‘বাহুবলী’ নেতা অশোক এবং তাঁর স্ত্রী। ছবি: সংগৃহীত।
১৭ বছর পর জেল থেকে মুক্তি পেয়েই লোকসভা নির্বাচনের টিকিট পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন বিহারের ‘বাহুবলী’ নেতা অশোক মাহাতো। রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) হয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তাঁর সেই সাধ পূরণ হবে কি? তা নিয়ে দোলাচলের মধ্যে ছিলেন অশোক। মনোনয়নপত্র গৃহীত হবে কি না, সেই আশঙ্কাও তাঁকে কুরে কুরে খাচ্ছিল।
কিন্তু এই নির্বাচনে লড়তে হলে কোনও না কোনও উপায় তো বার করতেই হবে! আর সেই উপায়ও বার করে ফেলেন ‘বাহুবলী’ নেতা। নিজে যদি টিকিট না-ও পান, তা হলে স্ত্রীকে তো ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন? যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। তড়িঘড়ি পাত্রীও ঠিক করে ফেলেন। লখিসরায় জেলার অনিতা কুমারী নামে এক মহিলাকে বিয়ে করেন অশোক। তার পর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদবের সঙ্গে দেখা করে অশোক নিজের মনোবাঞ্ছাও জানিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। কিন্তু তাঁর সেই মনোবাঞ্ছা কি পূরণ হবে, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে বিহারের রাজ্য রাজনীতিতে। নিজে যদি টিকিট না-ও পান, তা হলে স্ত্রীকে নির্বাচনী ময়দানে নামানোর প্রস্তুতির মঞ্চ তৈরি করে ফেলেছেন বলে অনেকেই মনে করছেন।
প্রসঙ্গত, নব্বইয়ের দশকে নালন্দা এবং শেখপুরা এলাকায় অশোক মাহাত এবং অখিলেশ সিংহের বেশ দৌরাত্ম্য ছিল। বেশ কয়েকটি খুনের মামলা রয়েছে অশোকের বিরুদ্ধে। ২০০১ সালে জেল ভেঙে পালানোর ঘটনায় আজীবন কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। ১৭ বছর পর ২০২৩ সালের ডিসেম্বর জেল থেকে মুক্তি পান অশোক। তার পর থেকেই আরজেডির ছত্রছায়ায় আসার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। লোকসভা নির্বাচন আসতেই আরজেডির টিকিটে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু তিনি টিকিট পাবেন কি না, তা নিয়ে নিজের মধ্যেও একটা সংশয় তৈরি হয়েছে। তবে সেই সংশয় কাটাতে বিয়ে করে স্ত্রীকে টিকিট পাওয়ানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন এই ‘বাহুবলী’ নেতা।
অশোকের প্রতিদ্বন্দ্বী অখিলেশ সিংহের স্ত্রী অরুণা দেবী বারসলীগঞ্জে চার বারের বিধায়ক। অশোকের আর এক সঙ্গী প্রদীপ মাহাতও দু’বার বিধায়ক হয়েছেন। তাই মনে করা হচ্ছে, তাঁর এই বিয়ের বিষয়টি রাজনীতির ময়দানে নামার একটি কৌশল। কয়েকটি সূত্রের দাবি, আরজেডি তাঁকে টিকিটও দিতে পারে। তাঁর সাধপূরণ হবে কি? এখন সেই অপেক্ষাতেই বিহারের ‘বাহুবলী’ নেতা।