Nitin Gadkari

প্রসঙ্গ নির্বাচনী বন্ড: টিআরপি বেশি বলেই অনুদান বেশি, সাফাই গডকড়ীর

প্রবীণ এই বিজেপি নেতা সরকার ইডি, সিবিআই এবং আয়কর বিভাগকে বিরোধীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে যে অভিযোগ উঠছে, তা-ও মানতে রাজি নন।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নাগপুর শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:৪৯
Nitin Gadkari

নিতিন গডকড়ী। —ফাইল চিত্র।

নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে বিরাট আকারের দুর্নীতি হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় সরকার কার্যত তোলাবাজের ভূমিকা নিয়েছে বলে অভিযোগ করছেন বিরোধীরা। বিজেপির প্রবীণ নেতা নিতিন গডকড়ী তার জবাবে বললেন, টিভিতে যাদের টিআরপি বেশি তারাই বিজ্ঞাপনে ভাল দর পায়। সুতরাং কেন্দ্রীয় শাসক দল হিসেবে বিজেপি যে বেশি অনুদান পেয়েছে, তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিতিন রবিবার বলেন, ‘‘এমনকি টেলিভিশন মিডিয়াতেও যাদের টিআরপি বেশি তারা বিজ্ঞাপনে ভাল দর পায়। যাদের টিআরপি কম তারা কম দরে বিজ্ঞাপন পায়। আজ আমরা শাসক দল, তাই আমরা বেশি অনুদান পেয়েছি। কাল অন্য কোনও দল ক্ষমতায় এলে তারাও অনুদান পাবে।” গডকড়ীর মতে, প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই অর্থের প্রয়োজন এবং তার সংস্থান বাড়াতে একটি আইনি উপায় খুঁজে বের করা দরকার ছিল। নির্বাচনী বন্ড সেই কাজটাই করেছে। নাগপুর থেকে প্রার্থী হওয়া নিতিনের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘বিরোধী দলকে দুর্বল বা শক্তিশালী করা কি আমাদের দায়িত্ব? যখন আমাদের মাত্র দু’জন সাংসদ ছিল, আমরা তো সহানুভূতি থেকে কোনও
প্যাকেজ পাইনি।’’

প্রবীণ এই বিজেপি নেতা সরকার ইডি, সিবিআই এবং আয়কর বিভাগকে বিরোধীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে যে অভিযোগ উঠছে, তা-ও মানতে রাজি নন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায়, ‘‘আইন তার নিজের পথে চলছে। এর সঙ্গে বিজেপি বা মোদীজির কোনও সম্পর্ক নেই। আইন অনুযায়ী মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। এজেন্সিগুলো তাদের কাজ করে যাচ্ছে।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘আমরা কাউকে অস্ত্র করছি না। এখন কারও বাড়িতে ৩০০-৪০০ কোটি টাকা পাওয়া গেলে মানুষ দেখে। তার পর তদন্ত হয়। কেউ অন্যায় করে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যদি কেউ এতে ক্ষুব্ধ হয়, তবে তার আদালতে যাওয়ার রাস্তা আছে।’’ কিন্তু বিরোধীরা তো দাবি করছেন, বিজেপি দলটা একটা ওয়াশিং মেশিনে পরিণত হয়েছে। বিজেপিতে গেলেই দুর্নীতি ধুয়ে যাচ্ছে। গডকড়ীর মতে অবশ্য এ কথার কোনও সারবত্তা নেই। এয়ার ইন্ডিয়া দুর্নীতি মামলায় এনসিপি নেতা প্রফুল পটেলকে সিবিআই ক্লিনচিট দেওয়ার বিষয়ে তাঁর দাবি, ‘‘এই পদক্ষেপের সঙ্গে বিজেপি বা প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্ক নেই। তদন্তে সত্যই উদ্ঘাটিত হয়েছে।’’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ৩৭০ আসন জয়ের লক্ষ্যে আস্থা রেখে গডকড়ী দাবি করেছেন, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ ৪০০ আসন অতিক্রম করবে এবং নরেন্দ্র মোদী তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। দক্ষিণ ভারতে বিজেপি এ বার ভাল ফল করবে বলে আশা রাখছেন তিনি। তাঁর মতে, ‘‘আমরা তামিলনাড়ু, কেরল, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং কর্নাটকে কঠোর পরিশ্রম করেছি। এ বার আমরা তেলঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশে ভাল করব।’’ এবং সেই জোরেই বিজেপি ৩৭০-এর লক্ষ্য অর্জন করবে।

বরং বিরোধীদের প্রতি গডকড়ীর পরামর্শ, মতাদর্শের প্রতি সৎ থেকে ধৈর্য ধরে পরিশ্রম করলেই সাফল্য আসে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি যখন জরুরি অবস্থার সময় রাজনীতিতে প্রবেশ করি এবং জয়প্রকাশজির সঙ্গে কাজ শুরু করি, তখন পরিস্থিতি আমাদের পক্ষে অনুকূল ছিল না। কিন্তু একদিন অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী হলেন। মোদী গত ১০ বছর ধরে দেশ শাসন করছেন। জনগণ অবশ্যই সুযোগ দেয়। তবে আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে এবং কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আপনি যে দলেই থাকুন না কেন তার মতাদর্শের পাশে থাকাটা জরুরি। জয়ে বা পরাজয়ে প্রত্যয়ের সঙ্গে দলে থাকাটা জরুরি।’’

আরও পড়ুন
Advertisement