—প্রতীকী ছবি।
বামফ্রন্টের বৈঠকে বসার কথা ছিল মঙ্গলবার। শরিকদলগুলি এমনটাই জানত। অথচ, সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি এবং সিপিআই জানে না যে, মঙ্গলবার আদৌ বামেদের বৈঠক হবে কি না! বামফ্রন্টের পরবর্তী বৈঠকের দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। কারণ, এর পর এমন কয়েকটি লোকসভা আসনে বামফ্রন্টকে প্রার্থী ঘোষণা করতে হবে, যেগুলি নিয়ে জোটসঙ্গী আইএসএফ এবং কংগ্রেস ইতিমধ্যেই দাবিদাওয়া জানিয়ে রেখেছে।
আইএসএফ আদৌ বাম-কংগ্রেস জোটে শামিল হবে কি না, স্পষ্ট নয়। এ-ও স্পষ্ট নয় যে, বামফ্রন্টের শরিক দল নমনীয় হবে কি না! সোমবার রাতে আনন্দবাজার অনলাইনকে রাজ্য ফওয়ার্ড ব্লকের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব জানিয়েছেন, তাঁরা পুরুলিয়া আসনে প্রার্থী দেবেন। ইতিমধ্যে পুরুলিয়া আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে কংগ্রেস। তারা প্রার্থী করেছে প্রবীণ নেতা নেপাল মাহাতোকে। বহু বছর ধরে পুরুলিয়া লোকসভা আসনে বামফ্রন্টের শরিক হিসাবে লড়াই করে ফরওয়ার্ড ব্লক। এ বার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই আসন তাদের ছাড়তে বলা হয়েছিল। অনুরোধ করেছিল খোদ সিপিএম। এর মধ্যে কোচবিহারে ফরওয়ার্ড ব্লকের ঘোষিত আসনেও প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। তার ফলে হেমন্ত বসু ভবন (ফরওয়ার্ড ব্লকের সদর দফতর) আরও আগ্রাসী হয়েছে।
অন্য দিকে, বামফ্রন্টের আর এক শরিক সিপিআই-ও খুশি নয় সিপিএমের ভূমিকায়। দলের প্রথম সারির এক নেতা বলেন, ‘‘সিপিএম এখন বাম শরিকদের ছেড়ে কংগ্রেস, আইএসএফকে বেশি তেল দিচ্ছে। এটা ভাবতেও পারি না।’’
বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা না-হওয়ায় বাম এবং কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। যদিও নেতাদের বক্তব্য, সাত দফায় ভোট হচ্ছে। এখনও অনেক সময় বাকি। প্রার্থীর নাম ঘোষণারও সময় থাকছে। কিন্তু বাম কর্মীরা গ্রামের বাস্তবতা দেখে বুঝতে পারছেন, তাঁরা ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছেন। কারণ, প্রতিপক্ষেরা প্রচারে এগিয়ে গেলেও তাঁরা প্রার্থীদের নামই জানেন না। কর্মীদের আক্ষেপ, নেতৃত্ব উপরতলার পাটিগণিত হিসাব করছেন। মাটির কথা জানেন না। ফলে বামফ্রন্টের মধ্যে যে কাঁটা ছিল, তা রয়েই গিয়েছে। এই কাঁটা কি আদৌ সরবে? প্রশ্ন বামেদের অন্দরেই।