(বাঁ দিকে) কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
কোচবিহারে ভোটের প্রচারে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’দিন আগে বাংলায় এসেছিলেন শাহ। বালুরঘাটে বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থনে সভাও করেন। সেখানেই ভূপতিনগরে এনআইএর উপর হামলার ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করেন শাহ। আক্রমণকারীদের শাস্তির নিদানও দেন। তাঁর সেই মন্তব্য নিয়ে শুক্রবার তোপ দেগেছেন মমতা।
শাহ সে দিন ভূপতিনগর প্রসঙ্গে ‘উল্টো করে ঝুলিয়ে সিধে করা’র নিদান দিয়েছিলেন। বঙ্গবাসীকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেছিলেন, ‘‘সবাইকে উল্টো করে টাঙিয়ে সোজা করে দেওয়া হবে, আপনারা চিন্তা করবেন না।’’ সেই প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, ‘‘বাংলায় এসেছিলেন বড় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এসে বলেছেন, উল্টে ঝুলিয়ে রেখে দেব। আপনারাই বলুন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখে কি এ কথা শোভা পায়?’’
শাহের মন্তব্যের প্রসঙ্গেই সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে মমতার প্রশ্ন, ‘‘সংবাদমাধ্যমের বন্ধুরা কিছু বলবেন না? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, উল্টে ঝুলিয়ে দেবেন। কিছু বলবেন না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শাহ এমন করে বলছেন যেন ওঁরা ৫৪৩টির মধ্যে ১০৪৩টি আসন পেয়ে গিয়েছেন। আমি বলি, এত তাড়াহুড়ো কোরো না। খেলাটা এত সহজ নয়। আগে নিজের চেহারা আয়নায় দেখো।’’
শাহের বাংলা উচ্চারণ নিয়েও কোচবিহারের সভা থেকে কটাক্ষ করেছেন মমতা। বালুরঘাটকে শাহ ‘বেলুরঘাট’ বলেছেন বলে অভিযোগ। মমতা বলেন, ‘‘বালুরঘাটকে বলছে বেলুরঘাট। নামটাও জানে না।’’ শাহের এই উচ্চারণ নিয়ে বুধবার কটাক্ষ করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বাংলার কেন্দ্রের নামের উচ্চারণ ভুল করেছেন দেখিয়ে শাহ এবং বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বহিরাগত তকমাও দিয়েছিলেন তিনি। মমতাও সেই ইস্যু উস্কে দিলেন কোচবিহার থেকে।
২০২২ সালে পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে একটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। ২০২৩ সালের গোড়ায় হাই কোর্ট এনআইএকে বিস্ফোরণের তদন্ত করতে বলে। সেই মামলায় গত শনিবার ভূপতিনগরে দুই অভিযুক্তকে তুলে আনতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে এনআইএ। এনআইএর গাড়ির কাচ ভাঙা হয়। আহত হন এক এনআইএ আধিকারিক। তৃণমূলের অভিযোগ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিজেপি এনআইএকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের ভোট সংগঠকদের গ্রেফতার করাচ্ছে। সে প্রসঙ্গেই রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে পাল্টা তোপ দাগেন শাহ। বুধবার ভোটের প্রচারে তিনি প্রথম বাংলায় এসেছিলেন। বালুরঘাটে সভা করেছেন সুকান্ত মজুমদার, খগেন মুর্মুদের সমর্থনে। তাঁর সভাকে কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।