বিজেপি সাংসদ লকেটের বিরোধিতা করে পোস্টার। — নিজস্ব চিত্র।
সামনেই লোকসভা ভোট। কে কোথায় প্রার্থী হবেন— তা নিয়ে স্থানীয় স্তরে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে হুগলি লোকসভায় জিতে সাংসদ হয়েছিলেন বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়। হুগলির সেই বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধেই এ বার পোস্টার পড়ল শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রে। সেই পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘‘কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে আবেদন, বহিরাগত পরিযায়ী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে শ্রীরামপুর লোকসভায় চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। তৃণমূলকে হারাতে শ্রীরামপুরের ভূমিপুত্র চাই।’’ এ কথার নীচে বন্ধনীতে লেখা, ‘‘দয়া করে কেউ আমাদের তৃণমূল বা কংগ্রেস বলবেন না, আমরা বিজেপি কর্মী।’’ শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের শেওড়াফুলি, বৈদ্যবাটি, শ্রীরামপুর-সহ একাধিক জায়গায় দেখা মিলেছে এমন পোস্টারের। আর এ নিয়েই শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূল-বিজেপি তরজা।
বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মোহন আদক বলেন, ‘‘লকেট চট্টোপাধ্যায় আবার হুগলি থেকে জিতে সাংসদ হবেন। তৃণমূলের নেতারা দূর্নীতিতে ডুবে আছেন। সে দিক থেকে নজর ঘোরাতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই পোস্টার দেওয়া হয়েছে। এ সব করে লাভ হবে না। বিজেপি ৪০০ আসন নিয়ে আবার সরকার গড়বে। নরেন্দ্র মোদী পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হবেন।’’
তৃণমূলের হুগলি জেলার সহ-সভাপতি বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, ‘‘শুনলাম, শ্রীরামপুরে লকেট চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে বিজেপির নাম দিয়ে পোস্টার পড়েছে। বাংলায় ৪২টাই তৃণমূল জিতবে, কোথাও পালিয়ে বাঁচা যাবে না। হুগলিতে দাঁড়ালে এ বার পাঁচ লাখ ভোটে হারবেন লকেট, তাই শ্রীরামপুর পালাচ্ছেন! ৪২টা আসনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী। আর শ্রীরামপুরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ালে লকেটকে বিজেপিই হারাবে।’’
লকেট হুগলি লোকসভার সাংসদ। কিন্তু তাঁকে নিয়ে হুগলি বিজেপির একটি অংশ বিরক্ত বলে জানা যাচ্ছে। পোস্টারে সেই ‘বিরক্তি’ হুগলি ছাড়িয়ে শ্রীরামপুরেও পৌঁছে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও জেলা বিজেপি নেতৃত্ব একে তৃণমূলের ষড়যন্ত্র বলেই উড়িয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু পাটিগণিত বলছে, গত বিধানসভা ভোটে নিজের লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রেই হেরে বসে আছে বিজেপি। সবক’টি তৃণমূলের দখলে। এই প্রেক্ষিতে আগামী লোকসভায় লকেটের জন্য হুগলি লোকসভা কতটা নিরাপদ রইল, সেই প্রশ্ন রয়েছে। যদিও এ বার হুগলির পাশের লোকসভা কেন্দ্র শ্রীরামপুরে লকেট-বিরোধী পোস্টার পড়ল।