কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কবীরশঙ্কর বোস। —ফাইল চিত্র।
ভোটের ময়দানে এক জন চতুর্থ বার সাংসদ হওয়ার লড়াইয়ে। অন্য জন, প্রথম বার লোকসভা ভোটের প্রার্থী। তৃণমূল এবং বিজেপি যযুধান দুই শিবিরের লোকসভা প্রার্থীর ফোনে কথোপকথন বলে দাবি করে একটি অডিয়ো বার্তা ছড়িয়ে পড়তেই হইচই শ্রীরামপুরে। যদিও হুগলির শ্রীরামপুর লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর প্রাক্তন জামাতা তথা বিজেপি প্রার্থী কবীরশঙ্কর বোস— দু’জনেই এই অডিয়ো ক্লিপ ভুয়ো বলে দাবি করেছেন। এ নিয়ে দু’জনেই আইনি পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
ভাইরাল হওয়া অডিয়ো ক্লিপটি একটি ফোনের কথোপকথনের রেকর্ডিং (এর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। সমাজমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, সেটি তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী কবীরের। সেই ফোনালাপ ঠিক এই রকম—
প্রথম জন (দাবি করা হচ্ছে কল্যাণ বলে): হ্যালো!
দ্বিতীয় জন (দাবি করা হচ্ছে কবীরশঙ্কর বলে): নমস্কার!
প্রথম জন: আমি কিন্তু খুব চাপে আছি। টিকিটটা নাও তুমি।
দ্বিতীয় জন: অনেক অসুবিধা আছে। চেষ্টা করছি।
প্রথম জন: যা দরকার করো। কিন্তু মালটা নিয়ে যাও।
দ্বিতীয় জন: কুড়ি পৌঁছে দিতে হবে।
প্রথম জন: সুকান্ত যেন না জানতে পারে।
দ্বিতীয় জন: চিন্তা নেই। জানতে পারবে না।
প্রথম জন: রাখো।
এই বার্তালাপ ছড়িয়ে পড়ার পর কল্যাণ এবং কবীরশঙ্কর দু’জনেই দাবি করেছেন, ওই কথোপকথন তাঁদের নয়। কল্যাণ ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছেন। কল্যাণের দাবি, ‘‘অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এটা তৈরি করা হয়েছে। যারা এই রকমের অডিয়ো ভাইরাল করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’’ আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি ফোনে বলেন, ‘‘এটা ফেক। আমাকে বদনাম করার জন্য এটা করা হয়েছে। আমি তিন বারের সাংসদ।’’ তৃণমূল প্রার্থী ইতিমধ্যে শ্রীরামপুরের রিটার্নিং অফিসার এবং চন্দননগর পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাতে ভাইরাল হওয়া অডিয়ো ক্লিপের লিঙ্কও দিয়েছেন।
প্রাক্তন শ্বশুরের সঙ্গে ফোনালাপের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিজেপি প্রার্থী কবীরশঙ্কর বলেন, ‘‘আমি আপনাদের মাধ্যমেই (সংবাদমাধ্যম) একটি অডিয়ো ক্লিপ শুনলাম। হাস্যকর ব্যাপার। পুরোপুরি ভুল এবং মিথ্যা। আমি নাকি তৃণমূলের প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এটা রাজনৈতিক ময়দান। চোখে চোখ রেখে, মাটি কামড়ে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে রাজনৈতিক লড়াই হবে। এটা পুরোপুরি বিরোধীদের অপপ্রচার।’’ কবীরও জানান, তিনি এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ করবেন বলেও জানাচ্ছেন বিজেপির আইনজীবী প্রার্থী। তিনি বলেন, ‘‘এর পুরোপুরি তদন্ত হোক। এই কাজ কার, তা বার করা হোক। এর শেষ দেখে ছাড়ব।’’