(বাঁ দিক থেকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
সোমবারই কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলার ছক কষা হয়েছিল। তাতে জড়িত ২৬ /১১ মুম্বই হামলার সঙ্গে জড়িত জনৈক রাজারাম রেগে। তাঁকে মুম্বই থেকে গ্রেফতারও করেছে লালবাজার। সেই ঘটনা টেনে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য তুলে মঙ্গলবার তীব্র আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার বীরভূমের তারাপীঠের জনসভায় মমতা বলেন, “ভোট চলাকালীন বিজেপির এক গদ্দার বলল, বোমা ফাটাব। আরে মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে এত রাগ তো বোমা ফাটিয়ে মেরে দে! অভিষেককেও তো খুন করতে গিয়েছিলি। ধরে ফেলেছি আমরা।” মমতা আরও বলেন, “তার (অভিষেকের) বাড়ি পর্যন্ত রেকি করেছে। ফেসটাইমে ফোন করেছিল। বলেছে, আপকা সাথ বাত করনা চাহতে হ্যায়। দেখা করলেই গুলি করে দিত।’’ মমতার কথায়, ‘‘ওদের (বিজেপির) বিরুদ্ধে যারাই লড়াই করবে, হয় তাদের জেলে ঢোকাবে, না হয় খুন করবে।’’
প্রসঙ্গত, গত শনিবার শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, ‘‘সমানের সপ্তাহে এমন বোমা ফাটবে যে গোটা তৃণমূল বেসামাল হয়ে যাবে।’’ তবে শুভেন্দু সে দিন কোনও প্রসঙ্গ নির্দিষ্ট করেননি। সোমবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাই কোর্ট রায় দিয়েছে। যেখানে ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলের ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করে দিয়েছে আদালত। সেই রায়কে অনেকেই শুভেন্দুর ‘বোমা হুঁশিয়ারি’র সঙ্গে জুড়ে দেখাতে চেয়েছিলেন। তবে তৃণমূলের অনেকে এই প্রশ্নও তুলেছেন যে, আদালতের রায়ই যদি বোমা হয়, তা হলে তা শুভেন্দু আগে জানলেন কী করে? সেই প্রেক্ষাপটে সোমবার মমতাও ‘বিজেপির বিচারালয়’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিজেপির একটা কথায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি গিয়েছে। তাদের বলছে কি না আট বছরের মাইনে সুদ-সহ ফেরত দাও।’’
সোমবার সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। লালবাজারের তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, ওই ব্যক্তি অভিষেকের বাসভবন ‘রেকি’ করেছিলেন। অভিষেকের উপর হামলার ছক ছিল তাঁর। সেই প্রসঙ্গেই মঙ্গলবার মালদহ দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রে প্রচারে গিয়ে এক সভায় অভিষেক বলেন, ‘‘কত কিছুই তো করল! আমায় দমাতে পারেনি। মাথা নিচু করাতে পারেনি। ইডি, সিবিআই। আর এখন তো প্রাণে মারারও চক্রান্ত হচ্ছে।’’ ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল প্রার্থী মানুষের উদ্দেশে বলেন, ‘‘মানুষই আমার শক্তি। মানুষের আশীর্বাদ-দোয়ায় আমি লড়াই চালিয়ে যাব।’’
(আমাদের বিভিন্ন প্রতিবেদনে ‘রেকি’র পরিবর্তে ‘রেইকি’ লেখা হচ্ছিল। আনন্দবাজার অনলাইনের এক পাঠক এই ত্রুটির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। আমরা ত্রুটি সংশোধন করেছি। মনোযোগী পাঠককে ধন্যবাদ)