Baranagar By-Election Sayantika Banerjee

নাকের বদলে নরুন, বাঁকুড়া বদলে বরাহনগর, অভিনেত্রী সায়ন্তিকার অভিমান ভঞ্জনে উপনির্বাচন-প্রলেপে তৃণমূল

বিধায়ক পদ থেকে তাপস রায়ের ইস্তফার কারণেই বরাহনগর কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে। বিজেপি ইতিমধ্যেই ওই কেন্দ্রে সজল ঘোষকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। সজলের বিরুদ্ধে সায়ন্তিকাকে প্রার্থী করল তৃণমূল।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৮:২৮
বরাহনগরে তৃণমূলের প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বরাহনগরে তৃণমূলের প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

তাঁর আশা ছিল, দল তাঁকে বাঁকুড়া লোকসভায় প্রার্থী করবে। প্রার্থী হতে না পেরে অভিমানের কথা প্রকাশ্যে বলেও ফেলেছিলেন অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তাঁর অভিমানের দাম পেলেন অভিনেত্রী। বাঁকুড়া লোকসভার বদলে তাঁকে বরাহনগর বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থী করল শাসক তৃণমূল। আগামী ১ জুন ওই আসনে ভোটগ্রহণ। ফল ঘোষণা লোকসভার ফল ঘোষণার দিন, ৪ জুন। পাশাপাশি ইদ্রিস আলির মৃত্যুর কারণে বিধায়কশূন্য ভগবানগোলাতে রেয়াত হোসেন সরকারকে উপনির্বাচনের প্রার্থী করেছে তৃণমূল।

Advertisement

অনেকেই বলছেন, ‘নাকের বদলে নরুন’-এর মতো শোনালেও এই প্রাপ্তিতে সায়ন্তিকার খুশিই হওয়া উচিত। আর যদি তিনি বরাহনগরে জিতে বিধায়ক হতে পারেন, তা হলে তো তাঁর পরিষদীয় রাজনীতিতে যাওয়ার স্বপ্নও পূরণ হয়ে যাবে। বিধায়ক পদ থেকে তাপস রায়ের ইস্তফার কারণে ওই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে। বিজেপি ইতিমধ্যেই বরাহনগর কেন্দ্রে সজল ঘোষকে প্রার্থী করেছে। সেই সজলের বিরুদ্ধেই সায়ন্তিকাকে প্রার্থী করল তৃণমূল। অনুষ্ঠানিক ভাবে নাম ঘোষণার আগেই অবশ্য বরাহনগরে রটে গিয়েছিল, সায়ন্তিকাকে প্রার্থী করা হচ্ছে। স্থানীয় স্তরে তৃণমূলের একটি অংশ তা নিয়ে মৃদুমন্দ ক্ষোভও দেখায়। সিঁথি, টবিন রোড, আলমবাজার-সহ বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার পড়ে, ‘আমরা রাজনৈতিক প্রার্থী চাই।’ কেন এমন পোস্টার? বরাহনগরের এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘২০২১ সালে বিজেপি এখানে পার্নো মিত্রকে প্রার্থী করেছিল। তখন আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলেছিলাম, সেলিব্রিটিকে ভোট দিলে তাঁকে আর পাওয়া যাবে না। এখন আমরা গিয়ে কী বলব? লোকে তো সেই কথাগুলো আমাদেরই বলবে!’’

গত ১০ মার্চ ব্রিগেডের সভা থেকে ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। বাঁকুড়ায় নাম ঘোষণা করা হয়েছিল অরূপ চক্রবর্তীর। সভা শেষের আগেই দেখা গিয়েছিল কানে ফোন নিয়ে মূল মঞ্চের সিঁড়ি দিয়ে নেমে ব্রিগেড ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন সায়ন্তিকা। তখন থেকেই তাঁকে নিয়ে মান-অভিমানের জল্পনা চলছিল। পরে অবশ্য তিনি দাবি করেছিলেন, ব্রিগেডের রোদে তাঁর শরীর খারাপ লাগছিল। তাই তিনি সে দিন মঞ্চ থেকে নেমে গিয়েছিলেন। তবে বাঁকুড়া লোকসভায় মনোনয়ন না-পেয়ে তাঁর যে অভিমান হয়েছিল, তা মেনে নিয়েছিলেন সায়ন্তিকা। জানিয়েছিলেন, দলের সঙ্গে তো তাঁর নিয়ত যোগাযোগ থাকে। দল তাঁকে লোকসভায় টিকিট না-দেওয়ার বিষয়টি জানিয়ে দিতে পারত। তিনি বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা আসনের জন্যই পরিশ্রম করেছিলেন বলেও জানিয়েছিলেন সায়ন্তিকা। তবে অভিমান হলেও তিনি দল ছাড়ার কথা ভাবেননি। তাঁর সেই মানভঞ্জনে এ বার উপনির্বাচনী প্রলেপ দিল তৃণমূল।

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বাঁকুড়া বিধানসভায় তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে লড়েছিলেন সায়ন্তিকা। কিন্তু বিজেপির কাছে তাঁকে হারতে হয়। তার পর থেকে ধারাবাহিক ভাবে বাঁকুড়ার কর্মসূচিতে যেতেন তিনি। কার্যত মাটি কামড়েই পড়েছিলেন। হতে পারে সেই কারণেই সায়ন্তিকার মধ্যে লোকসভায় টিকিট পাওয়ার বাসনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও লোকসভায় টিকিট পাননি সায়ন্তিকা।

বরাহনগরে তৃণমূলের প্রার্থী কে হবেন তা নিয়ে অনেক জল্পনা ছিল। এক প্রাক্তন আমলা এবং রাজ্যসভার এক প্রাক্তন সাংসদের নাম নিয়ে তৃণমূলের মধ্যেই আলোচনা ছিল। বরাহনগরের এক কাউন্সিলরের নাম নিয়েও আলোচনা ছিল স্থানীয় স্তরে। কিন্তু দেখা গেল সায়ন্তিকাকে সেখানে প্রার্থী করল শাসকদল।

আরও পড়ুন
Advertisement