মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
তাঁর কাছে খবর রয়েছে, কোচবিহারের তিন-চার জন পুলিশ আধিকারিক সঠিক ভাবে কাজ করছেন না। শুক্রবার দিনহাটার সভা থেকে সেই আধিকারিকদের উদ্দেশে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কোচবিহারের তৃণমূল প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বাসুনিয়ার সমর্থনে শুক্রবার সভা করেন মমতা। ১৯ এপ্রিল প্রথম দফাতে ভোটগ্রহণ এই কেন্দ্রে। মমতার অভিযোগ, বিজেপির প্রার্থী তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক বাইক বাহিনী নিয়ে এলাকায় ত্রাস তৈরি করছেন। কিন্তু প্রশাসন পদক্ষেপ করছে না। মমতা বলেন, ‘‘আমি সরি (দুঃখিত), প্রশাসন সব দেখেও চুপচাপ বসে থাকে। কিসের ভয়? চাকরি যাবে? ইলেকশন কমিশন সরিয়ে দেবে? তো দু’মাস বাদে কী করবেন? তার থেকে এখনই দিল্লি চলে যান না। কে বারণ করেছে!’’ এর পর সরাসরি সেই পুলিশ কর্তাদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘হয় দিল্লি যান, না হলে নিশীথের বাড়ি চলে যান। তা হলে আর আপনাদের আইনশৃঙ্খলা সামলাতে হবে না।’’
মমতা নিজেই রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী। তবে এখন তাঁর এক্তিয়ারের মধ্যে আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি নেই। কারণ নির্বাচন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই তা নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, পুলিশের একাংশকে মমতা বার্তা দিতে চেয়েছেন, দু’মাস বাদে যখন নির্বাচন কমিশনের হাতে আর আইনশৃঙ্খলা থাকবে না, তখন তিনিই সবটা দেখবেন। দিনহাটার সভায় মমতা বলেন, ‘‘কোচবিহারে যদি আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কোনও প্রবলেম (সমস্যা) হয়, আমি কিন্তু ছেড়ে কথা বলব না।’’
তৃণমূলনেত্রী স্পষ্টই বলেন, ‘‘সব পুলিশ খারাপ নয়। বেশির ভাগ পুলিশই নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেন, করছেন। কিন্তু তিন-চার জনের নাম আমার কাছে আছে। শুধু আমার কাছে কেন, সবাই তাঁদের কথা জানে।’’
কোচবিহারে প্রকাশ্য প্রচারের শেষ দিন ১৭ এপ্রিল বিকেলে। নির্ধারিত সময়ের পরে যাতে প্রচার না হয়, কোনও মিটিং-মিছিল না হয়, তা-ও সুনিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন মমতা। উল্লেখ্য, ১৭ এপ্রিলই এ বারের রামনবমী। যে কর্মসূচিকে নির্বাচনের আগে বিজেপি ব্যবহার করবে বলে তৃণমূলের নেতাদের একাংশের অনুমান। অনেকের মতে, সেই কারণেই হয়তো নির্ধারিত সময় শেষের পরে যাতে প্রচার না হয় সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন মমতা।
পাশাপাশি, দলের নেতাদেরও ঠান্ডা মাথায় ভোট করানোর পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। বিশেষ করে দিনহাটার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহের নাম করে মমতা মাথা ঠান্ডা রাখার পরামর্শ দেন। মমতা বলেন, ‘‘উদয়নকে বলব, বি কুল। কুল কুল-তৃণমূল। ঠান্ডা মাথায় নির্বাচন করতে হবে। ও (নিশীথ প্রামাণিক) তোমাকে গন্ডগোলে জড়িয়ে বিএসএফকে দিয়ে ভোটটা করিয়ে নেবে। ভুলেও সেটা করতে দিয়ো না। আগে থেকে নিজেকে তৈরি রাখো। শান্তি বজায় রাখো।’’