(বাঁ দিক থেকে) অখিলেশ যাদব, জয়ন্ত চৌধরি, অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
সংশয়ের আবহ তৈরি হয়েছিল গত বছরের জুন মাসে। পটনায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের ডাকা বিরোধী জোটের বৈঠকে ‘বিশেষ কারণ’ দেখিয়ে তাঁর অনুপস্থিতির পরে। বিরোধী জোট ছেড়ে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘হাত’ ধরেছেন নীতীশ। এ বার রাষ্ট্রীয় লোকদল (আরএলডি) প্রধান জয়ন্ত চৌধরিও বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-তে যোগ দিতে চলেছেন বলে জল্পনা।
উত্তরপ্রদেশে বিজেপির সহযোগী ‘সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টি’ (এসবিএসপি)-র প্রধান ওমপ্রকাশ রাজভর শুক্রবার দাবি করেছেন আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) আনুষ্ঠানিক ভাবে এনডিএ-তে শামিল হবেন প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধরি চরণ সিংহের পৌত্র ও প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজিত সিংহের পুত্র। বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, দু’টি আসনে নিমরাজি হয়েছেন জয়ন্ত। তবে শেষ পর্যন্ত পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের জাঠ নেতাকে গোটা তিনেক আসন ছাড়া হতে পারে।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি এবং মায়াবতীর বিএসপির সঙ্গে জোট বেঁধে তিনটি আসনে লড়েছিল আরএলডি। কিন্তু একটিতেও জিততে পারেনি। জয়ন্ত নিজে মথুরায় বিজেপির হেমা মালিনীর কাছে হেরে গিয়েছিলেন। কিন্তু এর পরে সমাজবাদী পার্টির সমর্থনে রাজ্যসভায় জিতে আসেন তিনি। ২০২২-এ উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে অখিলেশের সঙ্গে সমঝোতা করে ৩৩টি আসনে লড়ে ন’টিতে জিতেছিল আরএলডি। ঘটনাচক্রে, ২০২৯-এর লোকসভা ভোটে বিজেপি উত্তরপ্রদেশে যে ১৬টি আসনে হেরেছিল, তার ছ’টিই পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের।
গত বছর পটনা বৈঠকের পরে রাজ্যসভায় দিল্লির আমলাদের নিয়োগ সংক্রান্ত বিলে ভোটাভুটির সময় ফের জয়ন্ত গরহাজির ছিলেন। তার পরে জল্পনা ছড়ায়, বিজেপির সঙ্গে গোপনে দর কষাকষি করছেন তিনি। আসন্ন লোকসভা ভোটে জয়ন্তকে সাতটি আসন ছেড়ে দেবেন বলে কথা দিয়েছিলেন অখিলেশ। রাজনৈতিক মহলের খবর, এনডিএ শিবির থেকে তার কম আসন ছাড়ার বার্তা পেলেও ‘জয়ের সম্ভাবনা’ যাচাই করে এবং ভোটের পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্বের ‘টোপ গিলে’ বিজেপির হাত ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্সের প্রাক্তনী জয়ন্ত।
পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে জাঠ বলয়ের ভোটের অঙ্ক কষেই বিজেপি নেতৃত্ব জয়ন্তকে এনডিএ আনতে সক্রিয় বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের অনুমান। অতীতের ফলাফল বলছে, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে জাঠ ভোটের একটি বড় অংশ আরএলডির পাশে থাকে। আর জাঠ ভোটের অন্য অংশটি পায় বিজেপি। বিজেপি-আরএলডি জোট হলে জাঠ ভোটের সিংহভাগ পাবে এনডিএ। পাশাপাশি, ওই অঞ্চলের জনবিন্যাসের বড় অংশ অ-জাঠ দলিতরাও মায়াবতীর বিএসবির বদলে এই জোটকে বাছতে পারে। ওই ভোট সচরাচর আরএলডির ঝুলিতে যায় না। ফলে অখিলেশের তুলনায় বিজেপির জোটসঙ্গী হিসাবে ভোটে লড়লে জয়ের সম্ভাবনা বেশি জয়ন্তের দলের প্রার্থীদের।