Bishnu Prasad Sharma

পদ্মফুলে ‘সেফটি পিন’ ফোটাতে চান পদ্মেরই বিধায়ক বিষ্ণু, দার্জিলিঙে লড়াই রাজু বিস্তার বিরুদ্ধে

একটা সময় পর্যন্ত বিজেপি নেতৃত্ব চেয়েছিলেন আলোচনার মাধ্যমে বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মার সঙ্গে তৈরি হওয়া সমস্যার সমাধান করতে। কিন্তু নিজের দাবিতে অনড় বিজেপি বিধায়ক কারও কথা মানতে চাননি।

Advertisement
অমিত রায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৪ ১১:৫৬
BJP MLA Bishnu Prasad Sharma will fight against Raju Bista on safety pin symbol

(বাঁ দিকে) রাজু বিস্তা। বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

পূর্ব ঘোষণা মত দার্জিলিঙে বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। এ বার লোকসভা নির্বাচনে পাহাড়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতীকও পেয়ে গেলেন বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। দার্জিলিং লোকসভায় তিনি লড়াই করবেন ‘সেফটি পিন’ প্রতীক নিয়ে। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ভোট হবে দার্জিলিং লোকসভায়। তাই প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই জোরদার প্রচারে নামার কৌশল ঠিক করে ফেলেছেন তিনি। বিজেপি নেতৃত্ব তাঁর ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। দলের তরফ থেকে সেই বার্তাও দেওয়া হয়েছিল কার্শিয়াঙের বিধায়ককে। বরাবর গোর্খাল্যান্ড এবং দার্জিলিঙের জন্য ভূমিপুত্র সাংসদের দাবি করা বিষ্ণুপ্রসাদ দলের নির্দেশকে পাত্তা দিতে চাননি। আর এ বার সরাসরি বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদের বিরুদ্ধেই ভোটে দাঁড়িয়ে যুদ্ধঘোষণা করেছেন তিনি। মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়ে যাওয়ায় আর ভোটযুদ্ধ থেকে সরে দাঁড়ানো সম্ভব নয় বিষ্ণুপ্রসাদের পক্ষে। তাই রণনীতি মেনে বিজেপিকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে নারাজ বিষ্ণুপ্রসাদ।

Advertisement

নিজের সেফটি পিন প্রতীক পাওয়াকে ইঙ্গিতবাহী হিসেবে ধরছেন এই বিদ্রোহী বিজেপি বিধায়ক। তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “সেফটি পিন দিয়ে অনেক কিছুই জোড়া যায়। আবার সেই সেফটি পিন দিয়ে হুলের মতো ফোটানো যায়। আবার একটি সেফটি পিনের সঙ্গে অন্য সেফটি পিনকে যুক্ত করে মালাও তৈরি করা যায়। আমি সেফটি পিন দিয়ে দার্জিলিংকে এক সূত্রে গাঁথতে চাই।” বিষ্ণুপ্রসাদ আরও বলেছেন, “আমাকে রাজনীতিতে আনা হয়েছিল পৃথক রাজ্যের আশ্বাস দিয়ে। সেই আশ্বাস পূরণ হয়নি, আমি আমার পাহাড়ের মানুষের কাছে দায়বদ্ধ। গত তিন বার লোকসভা নির্বাচনে আমরা পাহাড়ের মানুষ আনসেফ জ়োনে ছিলাম। এ বার সেফটি পিন প্রতীক নিয়ে আমরা সেফ জ়োনে রয়েছি। আমার ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের সমর্থন রয়েছে। আমাকে লড়াই করতেই হবে, পৃথক রাজ্যের জন্য, পাহাড়ের মানুষের অধিকারের জন্য।”

একটা সময় পর্যন্ত রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব চেয়েছিলেন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিষ্ণুপ্রসাদের সঙ্গে তৈরি হওয়া সমস্যার সমাধান করতে। কিন্তু নিজের দাবিতে অনড় বিজেপি বিধায়ক কারও কথা মানতে চাননি। তাই দলের তরফ থেকে আপাতত সব রকম আলাপ- আলোচনার দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিষ্ণুপ্রসাদের জন্য। দলের তরফে যাঁদের বিষ্ণুপ্রসাদের সঙ্গে কথা বলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁদেরও আলোচনা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি পরিষদীয় দল। তাদের কথায়, “বিষ্ণুপ্রসাদের বিদ্রোহ করুন, তাতে আপত্তি নেই। কিন্তু বিদ্রোহ করা এবং লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে মনোনয়ন দাখিল করার আগে তাঁর বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া উচিত ছিল। কারণ, বিজেপি বিধায়ক হিসাবে সুযোগ-সুবিধা নেওয়া এবং দলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ভোটে দাঁড়ানো, দু’টি বিষয় একসঙ্গে হতে পারে না।” আপাতত দলীয় বিধায়কের সব পদক্ষেপের উপর নজর রেখে চলেছে বিজেপি।

আরও পড়ুন
Advertisement