মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
বালুরঘাটের মঞ্চে ভূপতিনগর নিয়ে এনআইএকে আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘‘ওখানে মহিলারা হামলা করেননি। আসলে হামলা করেছে এনআইএ। মধ্যরাতে গিয়ে যদি মহিলাদের বাড়িতে অত্যাচার করে, তবে মহিলারা কি হাতে শাঁখা, বালা পরে বসে থাকবে? মাথায় ওড়না দিয়ে বসে থাকবে? তারা নিজেদের ইজ্জত বাঁচাবে না।’’
মমতা এ-ও বলেছেন, ভূপতিনগরে মাঝরাতে এনআইএর অভিযান আসলে করানো হয়েছে বিজেপিকে ভোটে সাহায্য করার জন্য। মমতা বলেন, ‘‘কবে কোথায় মেদিনীপুরে একটা চকোলেট বোমা ফেটেছে, তার তদন্ত করতে এই ভোটের মুখে মাঝরাতে ছুটে আসতে হল এনআইএকে?’’
এ প্রসঙ্গে ভারতের নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মমতা বলেন, ‘‘আমরা বিজেপির কমিশন চাই না। আমরা নিরপেক্ষ কমিশন চাই।’’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করিয়ে ভোটের দখল নেওয়ার অভিযোগও করেছেন ক্ষুব্ধ মমতা। তিনি বলেন, ‘‘ভোটের আগে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা চলবে না। দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে গ্রেফতার করা চলবে না।’’ এমনকি, প্রধানমন্ত্রীকে ‘গায়ের জোরে, বদমাইশি করে’ ভোট দখল করার অভিযোগও করেন মমতা।
সুকান্ত এবং শুভেন্দুকে এক বন্ধনীতে রেখে আক্রমণ মমতার। বললেন, ‘‘আপনারা বাংলার টাকা বন্ধ করেছেন, আপনারা বাংলার গদ্দার। আপনারা বাংলার কুলাঙ্গার। আপনারা বাংলার ভাল চান না। আপনারা উত্তরবঙ্গের ভাল চান না। আপনারা দক্ষিণবঙ্গেরও ভাল চান না।’’
সুকান্তের লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে তাঁকে চ্যালেঞ্জ করলেন মমতা। বললেন, ‘‘চ্যালেঞ্জ করছি সুকান্তবাবুকে। ভোট দেওয়ার আগে বলেননি আপনি আর গদ্দার, বাংলাকে ১০০ দিনের টাকা দেওয়া যাবে না? বাংলার বাড়ি দেওয়া যাবে না? রাস্তা দেওয়া যাবে না? সারি-সারনা ধর্ম নিয়ে কখনও কথা বলেছেন?’’
মমতা বললেন, ‘‘আমার গ্যারান্টি মানুষ। আমার গ্যারান্টি মা মাটি মানুষের গ্যারান্টি।’’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গায়ের জোরে ভোট করাচ্ছেন বলে অভিযোগ করলেন মমতা। বললেন, ‘‘মোদী জোর করে ভোট করে, এজেন্সি দিয়ে ভোট করে, গ্রেফতার করে ভোট করে, গ্যারান্টির নামে এনআরসি করে, বদমাইশি করে, নির্বাচন দখল করে।’’
বালুরঘাটে নাম না করে সুকান্ত এবং শুভেন্দুকে আক্রমণ করলেন মমতা। বললেন, ‘‘আপনাদের এখানে ওই কুসান্তবাবু আছেন, আর ও দিকে আছে গদ্দার। এরা মনে করে, যা বলবে তা-ই করতে হবে। গায়ের জোরে চালাবে।’’
বিজেপিকে আক্রমণ করে মমতা বললেন, ‘‘ক্ষমতা থাকলে গণতন্ত্রের লড়াই করে জেতো। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করবে না। দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে গ্রেফতার করবে না। বিরোধী দলের নেতাদের গ্রেফতার করবে না।’’
মমতা বললেন, ‘‘ভোটের আগে তৃণমূলের সমস্ত এজেন্টদের গ্রেফতার করতে হবে। নেতাদের গ্রেফতার করতে হবে? আমরা নিরপেক্ষ কমিশন চাই। এই বিজেপির কমিশন চাই না।’’
ভূপতিনগরে এনআইএর উপরে হামলা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানালেন মমতা। বললেন, ‘‘ওখানে মহিলারা হামলা করেননি। হামলা করেছে এনআইএ। মধ্যরাতে যদি মহিলাদের বাড়িতে অত্যাচার করে, তবে মহিলারা কি হাতে শাঁখা, বালা পরে বসে থাকবে? মাথায় ওড়না দিয়ে বসে থাকবে? তারা নিজেদের ইজ্জত বাঁচাবে না।’’
মমতা বললেন, ‘‘লোডশেডিং করিয়ে ওরা বাক্স দখল করে, ভাল করে পাহারা দেবেন।’’
মমতা বললেন, ‘‘গদ্দারেরা জানে হারবে, তাই কোথায় কবে মেদিনীপুরে চকোলেট বোমা ফেটেছিল, তাই বাড়ি বাড়ি এনআইএ ঢুকিয়ে দিয়েছে।’’
বালুরঘাটে আগের বারের জয়ী সাংসদ তথা বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। মমতা বললেন, ‘‘তপনে আগেও এসেছিলাম। এখানে আগে আপনারা আমাকে জিতিয়েছেন। কিন্তু প্রার্থী অন্য দলে চলে যান। হেরে যান।’’
উত্তরবঙ্গে মমতার প্রচার শুরু হয়েছিল কোচবিহার থেকে। সেখান থেকে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি হয়ে শনিবার মমতা পৌঁছলেন বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তপনে।