত্যেকটি পদের প্রশংসা করেন তিনি। তবে আলাদা করে দইয়ের কথা উল্লেখ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘এত ভাল দই এখানকার! আমি তো ভাবছি, ব্যাগে করে দই নিয়ে যাব। এত ভাল দই তো কলকাতায় হয় না। ওখানে কী দই হয় কে জানে...’’ বলতে বলতে হেসে ফেলেন রচনা। তার পর আবার বলেন, ‘‘যত বার আসব, তত বার দই নিয়ে যাব।’’ হুগলির দইয়ে মুগ্ধ রচনা শুরু করেন দুধের গুণাগুণ নিয়ে বলা। তিনি বলেন, ‘‘সিঙ্গুরের মাটি এবং ঘাস... বেচারামদা (রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না) এবং করবীদি (হরিপালের বিধায়ক) বলতে পারবেন। সিঙ্গুরে এত ঘাস এবং গাছপালায় ভর্তি। সেগুলো গরু খাচ্ছে। গরু তো শাকপাতা খেয়েই বড় হয়। আর সেগুলো খেয়ে হৃষ্টপুষ্ট হচ্ছে গরু। ফলে তার যে দুধটা বেরোচ্ছে তা এত ভাল যে দইটাও এত ভাল হচ্ছে।’’
এ নিয়ে লকেট খোঁচা দিয়ে জানান, তৃণমূল প্রার্থীর কথাতেই স্পষ্ট যে সিঙ্গুর থেকে টাটা বিদায়ের পর আর কিছুই হয়নি। ঘাসই হচ্ছে সিঙ্গুরে। তবে শুক্রবার রচনা বলেন, ‘‘আমি মন থেকে যেটা মনে করি, সেটাই বলি। সবুজায়ন দরকার। পৃথিবীকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য গাছ দরকার। ঘাস দরকার। না-হলে মানুষের মৃত্যু অবধারিত। যত গাছপালা হবে তত গরম কমবে। এটা যত তাড়াতাড়ি মানুষ বুঝবে, তত তাড়াতাড়ি সবারই ভাল হবে। আমরাও নিশ্চয়ই চেষ্টা করব সবুজায়নের জন্য।’’