শরদ পওয়ারের। —ফাইল চিত্র।
ভাইপো অজিত পওয়ারের গোষ্ঠীকেই ‘এনসিপি’ (ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি) নাম এবং নির্বাচনী প্রতীক ‘ঘড়ি’ ব্যবহারের অধিকার দেওয়ার পর এ বার কাকা শরদ পওয়ারের দলকে ‘বিকল্পের সন্ধান’ দিল নির্বাচন কমিশন। বুধবার কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, শরদ গোষ্ঠীর নতুন নাম হবে ‘ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি-শরদচন্দ্র পওয়ার’। তবে দলের নির্বাচনী প্রতীক পরে বরাদ্দ করা হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।
শরদ গোষ্ঠীর তরফে বুধবারই কমিশনের কাছে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। তাতে নাম এবং প্রতীক হিসাবে তিনটি করে ‘পছন্দ’ জানানো হয় কমিশনকে। শরদ গোষ্ঠী সূত্রের খবর, নতুন দলের নাম হিসাবে ‘এনসিপি শরদ পওয়ার’, ‘মি রাষ্ট্রবাদী’ এবং ‘শরদ স্বাভিমানী’-র মধ্যে একটি চেয়েছিল এনসিপি প্রতিষ্ঠাতার গোষ্ঠী। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন প্রবীণ মরাঠা নেতার পুরো নামের সঙ্গে তাঁর প্রতিষ্ঠিত দলের নাম জুড়ে দিল।
নির্বাচনী প্রতীক হিসাবে শরদ গোষ্ঠী তিনটি পছন্দ জানিয়েছে কমিশনকে— ‘কাপ-প্লেট’, ‘সূর্যমুখী ফুল’ এবং ‘উদীয়মান সূর্য’। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন অজিত গোষ্ঠীকে ‘আসল এনসিপি’ বলে স্বীকৃতি দেওয়ার পরে শরদদের নতুন দলের নাম এবং প্রতীক সংক্রান্ত প্রস্তাব জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। তা মেনেই এই পদক্ষেপ।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালের জুন মাসে সনিয়া গান্ধীর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে কংগ্রেস ছেড়েছিলেন শরদ। গড়েছিলেন নতুন দল এনসিপি। আড়াই দশক পরে সেই দলেই তাঁর হাতছাড়া হল। যদিও কমিশনের এই সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ঘটনাচক্রে, গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত বালাসাহেব ঠাকরের পুত্র উদ্ধবের আবেদন খারিজ করে দিয়ে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের গোষ্ঠীকে দলের নাম এবং নির্বাচনী প্রতীক তিরধনুক ব্যবহারের অধিকার দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। শিন্ডের মতোই মহারাষ্ট্রের অন্যতম উপমুখ্যমন্ত্রী অজিতও এখন বিজেপির সহযোগী।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২ জুলাই এনসিপিতে পটপরিবর্তন মহারাষ্ট্র রাজনীতিতে বদলে দিয়েছে বেশ কয়েকটি সমীকরণ। অজিত-সহ ন’জন বিদ্রোহী এনসিপি বিধায়কের মন্ত্রিত্ব এবং ভাল দফতর লাভের পরে পরিষদীয় দলের অন্দরে ক্রমশ তাঁর শিবিরের পাল্লা ভারী হতে থাকে। সাংসদদের বড় অংশও তাঁর দিকে যান। এই পরিস্থিতিতে দলের উপর শরদের নিয়ন্ত্রণের দাবি মঙ্গলবার খারিজ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যা ‘মরাঠা নেতা’র কাছে বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।