গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রধান ফারুক আবদুল্লা এবং তাঁর পুত্র ওমর গোপনে দেখা করেছেন বলে দাবি করলেন গুলাম নবি আজাদ। ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা আজাদের দাবি, জম্মু ও কাশ্মীরের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পিতা-পুত্র আমজনতার নজর এড়াতেই রাতে গোপনে বৈঠক করেছেন মোদীর সঙ্গে।
ঘটনাচক্রে আজাদও জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। ২০২২ সালের অগস্টে কংগ্রেস ছাড়ার পর থেকে মোদী সঙ্গে তাঁর সমীকরণ ‘মসৃণ’ বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মত। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘আবদুল্লারা দ্বিচারিতার রাজনীতি করেন। এঁরা শ্রীনগরে এক কথা বলেন, জম্মুতে অন্য কিছু এবং দিল্লিতে অন্য কিছু।’’ তাঁর দাবি, ২০১৯-এর ৩ অগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের দু’দিন আগে গোপনে মোদী-শাহের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন আবদুল্লারা। গত বছরের জুন থেকে বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’য় থাকলেও চলতি মাসে ফারুক জানিয়েছিলেন, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটে না গিয়ে লোকসভা নির্বাচনে নিজেদের যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাঁর দল।
ওমরও সম্প্রতি বলেছিলেন, ‘‘লোকসভা ভোটে মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি ৪০০ আসনে জিততে পারে।’’ লোকসভা ভোটের সঙ্গেই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা ভোট হতে পারে বলে জল্পনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আজাদের মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, রাহুল গান্ধীকে তুলোধনা করে গত অগস্টে কংগ্রেস ছেড়েছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আজাদ। অনুগামীদের নিয়ে তৈরি করেছিলেন ‘ডেমোক্র্যাটিক আজাদ পার্টি’। যদিও ইতিমধ্যেই তাঁর অনুগামীদের বড় অংশ কংগ্রেসে ফিরে গিয়েছেন। সম্প্রতি একাধিক খবরে দাবি করা হয়, আজাদেরও কংগ্রেসে ফেরার রাস্তা তৈরি হচ্ছে। চলছে আলোচনা। এ ব্যাপারে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অখিলেশ প্রতাপ সিংহ, ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা এবং অম্বিকা সোনির মতো প্রবীণ নেতাদের।
কংগ্রেসে গান্ধী পরিবারের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা বিক্ষুব্ধ জি-২৩ গোষ্ঠীর অন্যতম মুখ ছিলেন আজাদ। অখিলেশ এবং ভূপেন্দ্রও ছিলেন জি-২৩-এ। অন্য দিকে, একদা ন্যাশনাল কনফারেন্স-কংগ্রেসের জোট থাকলেও আজাদের সঙ্গে আবদুল্লা পরিবারের সম্পর্ক কখনও ঘনিষ্ঠ ছিল না। ঘটনাচক্রে, কাশ্মীর উপত্যকায় ন্যাশনাল কনফারেন্সের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী, আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির দল পিডিপি-ও রয়েছে ‘ইন্ডিয়া’য়। কাশ্মীর উপত্যকার তিনটি লোকসভা আসন (শ্রীনগর, বারামুলা এবং অনন্তনাগ) ঘিরে ইতিমধ্যেই ‘ইন্ডিয়া’র অন্দরে দু’দলের টানাপড়েন শুরু হয়েছে বলে একটি সূত্রের খবর।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের সহযোগী হিসাবে লড়ে ওই তিনটি আসনেই জিতেছিলেন ফারুক-ওমরের দলের প্রার্থীরা। কিন্তু এ বার মেহবুবা কোনও অবস্থাতেই তাঁর প্রাক্তন লোকসভা কেন্দ্র অনন্তনাগের দাবি ছাড়তে রাজি নন বলে ওই সূত্রের দাবি। এই পরিস্থিতে উপত্যকায় কংগ্রেস-পিডিপি সমঝোতা হলে আজাদ তাতে যোগ দিতে পারেন বলেন জল্পনা তৈরি হয়েছে। যদি