Lok Sabha Election 2024

মমতা হাঁটবেন বলে ভোল বদল কিছু পথের, বাকি রাস্তা তিমিরেই 

মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথে কোনও রকম দুর্ঘটনা এড়াতে সেই সব রাস্তায় স্পিড ব্রেকারও বসানো হচ্ছে। এ হেন উদ্যোগ দেখে স্থানীয় মহলে অনেকেরই প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথের বাইরে থাকছে যে সব রাস্তা, সেগুলির হাল কবে ফিরবে?

Advertisement
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২৪ ০৬:১৯
চটজলদি: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসবেন, তাই তড়িঘড়ি হচ্ছে রাস্তা সারানোর কাজ। মঙ্গলবার কেষ্টপুরের হানাপাড়ায়।

চটজলদি: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসবেন, তাই তড়িঘড়ি হচ্ছে রাস্তা সারানোর কাজ। মঙ্গলবার কেষ্টপুরের হানাপাড়ায়। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।

লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষে আগামী শনিবার বিধাননগর পুরসভা এলাকার কেষ্টপুর দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোড-শো হওয়ার কথা। আর তারই কল্যাণে রাতারাতি সেখানকার ২৪, ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু রাস্তার ভোল বদলের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এমনকি, মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথে কোনও রকম দুর্ঘটনা এড়াতে সেই সব রাস্তায় স্পিড ব্রেকারও বসানো হচ্ছে। এ হেন উদ্যোগ দেখে স্থানীয় মহলে অনেকেরই প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথের বাইরে থাকছে যে সব রাস্তা, সেগুলির হাল কবে ফিরবে?

Advertisement

বিধাননগর পুর এলাকার বিভিন্ন রাস্তার বেহাল দশা অনেক দিন ধরেই। গাড়ি চলাচলের রাস্তাগুলি মোটামুটি সারানো হলেও ব্লক কিংবা পাড়ার ভিতরের রাস্তার একেবারেই বেহাল দশা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অন্তত তেমনই অভিযোগ। সূত্রের খবর, আগামী শনিবার সল্টলেকের বৈশাখী থেকে পদযাত্রা শুরু করে কেষ্টপুরের ঘোষপাড়া, বারোয়ারিতলা, মাঝেরপাড়ার মতো এলাকা দিয়ে যাওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। তাই সেই কর্মসূচির আগে ওই সমস্ত রাস্তার হাল ফেরাতে তৎপর হয়েছে বিধাননগর পুরসভা। স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার ওই এলাকায় পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তৃণমূলের এক বড় মাপের নেতা। তিনি রাস্তার বেহাল দশা, তারের জটে হেলে থাকা বাতিস্তম্ভ দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পুরসভার লোকজন ও স্থানীয় পুরপ্রতিনিধিদের তিনি জানান, দ্রুত ওই এলাকার ভোল বদলাতে হবে। না-হলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বকুনি খাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে সকলেরই।

দু’বছর আগে সল্টলেকের এফডি ব্লকে দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে যাওয়ার পথে কোনও ভাবে কটু গন্ধ তাঁর নাকে আসে। তাতে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এমতাবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীকে যাতে কোনও ভাবেই ভাঙাচোরা রাস্তায় হাঁটতে না হয়, তার জন্য কেষ্টপুর মেন রোডের কিছুটা অংশ, বারোয়ারিতলা, ঘোষপাড়া, মাঝেরপাড়ার মতো এলাকায় রাস্তার হাল ফেরানোর কাজ শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার ওই সমস্ত এলাকায় ঘুরে দেখা গেল, রাস্তার পাশেই জড়ো করে রাখা হয়েছে পাথরকুচি, পিচের ড্রাম। রাস্তায় ঝাঁট দেওয়া চলছে। স্থানীয়েরা জানান, রাতের দিকে কাজ হচ্ছে। হানাপাড়া অঞ্চলে চলছে রাস্তার ফুটপাত ভাঙার কাজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক যুবকের কথায়, ‘‘রাস্তার উপরের স্তর উঠে গিয়েছে বহু দিন। ভেঙেচুরে পড়ে রয়েছে। বিশেষত, ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে। যেই মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রার কর্মসূচি ঠিক হয়েছে, তখনই রাস্তা ঠিক করার কথা মনে পড়েছে পুরসভার। অনেকে মজা করে তৃণমূলের নেতাদের বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে যেন তাঁদের পাড়া দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তাতে যদি বাকি রাস্তার হাল ফেরে।’’

যদিও এ নিয়ে মুখে কার্যত কুলুপ এঁটেছেন বিধাননগর পুরসভার কর্তারা। এমনকি, কেষ্টপুরের ওই সমস্ত ঘিঞ্জি এলাকা দিয়ে কেন মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রার আয়োজন করা হচ্ছে, তা নিয়েও পুরপ্রতিনিধিদের একাংশের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) অনিতা মণ্ডল বলেন, ‘‘অনেক রাস্তারই কিন্তু কাজের ওয়ার্ক অর্ডার বেরিয়ে গিয়েছে। ঘটনাচক্রে, মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রা যে হেতু ওই সব এলাকা দিয়েই হতে চলেছে, তার জন্যই ওই সব রাস্তার কাজ আগে করা হচ্ছে। কারণ, ওঁর নিরাপত্তার বিষয়টি সবার আগে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement