বিষ্ণপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ (বাঁ দিকে)। তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
ভোটের প্রচারে গিয়ে তৃণমূলের ‘চোখ উপড়ে’ নেওয়ার হুমকি দিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন বিষ্ণুপুরে বিজেপির প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। সোমবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়ার জয়পুর ব্লকের ময়নাপুর গ্রামে প্রচারে যান সৌমিত্র। সেখানে দলীয় কর্মীদের নিয়ে সভায় তিনি বলেন, ‘‘আপনারা কেউ ভয় পাবেন না। তৃণমূলের কেউ যদি কিছু করতে যায় তা হলে আমি চোখ উপড়ে নেব। সেই ক্ষমতা আমি রাখি।’’ এই ধরনের কথা বলে আসলে তিনি প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিষ্ণুপুরের তৃণমূল প্রার্থী তথা সৌমিত্রের প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল।
রবিবার কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে তৃণমূলের ‘জনগর্জন সভা’ থেকে বিষ্ণুপুরের প্রার্থী হিসাবে ঘোষিত হয় সৌমিত্রের প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতার নাম। নাম ঘোষণার পরে প্রাক্তন স্বামী-স্ত্রী নিজেদের শিবিরের কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন প্রচারে। সোমবার বিকালে সুজাতা যখন জয়পুরে দলীয় কর্মীদের নিয়ে মিছিল করে প্রচার সারছেন, তখন জয়পুর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ময়নাপুর গ্রামে দলের কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র। প্রসঙ্গত, এই ময়নাপুর থেকেই পঞ্চায়েত ভোটে জয়লাভ করেছিলেন সুজাতা। বক্তৃতা করতে গিয়ে সৌমিত্রের মুখে ঘুরেফিরে আসে সন্দেশখালি প্রসঙ্গ। বলেন, ‘‘ভয় খাবেন না আপনারা। আপনাদের জন্য আমি আমার জীবন লড়িয়ে দেব। ২০১৯ সালে সারা রাজ্যে লড়াই করেছি। এখন তো আমাদের বিধায়ক, সাংসদ আছে। তৃণমূল যদি কিছু করতে যায়, তা হলে চোখ উপড়ে নেব। সে ক্ষমতা আমি রাখি। এই কথাটা আমি বলে দিয়ে গেলাম।’’ পরে নিজের বক্তব্যের সমর্থনে সৌমিত্র বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোতুলপুর এবং ইন্দাস বিধানসভায় তিন লক্ষ মানুষ ভোট দিতে পারেননি। মানুষ ছেড়ে দেবেন না। কয়েক জন এই এলাকায় নাচানাচি করছে। তৃণমূলের কেউ যদি আমাদের কর্মীদের সামান্য আঘাত করে, তা হলে তার চোখ উপড়ে নেওয়ার মতোই অবস্থা হবে।’’
সৌমিত্রের এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী তথা বিষ্ণুপুরের তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা। তাঁর মতে, এই ধরনের কথা বলা আসলে সৌমিত্রের অত্যাচারী মনোভাবেরই বহিঃপ্রকাশ। সৌমিত্রের প্রাক্তন ঘরনি বলেন, ‘‘চোখ উপড়ে নেওয়া, মাথা কেটে নেওয়া, হাত-পা ভেঙে দেওয়া ছাড়া তিনি আর কী করতে পারেন আমার জানা নেই। এই ধরনের কথা বলার অর্থ মানুষকে সরাসরি প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া। এক সময় আমাকেও দিনের পর দিন একই হুমকি তিনি দিয়েছেন। প্রাণভয়ে বেরিয়ে এসেছিলাম। তাঁর ভাষাবোধ এবং রুচি দেখে মানুষই বিচার করবেন তাঁর জনপ্রতিনিধি থাকা উচিত না অনুচিত।’’