Lok Sabha Election 2024

সন্দেশখালিতে প্রচার শুরু বিজেপি প্রার্থী রেখার, শাহজাহানের গ্রামে মিছিল করে শক্তি প্রদর্শনে তৃণমূল

বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র যে দিন সন্দেশখালিতে নিজের গ্রামে ঢুকলেন, সে দিন তৃণমূল মিছিল করল শাহজাহানের গ্রাম সরবেড়িয়ায়। দুই প্রার্থীই ঝাঁপিয়েছেন সন্দেশখালির মন জিততে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৪ ১৪:১৩
বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র।

বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র। — নিজস্ব চিত্র।

প্রার্থিপদ ঘোষণার পরে বুধবার সকালে প্রথম বার নিজের গাঁয়ে ফিরলেন বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘শক্তিস্বরূপা’ রেখা পাত্র। শঙ্খ বাজিয়ে, উলুধ্বনি দিয়ে রেখাকে সন্দেশখালিতে স্বাগত জানান গ্রামবাসীদের একটি অংশ। ধামাখালির কাছে একটি কালীমন্দিরে রেখা পুজো দেন। তার পর কথা বলেন গ্রামবাসীদের সঙ্গে। বসে নেই তৃণমূলও। সন্দেশখালির ‘বাঘ’ বর্তমানে জেলবন্দি শাহজাহানের গ্রাম সরবেড়িয়ায় হাজি নুরুলের সমর্থনে মিছিল করল তৃণমূল। যে মিছিলে ভিড় হয়েছিল চোখে পড়ার মতো।

Advertisement

সন্দেশখালির আন্দোলনের ‘মুখ’ রেখা যে দিন গাঁয়ে ঢুকলেন, সে দিনই সরবেড়িয়া গ্রামে প্রার্থীর সমর্থনে মিছিল করল তৃণমূল। সব মিলিয়ে জমে উঠেছে বসিরহাট কেন্দ্রে ভোটের লড়াই। তৃণমূল এ বার তারকা অভিনেত্রী নুসরত জাহানকে সরিয়ে ফিরিয়ে এনেছে হাজি নুরুলকে। এই কেন্দ্রেরই একদা সাংসদ হাজির কাছে ভোটের লড়াই নতুন কিছু নয়, কিন্তু তাঁর লড়াই যে রেখার সঙ্গে তিনি এত দিন ছিলেন গৃহবধূ। কোলে বাচ্চা নিয়ে সন্দেশখালিতে আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। আর তার জেরেই বিজেপি তাঁকে বসিরহাটের প্রার্থী করে। নিজে রেখাকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। বুধবার সকাল থেকে সম্ভবত শুরু হল রেখার জীবনের সবচেয়ে কঠিন লড়াই। সকালে তিনি সন্দেশখালিতে পৌঁছতেই শঙ্খধ্বনি এবং উলুধ্বনি দিতে থাকেন গ্রামের মহিলাদের একটি অংশ। রেখার নাম ঘোষণা হওয়ার পরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন স্থানীয় কয়েক জন মহিলা। বুধবার সকালে তাঁদেরই দেখা গেল রেখাকে স্বাগত জানানোর দলের একেবারে পুরোভাগে।

সন্দেশখালির ফেরিঘাটে নেমে রেখা প্রথমে যান ধামাখালির কাছে একটি কালীমন্দিরে। সেখানে পুজো দেন। তার পর নেমে পড়েন জনসংযোগে। রেখাকে দেখে চোখের জল বাঁধ মানেনি তাঁর পরিজনদের। প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেন রেখা। তার পর উঠে বসেন একটি টোটোয়। ভিড়ের চাপে টোটো আটকে যায়। রেখা যেখানেই গিয়েছেন, সঙ্গে সঙ্গে গিয়েছেন গ্রামের মহিলাদের একটি অংশ। তারা ফুলের পাপড়ি ছুড়ে স্বাগত জানিয়েছেন রেখাকে। এলাকার বিভিন্ন দেওয়াল ইতিমধ্যেই রেখার নামে রাঙিয়ে ফেলেছে বিজেপি। গ্রামের এক প্রতিবাদী কাজল সর্দার বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। প্রধানমন্ত্রীকে আমরা পাশে পেয়েছি। রেখা পাত্রর সঙ্গে আমি প্রথম দিন থেকেই আন্দোলনে আছি। আগামী দিনেও থাকব। প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটাই আবেদন, তিনি যেন আমাদের হাত ছেড়ে না দেন। তিনি যেন আমাদের পাশে থাকেন, আমাদের হাত ধরে।’’

শাহজাহানের গ্রামে মিছিল করল তৃণমূল।

শাহজাহানের গ্রামে মিছিল করল তৃণমূল। — নিজস্ব চিত্র।

অন্য দিকে, সন্দেশখালির সরবেড়িয়া গ্রামে বাড়ি তৃণমূল নেতা জেলবন্দি শাহজাহানের। রেখা যে দিন গাঁয়ে ঢুকলেন, সে দিন তৃণমূল বড় মিছিল করল শাহজাহানের গ্রামে। বুধবার সকালে সরবেড়িয়া বাজারে বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুলের সমর্থনে মিছিল হয়। তাতে জনসমাগম ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রসঙ্গত, শাহজাহানের গ্রেফতারির পর এই প্রথম সরবেড়িয়া অঞ্চলে মিছিল করল তৃণমূল। মিছিলে এলাকার নেতা-কর্মীদের যেমন চোখে পড়েছে, তেমনই স্থানীয় বাসিন্দাদেরও দেখা মিলেছে।

গত ৫ জানুয়ারি এই সরবেড়িয়াতেই শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে অনুগামীদের তাণ্ডবে প্রাণ নিয়ে পালাতে হয় ইডি এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। তার পর কেটে গিয়েছে দু’মাসেরও বেশি সময়। এর মধ্যেই বদলে গিয়েছে চিত্র। এলাকার কতিপয় তৃণমূল নেতার ‘অত্যাচারের’ বিরুদ্ধে পথে নেমে আন্দোলন করেছেন রেখা। যে আন্দোলনের উপর ভিত্তি করে তাঁকে ‘সন্দেশখালির মুখ’ হিসাবে তুলে ধরছে বিজেপি। তাঁকেই বসিরহাট লোকসভায় প্রার্থী করেছে বিজেপি। অন্য দিকে, নুসরতকে বসিয়ে বসিরহাটে তৃণমূল ফিরিয়ে এনেছে হাজি নুরুলকে। হাতে সময় বেশি নেই। দু’জনেই পুরোদমে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।

আরও পড়ুন
Advertisement